
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গান-কবিতা-ছড়া নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে রবীন্দ্রপাঠ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এর আয়োজন করে সংহতি সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ আরব আমিরাত শাখা। গতকাল শুক্রবার (৩ আগস্ট) বিকেলে শারজাহের একটি রেস্তোরাঁয় এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও সংহতি এই অনুষ্ঠান শুরু করে জাতীয় সংগীত দিয়ে। আমিরাতপ্রবাসী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ইয়াসমিন কালাম নেতৃত্ব দেন রবীন্দ্রনাথ রচিত প্রাণের জাতীয় সংগীতে। জাতীয সংগীতের পর ছোট্ট বন্ধু জোয়ারিন জিসান এসে ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে’ ছড়াটি পাঠ করে সবাইকে অবাক করে।
এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা। আলোচনায় অংশ নেন উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. জিনাত রেজা, শারজাহ ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার শেখ আবদুল করিম, অধ্যাপক আবদুস সবুর, আরবান রিডার্সের সংগঠক নওশের আলী ও সংগীতানুরাগী শহিদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই কায়মনে রবীন্দ্রনাথের ভক্ত। তাঁদের আলোচনার সময় ছিল পিনপতন নীরবতা। তাঁরা রবীন্দ্রনাথের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি লেখিকা-শিক্ষিকা মোস্তাকা মৌলা। স্বাগত বক্তব্য দেন সহসভাপতি সৈয়দা দিবা। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান।
আলোচনার পর মাঝি ছড়া পাঠ করেন আমিনুল হক। আবার আসে কবিতার পালা। কবিতা নিয়ে আসেন জুয়েনা আক্তার রুনি। দুই বিঘা কবিতায় তিনি সবাইকে মুগ্ধ করেন। লুৎফুর রহমান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরচেনা দুটি ছড়া পাঠ করেন। ছড়া দুটি—আমাদের ছোট নদী ও ছুটি। এরপর কবিতা নিয়ে আসেন জি এম জায়গিরদার। তার ভরাট কণ্ঠে দরদমাখা ‘প্রথম সুখ’ কবিতা পাঠ সবার মনে সুখের ছোঁয়া আনে। তারপর কবিতা নিয়ে আসেন আবুধাবি থেকে আগত কবি ওবায়দুল হক। তাঁর কবিতা পাঠের পর কবিতা পাঠ করেন আজমান থেকে আগত কবি মোহাম্মদ আলী মনসুর।

রবীন্দ্রনাথের ছুটি ছড়াগান পরিবেশন করে ভিন্নতা আনেন তিশা সেন। ঘুমপাড়ানি গানের মতো মন্ত্রমুখর ছিল তার পরিবেশনা। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান নিয়ে আসেন সানি মজুমদার। তাঁর ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে’ গানের মাঝে থাকে প্রাণের সুর। সাংবাদিক সিরাজুল হক পরিবেশন করেন ‘আমারো পরানো যাহা চায়।’ তিনি এই গানে সবার পরানের কথা গাইলেন খুব সুন্দর করে। সবাই অবাক হলেন সাংবাদিকও এত সুন্দর গান জানেন!
এরপর চলে কোরাস। কায়সার হামিদ ধরেন গান। সকলে ছাড়েন গলা। আবার কবিতা পড়তে আসেন সৈয়দা দিবা। ইয়াসমিন কালাম আর সিরাজুল হকের কণ্ঠে চলে একাধিক রবীন্দ্র সংগীত। দিনের আলো যখন ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছিল তখন ভাঙে এই রবীন্দ্র আয়োজন।
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যপাঠ নির্ভর এ অনুষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন সঞ্জয় ঘোষ, জাবেদ আহমদ ও সাদিকুর রহমান।
