গ্রিন কার্ডের সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক: যুক্তরাষ্ট্রে আতঙ্কে অভিবাসীরা

ছবি: সংগৃহীত

কোলে শিশুসন্তান নিয়ে এক ব্রিটিশ মা, একজন ইউক্রেনীয় শরণার্থী, সাবেক মার্কিন নৌ সেনার স্ত্রী কিংবা প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপনের অপেক্ষায় থাকা এক জার্মান নাগরিক—তাঁরা সবাই মার্কিন নাগরিকের জীবনসঙ্গী। ভেবেছিলেন, গ্রিন কার্ডের (স্থায়ী বসবাসের অনুমতি) সাক্ষাৎকারে অংশ নিয়ে বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করবেন। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো আটক হয়েছেন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর হাতে।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সম্প্রতি এই নজিরবিহীন ঘটনা অভিবাসীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি করেছে। এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সান দিয়েগো, নিউইয়র্ক সিটি, ক্লিভল্যান্ড ও উটাহ অঙ্গরাজ্যে বেশ কয়েকজন অভিবাসীকে এভাবে আটক করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, মার্কিন নাগরিকদের স্বামী বা স্ত্রী যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশটিতে অবস্থান করেন, তবুও তাঁরা গ্রিন কার্ড পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন। কিন্তু অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির কারণে কয়েক দশক ধরে চলে আসা এই রীতি ভেঙে পড়েছে। এখন সাক্ষাৎকারের নাম করে ডেকে নিয়ে বৈধ হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদেরও আটক করা হচ্ছে।

অভিবাসন আইনজীবী জান জোসেফ বেহার এ পরিস্থিতিকে ‘মারাত্মক ধ্বংসাত্মক’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, যাঁরা নিয়ম মেনে ফি জমা দিয়ে বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে আছেন, তাঁদের এভাবে আটক করা অমানবিক। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, সাক্ষাৎকারটি এখন একটি ‘ফাঁদ’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউএসসিআইএস (USCIS)-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অবস্থান করা অভিবাসন আইনের লঙ্ঘন। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা ও আইনের শাসন রক্ষায় নথিপত্রহীন যে কাউকে আটক ও বহিষ্কারের এখতিয়ার তাঁদের রয়েছে। বৈধ হওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এমন ধরপাকড়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন হাজারো মিশ্র নাগরিকত্বের পরিবার।

*NBC News অবলম্বনে

দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]