ভাবনার প্রমোশন

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

জল ও জলের বিস্তার ছাড়া সমুদ্রে গেলে আর কিছুই দেখার নেই। যেমন ভয়। এই ভয় মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে আবার অনুগতও রাখে। প্রতিদিনের যাপনে অসন্তোষ মানুষের সহনশীলতার ক্ষমতা দিন দিন কমিয়ে দেয় অর্থাৎ যে সময়টা হারিয়ে যায় তা আর ফেরত আসে না।

এখন মন খারাপ হলে কাউকে আর বলি না। কথা খরচ করতেও এখন আর আগের মতো ভালো লাগে না। আচরণ দিয়েই মানুষ মানুষকে মনে রাখে আবার আচরণগত ত্রুটির কারণেই মানুষ মন থেকে উঠে যায়।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি ছোটগল্পের কথা মনে পড়ে গেল। এক জজ সাহেব চোরের উদ্দেশে বলছেন, ‘এই চেয়ারে বসেই আমি তিন–তিনবার তোর চুরির বিচার করেছি।’ তখন চোর অতি বিনয়ের সঙ্গে বলল, ‘স্যার, আপনার প্রমোশন না হলে আমার তো কিছু করার নাই।’ অর্থাৎ আপনাকে প্রতিদিনই আপডেট হতে হবে। তা না–হলে ওই জজ সাহেবের মতো আপনিও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে পারেন।

এবার আরেকটি কৌতুক বলি। এক স্যার ক্লাসে ছাত্রদের উদ্দেশে বলছেন, ‘আচ্ছা বল তো ইংরেজি Tomorrow শব্দটির বাংলা কী হবে? তবে বলে রাখি, আগামীকাল বললে কিন্তু হবে না, আজই আমাকে বলতে হবে।’ অর্থাৎ Today এবং Tomorrow শব্দের তফাত আপনাকে বুঝতে হবে। কোনটি আজকের কাজ আর কোনটি কালকের কাজ তাও আপনাকে বুঝতে হবে। আমার বিশ্বাস, অধিকাংশ নারী/পুরুষই তা বোঝেন। সীমাবদ্ধতা শুধু চিন্তায়।

অধিকার বোধের চর্চা হারিয়ে গেলে সেখানে সম্পর্ক বলে আর কিছুই থাকে না। তারপরও বলব, একে অপরের মতো হওয়াটা খুব জরুরি নয়। তবে অপরের জন্য হওয়াটা খুব জরুরি। এ প্রসঙ্গে ছোট্ট আরেকটি কৌতুক মনে পড়ে গেল। এক ভিক্ষুক, যিনি ভিক্ষা দিয়েছেন তাঁকে বলছে, ভিক্ষা দিয়েছেন তো কী হইছে? আপনি কি মনে করেন তাতে আপনার কোনো লাভ হয় নাই? আপনার কি সওয়াব হয় নাই? সুতরাং আমি/আপনি সমান সমান।’ কিন্তু তা কি আর হয়?

*লেখক: শরীফুল আলম, নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]