যুক্তরাজ্যে নোয়াখালীবাসীর উৎসব পালন

মেঘনার অববাহিকায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জন্ম নেওয়া নোয়াখালী বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা। এর পূর্ব নাম ছিল ভূলুয়া। ১৮২১ সালে ভূলুয়া নামে প্রতিষ্ঠা লাভের পর ১৮৬৮ সালে এ জেলার নাম বদলে রাখা হয় নোয়াখালী। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান, জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণসহ নানা কারণে সারা বাংলাদেশে এ অঞ্চল বেশ আলোচিত। ২০২১ সালে নোয়াখালী জেলা প্রতিষ্ঠার ২০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে যুক্তরাজ্যে নোয়াখালী সমিতি ইউকের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মাধ্যমে নোয়াখালী উৎসব ২০২২ উদ্‌যাপিত হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে গতকাল রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় উদ্বোধন হয়ে নানা আয়োজন শেষে রাত ১১টায় শেষ হয় নোয়াখালীবাসীর এ উৎসব। এদিন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত নোয়াখালীর মানুষেরা দিনভর আনন্দ উৎসবে পার করেন। দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানস্থল রয়্যাল রিজেন্সির সামনের পার্ক থেকে আনন্দ মিছিল শুরু করে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছায়। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের সমবেত জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এ ছাড়া পরিবেশিত হয় নোয়াখালী উৎসব উপলক্ষে করা সূচনা সংগীত। একসঙ্গে দুপুরের খাবারে অংশ নেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত নোয়াখালীর মানুষসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার লোকজন।

দুপুরের খাবার পরিবেশিত হয় বেলা তিনটায়। এ সময় নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান পরিবেশিত হয়। এরপর নোয়াখালীর ইতিহাস–ঐতিহ্যের ওপর নির্মিত তথ্যবহুল বিশেষ ডকুমেন্টারি দেখানো হয়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন আঞ্জুমান মুন্নি ও মিনহাজ খান।

অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিলেতের স্থানীয় রাজনীতিবিদ, বেশ কয়েক সংসদ সদস্য, মেয়র, কাউন্সিলর, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্যসহ অনেকে। যোগ দেন সদ্য নির্বাচিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল থেকে নির্বাচিত নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান। এ সময় যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচনে বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের বেশ কয়েকজন নির্বাচিত কাউন্সিলর, মেয়র, মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিটিতে অবদান রাখা অনেক ব্যক্তিকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। এ ছাড়া শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও মেধাবী শিশুদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা নোয়াখালীর ইতিহাস–ঐতিহ্যকে স্মরণ করেন। এ আয়োজনকে ঘিরে তাঁরা বেশ আনন্দিত ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ফ্যাশন ডিজাইনার হারমেন মৌয়ের পরিচালনায় বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনা করেন বাংলাদেশ থেকে সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী ও যুক্তরাজ্যের স্থানীয় বেশ কয়েকজন শিল্পী।

আয়োজক নোয়াখালী সমিতি ইউকের সভাপতি আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর, নোয়াখালী উৎসব উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক আবদুল হক রাজ, প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবির জাহাঙ্গীর, সদস্যসচিব মোহাম্মদ আখতার, এম এ হোসেন নিজাম, আলাউদ্দিন রাসেল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

দিনভর অনুষ্ঠান আয়োজন শেষে র‌্যাফল ড্র অনুষ্ঠিত ও পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে দিনভর অনুষ্ঠান আয়োজন শেষ হয়।