কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার পেলেন আবু সাঈদ

কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন কবি পরিবারের সদস্য ও সংগীতশিল্পী নূপুর কাজী।

ভাঙড় এলাকার সাহিত্য-সংস্কৃতির সেবায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ২৩ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে উদার আকাশ পত্রিকা। ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪’ উদার আকাশ প্রদান করল বাংলাদেশের লেখক আবু সাঈদকে। ১৯ মে সন্ধ্যায় কলকাতার উল্টোডাঙার ইকমার্ডের (আইসিএমএআরডি) ‘নবীন’ সেমিনার হলের এ অনুষ্ঠানে আবু সাঈদের হাতে প্রথমবারের মতো কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উদার আকাশ প্রকাশন ও পত্রিকা দুই বাংলায় সাহিত্যের বিকাশের ক্ষেত্রে এবং নজরুলচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তি, সংগঠক বা সংগঠনকে কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করে নজরুলচর্চা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা দিলেন সম্পাদক ফারুক আহমেদ।

উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের উদ্যোগে ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্টানে মানপত্র তুলে দেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় লেখক মইনুল হাসান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কুমারেশ চক্রবর্তী, কবি এমদাদুল হক নূর, চিকিৎসক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়, নজরুল পরিবারের সদস্য ও সংগীতশিল্পী নূপুর কাজী, লেখক আরফান আলী বিশ্বাস এবং উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদ

উত্তরীয়, মানপত্র ও পুরস্কার ফলক সংগঠক, সম্পাদক ও প্রকাশক আবু সাঈদের হাতে তুলে দেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় লেখক মইনুল হাসান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কুমারেশ চক্রবর্তী, কবি এমদাদুল হক নূর, চিকিৎসক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়, নজরুল পরিবারের সদস্য ও সংগীতশিল্পী নূপুর কাজী, লেখক আরফান আলী বিশ্বাস এবং উদার আকাশ পত্রিকা ও উদার আকাশ প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদ। মানপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক মহ. আসিফ ইকবাল।

কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ সম্পর্কে উদার আকাশ প্রকাশন ও পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘দুই বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতির সেবায় কাজী নজরুল ইসলাম গবেষণায় অনন্য নিদর্শনের জন্য আবু সাঈদকে বিদ্রোহী কবির নামে স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কারপ্রাপ্ত আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি পুরস্কার পেয়ে আবেগে আপ্লুত। কৃতজ্ঞা উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনকে। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন মানবতার কবি। তাঁর পুরো জীবনকর্মে মুখ্য বিষয় ছিল মানুষের মধ্যে মানুষের সম্প্রীতি। দুই বাংলায় নজরুলচর্চা আরও বেশি বৃদ্ধি করতে হবে।’

নজরুলসংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানট (কলকাতা)র সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, নজরুল গবেষক, কথাশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও নজরুল অনুরাগীরা। অনুষ্ঠানে ১৯ মে ভাষা দিবসে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন।

এদিন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দাগ কেটে যায়। নজরুলগীতি পরিবেশন থেকে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি, কবিতা পাঠ ও বক্তব্যে মুখর হয়ে ওঠে অডিটরিয়াম। হাততালি দিয়ে শিল্পীদের কুর্নিশ জানানো হয় দর্শকদের মধ্য থেকে। অপূর্ব সুন্দর সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি ও নজরুল সংগীতশিল্পী সোমঋতা মল্লিক ও শামসাদ বেগম। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ‘দুর্দান্ত’ আবৃত্তি করলেন সুব্রতা ঘোষ রায়, অরণ্য স্পন্দন ভদ্র, তিস্তা দে, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, সুকন্যা রায়, দেবযানী বিশ্বাস, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মুজতবা আল মামুন, আলমগীর রহমান, প্রবীর ঘোষ রায়, সামিমা মল্লিক, লিটন রাকিব, মহ. হাসানুজ্জামান, জাকির হোসেন, শাহজাহান শাজু, আরফিনা প্রমুখ।

‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার’ অনুষ্ঠানে ছায়ানট (কলকাতা) পক্ষে সম্মাননা প্রদান করেন।

এ ছাড়া এদিন কাজী নজরুল ইসলামের ওপর বিশেষ বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বহুমাত্রিক লেখক মইনুল হাসান, লেখক আরফান আলী বিশ্বাস, সাবেক যুগ্ম শিক্ষাসচিব প্রবীর ঘোষ রায়, কুমারেশ চক্রবর্তী, কবি এমদাদুল হক নূর, প্রাবন্ধিক সোনা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সচারু পরিচালনা করলেন কবি ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষক ফারুক আহমেদ।

লেখক: মৌসুমী বিশ্বাস, কলকাতা, ভারত