কুইন্সে মামদানির সম্মানে ফান্ড কালেকশন, এক সন্ধ্যায় উঠল ১ লাখ ৭৪ হাজার ডলার
নিউইয়র্ক সিটির আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকা (ডিএসএ) সমর্থিত প্রার্থী জোহরান মামদানির জন্য কুইন্সে আয়োজিত এক বিশেষ ফান্ড কালেকশন ইভেন্টে এক সন্ধ্যায় সংগৃহীত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ডলার।
৩ আগস্ট ‘কুইন্স ফর মামদানি’ শিরোনামে এই আয়োজনে অংশ নেন নিউইয়র্কের বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। জমকালো এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় জ্যামাইকা স্টেটের একটি বিশাল বাড়িতে, যেখানে ভোজসভা, মতবিনিময় ও ফান্ড কালেকশন একসঙ্গে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে মামদানি নিজে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আপনাদের সমর্থন আমাকে উজ্জীবিত করেছে। নিউইয়র্ককে বদলে দেওয়ার সংগ্রামে আপনারা অগ্রপথিক।
অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান, হিলসাইড ইসলামিক সেন্টারের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ ভূঁইয়া, ইসলামিক সেন্টার অব নর্থ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তারিকুর রহমান, মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আরমান চৌধুরী ও জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডা. ওয়াহিদুর রহমান।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ওয়াহিদুর রহমান এ রকম একটা আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। আবদুল আজিজ ভূঁইয়া ভবিষ্যৎ মেয়রের কাছে বাংলাদেশি ও মুসলিম কমিউনিটির কিছু দাবি তুলে ধরেন।
সভা সঞ্চালনা করেন আফতাব মান্নান। তিনি মামদানিকে নিউইয়র্কের ভবিষ্যতের জন্য একজন যোগ্য ও বিকল্প চিন্তার নেতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘জোহরান মামদানি মেয়র হলে নিউইয়র্কে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হবে। তাঁর নেতৃত্বে নগরবাসী বৈষম্যহীন সমাজ, সাশ্রয়ী আবাসন গড়ে তুলবেন এবং গণপরিবহন সংস্কার করবেন।’
জোহরান মামদানি ইতিমধ্যে তাঁর প্রচারণায় তহবিল সংগ্রহে নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থানে উঠে এসেছেন। নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, তিনি এখন পর্যন্ত ১২ মিলিয়নের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন এসেছে সরকারি ম্যাচিং ফান্ড হিসেবে। তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণার সাফল্যের কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। জোহরান মামদানির পক্ষে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ইতিমধ্যে নিউইয়র্কের ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী তরুণ তার পক্ষে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করছেন।
মামদানির প্রচারণার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর ছোট অঙ্কের অনুদান সংগ্রহ কৌশল। ২৮ হাজার ৯৭৮ জনের কাছ থেকে গড়ে মাত্র ৪১ ডলারের অনুদানে তিনি যে পরিমাণ ম্যাচিং ফান্ড পেয়েছেন, তা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
কুইন্সে অনুষ্ঠিত ফান্ড রেইজিং আয়োজনে বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয় মুসলিম কমিউনিটির দৃঢ় উপস্থিতি এবং অর্থনৈতিক অবদান প্রমাণ করে, মামদানির প্রতি অভিবাসী জনগোষ্ঠীর আস্থা ও প্রত্যাশা ক্রমবর্ধমান। এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাসী সমাজ তার প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়বিচারভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]