বাংলাদেশ-জাপান ৬ষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন টোকিওতে অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ-জাপান ৬ষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে ২০২৫) টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম এবং জাপান পক্ষের নেতৃত্ব দেন জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সিনিয়র উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি।
উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বিভিন্ন খাতভিত্তিক সহযোগিতা, বিশেষ করে বাণিজ্য-বিনিয়োগ, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিনিময়, রোহিঙ্গা ইস্যু, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় ২০২৪ সালের জুন মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম পরামর্শ সভার গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফর নিয়েও আলোচনা হয়।
সভায় মানবসম্পদ ও জ্বালানি বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ ক্রেডিটিং ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ও ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা, ইটিপি, স্টোরেজ অ্যান্ড ডিসপোজাল ফেসিলিটি, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতাসহ কৃষির যান্ত্রিকীকরণ এবং জাহাজ নির্মাণশিল্পের আধুনিকীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জাপান অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার উদ্যোগের প্রতি দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অব্যাহত সমর্থনের কথা জানায়।
দুই পক্ষ বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিতে সম্মত হয়। জাপান বাংলাদেশি পণ্যের জন্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন–পরবর্তী সময়ে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে এবং ফল, সবজিসহ জাপানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে বলে জানায়।
এ ছাড়া বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ (বিগ-বি)–এর আওতায় জাপান বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে আরও জোরালোভাবে যুক্ত হবে এবং জাপানি উৎপাদনকারীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করবে। জাপান জানায়, তারা মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বিগ-বি উদ্যোগের আওতায় এই অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায়।
‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
বৈঠকে বাংলাদেশ আরও ওডিএ কনসেশনাল লোন, বাজেট সহযোগিতা এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য জাপানের সমর্থন চেয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে জাপান জানায় যে তারা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং তাদের মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
আলোচনায় উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
আলোচনা শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম জাপানের সিনিয়র উপমন্ত্রীকে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বিজ্ঞপ্তি