শান্তি
বেঁচে থাকার জন্য অর্থ ও খ্যাতির চেয়েও আমার কাছে শান্তি অনেক বেশি প্রয়োজন। নিজের প্রতি যেদিন থেকে আপনি অসন্তুষ্ট বোধ করবেন, ধরেই নেওয়া যায়, সেদিন থেকেই আপনি একা হয়ে গেলেন। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি সম্পূর্ণ একা না হচ্ছেন, ততক্ষণ আপনি অন্য আর কাউকে চাইতে পারেন না, এটি নৈতিকতাবিরোধী।একাকিত্বের সুন্দর খুবই কম। তবে একবার কেউ একা হয়ে গেলে ধীরে ধীরে তা সহ্য হয়ে যায়। অনাকাঙ্ক্ষিত সমাপ্তি কেউ চায় না, তারপরও তা হয়ে যায়। একাকিত্ব মনে ক্ষত তৈরি করে। কেউ যদি আপনাকে সব সময় একটা অস্থিরতার মধ্যে রাখে, তাহলে বুঝতেই হবে ওই মানুষটি আপনার জন্য যথোপযুক্ত নয়। আবার আপনি যদি মনোযোগী হন, তাহলে এই পৃথিবীতে দুঃখের চেয়েও সুখের আরও অনেক কিছু পাবেন।
কিছু দুঃখ আছে, যা সারা জীবন মানুষকে বয়ে বেড়াতে হয়। আবার ভালোবাসার আনন্দ, সেটা ক্ষণিকের। সত্যি কথা বলতে কী, ভালোবাসা খুঁজলেই তো আর পাওয়া যায় না, তাকে নিজের মতো করে তৈরি করে নিতে হয়।
প্রত্যেকের মনেই দুঃখ থাকে, তবে ধরন আলাদা হয়। কাঁদলেই যদি সব কষ্ট দূর হতো, তাহলে একটা সময় দুঃখ তো সম্পূর্ণভাবে দূর হওয়ারই কথা। কিন্তু তাই কি হয়? তাই আমি বলি, আপনার সমস্যা যেন অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। মনে রাখবেন, প্রথম থেকে যেভাবে শেষ পর্যন্ত যাওয়া যায়, ঠিক তেমনি শেষ থেকেও প্রথমে আসা যায়।
ছোট ছোট ভুল একত্রিত হয়ে বড় হলে একটা সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটে। আমরা সুখে থাকলে গান শুনি। আবার দুঃখে থাকলে গানের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করি। মনে রাখবেন, অভ্যাস করে নিলে প্রিয়জন ছাড়াও বাঁচা যায়। পৃথিবীর সব আনন্দই তো আর আমার একার নয়—যদি এভাবে ভাবেন, আপনি কষ্ট কম পাবেন। আপনার প্রিয় মানুষকে সব সময় জিততে সাহায্য করুন, দেখবেন ত্বরিত এর ফলাফল। যত দিন চাইবেন, তত দিনই আপনি তাঁর প্রিয় মানুষ হয়ে থাকতে পারবেন।
একা থাকা মানুষের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়, তবে একা থাকলে সব সময় ভয়ানক একটা অভাব আপনার মধ্যে কাজ করবে। তাই আপনি যেন অন্যের কষ্টের কারণ না হন, সেই দিকটা বেশি খেয়াল রাখবেন। এমনকি আপনার কারণে যেন অন্যের মনের ট্র্যাফিকে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, সেই দিকটাও খেয়াল রাখবেন। কাউকে ভালোবাসতে গিয়ে এত বেশি হৃৎপিণ্ড নিয়ে নাড়াচাড়া, খোঁজাখুঁজি করবেন না। ফসকে যাওয়ার ভয় থাকলে আগে থেকেই নিজে সাবধান হন। মনে রাখবেন, ভালোবাসার এখনো আকাল পড়েনি যে উপযুক্ত সঙ্গী না পেলেও জোর করে ভালোবাসতে হবে। অন্তরে অন্তর না মিললে কারও সঙ্গে অন্তরতম হওয়ার প্রয়োজন নেই।
লেখক: শরীফুল আলম, হাডসন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র