ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

নতুন প্রজন্মের কাছে বিজয়ের মূল তাৎপর্য তুলে ধরা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে। গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যালামনাইয়ের সভাপতি মারুফ আহমেদ চৌধুরী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দীন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল স্মৃতিচারণা ও আলোচনা। এতে পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডাকসুর সাবেক সদস্য দেওয়ান গৌস সুলতান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুর রাকীব ও ইসমাইল হোসাইন, সিনিয়র সহসভাপতি প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থ (বিইএম), সহসভাপতি সহুল আহমেদ, সহসভাপতি সিরাজুল বাসিত চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মাহারুন আহম্মেদ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্য সৈয়দ হামিদুল হক, মোহাম্মদ আবু হুসাইন, দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান, কার্যকরী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবুল কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মাদ কামরুল হাসান ও প্রেস অ্যান্ড পাবলিসিটি সম্পাদক খালিদ ইয়াহইয়া।

বক্তারা দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা, নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। সভায় বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ফসল নষ্ট হয়নি। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধসহ অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সব বীর শহীদের বীরত্বগাথা ও জীবনী জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চিরসমুন্নত রাখা ও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তি ও স্বাধীনতাসংগ্রামের সঠিক চিত্র তুলে ধরা প্রয়োজন। বক্তারা ঐকমত্য পোষণ করেন যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বিজয়ের আনন্দ পৌঁছে দিতে হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

সভাপতির বক্তব্যে মারুফ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধের পর বাংলার মানুষের এ আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় ১৬ ডিসেম্বরে। তাই ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় কোনো সাধারণ বিজয় নয়, এটি আমাদের রক্তে রঞ্জিত চেতনার বিজয়, আমাদের জাতীয় আত্মপরিচয়ের বিজয়। এ বিজয় আমাদের কাছে তাই একই সঙ্গে প্রেরণার ও গৌরবের। বাঙালির প্রেরণার উৎস, গৌরবময় এ বিজয় দিবস বর্তমানে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে এবং বাঙালির জীবনচেতনায় গভীরভাবে সম্পৃক্ত। এ বিজয়ের অনুপ্রেরণা থেকে বাঙালির আজকের দীর্ঘ পথচলা, যাবতীয় অর্জন।’

আলোচনা ও স্মৃতিচারণা শেষে সাংস্কৃতিক সম্পাদক রীপা সুলতানা, যুগ্ম সম্পাদক মাহারুন আহম্মেদ ও কার্যকরী কমিটির সদস্য শারমিন চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক রীপা সুলতানা, কাজী কল্পনা, আমোল পোদ্দার, শারমিন শরীফ, মোস্তফা কামাল, সাঈদা চৌধুরী, আবদুল মতিন ও তামান্না ইকবাল।

কবিতা আবৃত্তি করেন শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এ্যারিনা সিদ্দিকী, যুগ্ম সম্পাদক সলিসিটার মোহাম্মদ কামরুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান। স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কার্যকরী কমিটির সদস্য মাহফুজা রহমান। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক কবিতা আবৃত্তি করেন যুগ্ম সম্পাদক সলিসিটার সৈয়দ আবু আকবর আহমেদ।