গ্রিসে প্রবাসী তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে ইয়ুথ কনফারেন্স

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে গ্রিসে বাংলাদেশি নতুন প্রজন্ম’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রবাসে বড় হওয়া দ্বিতীয় প্রজন্মের অংশগ্রহণে তারুণ্যের সম্মেলন ইয়ুথ কনফারেন্স-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদের পৃষ্ঠপোষকতায় ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে এ সম্মেলন।

নতুন প্রজন্মের ভাষাগত দক্ষতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি একদিকে যেমন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্পদ হতে পারে, অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের এবং তাঁদের অভিভাবকদের নিয়ে এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গ্রিস ও পার্শ্ববর্তী ইউরোপীয় দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী ও তাঁদের অভিভাবকেরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করা হয়। এরপর দুটি তথ্যমূলক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। একটিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়টিকে নতুন প্রজন্ম কীভাবে নিয়েছে এবং অন্যটিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে গৃহীত মতামতের ভিত্তিতে আগামীর পৃথিবীতে কেমন হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সে বিষয়কে তুলে ধরা হয়।

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

রাষ্ট্রদূত এ আয়োজনে অংশগ্রহণের জন্য উপস্থিত দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসী তরুণ-তরুণী ও তাঁদের অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধিরা গ্রিসে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বিদেশের মাটিতে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ছড়িয়ে দিতে তাঁরা অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। দ্বিতীয় প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা বাংলাদেশের একেকজন প্রতিনিধি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দক্ষ ও উদ্যমী তরুণেরাই চালিকা শক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মকে তৈরি হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

এরপর গ্রিসে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে ২০ তরুণ-তরুণী বাংলা, ইংরেজি ও গ্রিক ভাষায় তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। আলোচনায় তাঁরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী এবং দৈনন্দিন ব্যক্তি জীবনে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে এর অবস্থান কোথায়, এর সঠিক ভূমিকা, কীভাবে একে মানবকল্যাণে কাজে লাগানো যাবে, সে সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন। এ ছাড়া তাঁরা গ্রিসের মাটিতে শিক্ষাজীবন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোকপাত করেন। তাঁরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর প্রত্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাব্য সংকটের আশঙ্কা ব্যক্ত করে এর থেকে পরিত্রাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা এ প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবীতে উপযুক্ত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে গ্রিক ও বাংলাদেশিদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

অনুষ্ঠানটি সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের মিনিস্টার মো. খালেদ। দূতাবাসের প্রথম সচিব বিশ্বজিত কুমার পাল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে উপস্থিত অভিভাবকেরা বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের প্রযুক্তিজ্ঞান, মেধা ও দেশপ্রেমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। গ্রিসে বসবাসরত দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী ও অভিভাবকেরা এমন একটি অংশগ্রহণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। বিজ্ঞপ্তি