সাগরকন্যার দেশ পর্তুগাল। তাগুস নদীর তীরে লিসবনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রোয়া দ্য বেনফেরমেসোর রাস্তার গলিটি দিন দিন একটি ব্যস্ত বাংলাদেশি প্রবাসীদের আবাসস্থল হিসেবে গড়ে উঠছে। বিশেষ করে রমজান মাসে গলিটির ব্যস্ততা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। গলিটিতে রাস্তার দুই পাশ ঘিরে রয়েছে বাংলাদেশি রেঁস্তোরা, দেশীয় মাছ, মাংস ও সবজির দোকানসহ মানি ট্রান্সফার কিংবা দেশীয় পাঞ্জাবি ও সেলুনের দোকান। রয়েছে বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় মসজিদ।
ইতিমধ্যে রহমতের ১০ রোজা পেরিয়ে মাগফিরাতের রোজা রেখেছেন দেশটির ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশি রেঁস্তোরাগুলোতে প্রতিবছরের মতো এবারও সেজেছে বাহারি ইফতারের আয়োজনে।
পর্তুগালে বাংলাদেশি কমিউনিটির সবচেয়ে বড় মসজিদটিতে কমিটির উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবার আয়োজন করা হয় ফ্রি ইফতার। ইফতার আয়োজনে বাংলাদেশি প্রবাসী ছাড়াও প্রতিদিন পাকিস্তান, ভারতসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মুসলমানেরা অংশ নেন। ইফতারপর্ব শেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই মাগরিব ও তারাবিহর নামাজ শেষে বাসায় ফেরেন।
পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রোজায় ইফতার করেন দেশীয় খাবার দিয়েই। বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেঁস্তোরাগুলোতে দেশীয় ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে ইফতারি বানানো হয়। ইফতারে খেজুর, জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজি, বেগুনি, সালাদ, চপ, শরবত, জুস, হালিম, মুড়িসহ নানা খাবার রাখা হয়। রমজানে দেশীয় খাবার ছাড়া ভিনদেশি খাবারে ইফতার জমে না, তাই দেশীয় স্বাদের তৃপ্তি পেতে বাঙালি খাবারই প্রবাসীদের পছন্দের শীর্ষে।
অপর দিকে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে পাঞ্জাবি, টুপি, জায়নামাজ, আতর ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়ে যায় রমজান মাস এলে। পাশাপাশি মানি ট্রান্সফার ও মিষ্টির দোকানগুলোতেও প্রতিনিয়ত ভিড় লেগেই থাকে। ঈদ উপলক্ষে দেশে টাকা পাঠান প্রবাসীরা। প্রত্যেক প্রবাসীর ঈদ আনন্দই তাঁদের পরিবারকে ঘিরে। দেশে পরিবার-পরিজন কিংবা দেশের মানুষ ভালো থাকলেই প্রবাসীরা ভালো থাকে। তাই টাকা পাঠান প্রবাসীরা।
‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: dp@prothomalo.com