ভিয়েতনামে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনামে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার উদ্‌যাপন করা হয়
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি এবং মহান জাতীয় দিবস ২০২১ বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনামে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার উদ্‌যাপন করা হয়। দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রদূতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন, রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং বিশেষ প্রার্থনা, আলোচনা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের প্রথম পর্যায়ে দূতাবাসে প্রত্যুষে ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে জাতীয় দিবসের সূচনা করেন। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপরিবারে এবং ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও স্থানীয় ভিয়েতনামিরা অতিথি উপস্থিত ছিলেন। পরে দূতাবাসে এক বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতনের শিকার মা-বোন, জাতীয় চার নেতার রুহের মাগফিরাত এবং দেশের সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে তাঁর বক্তব্য পেশ করেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের দ্বিতীয় পর্যায়ে স্থানীয় প্যান প্যাসিফিক হ্যানয় হোটেলে বিশেষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান, আলোচনা, সংবর্ধনা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী প্যান প্যাসিফিক হ্যানয় হোটেলে রাষ্ট্রদূত কর্তৃক এক বিশেষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান, আলোচনা, সংবর্ধনা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিয়েতনামের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী নুয়েন কুউক জাং। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিয়েতনাম ইউনিয়ন অব ফ্রেন্ডশিপ অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডাম নুয়েন ফুওং ন্যা। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কূটনৈতিক কোরের ডিন ফিলিস্তিনির রাষ্ট্রদূত, ভারত, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভেনেজুয়েলা, বুলগেরিয়া, সুইজারল্যান্ড, বেলারুশ, কানাডা, জার্মানি, ওমান, সিঙ্গাপুর, সাউথ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতসহ কূটনৈতিক কোরের অন্যান্য দেশের প্রতিনিধি, ভিয়েতনাম সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রবাসী বাংলাদেশি, ভিয়েতনামের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, মিডিয়া ও অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বক্তব্য দেন। বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিদেশি বন্ধুসহ যাঁরা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন, তাঁদের প্রতি।

প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আজকের নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে মনে করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। মুজিব শতবর্ষে ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ভিয়েতনাম সরকারের বিশেষ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতিবিষয়ক একটি প্রামাণ্য চিত্র ‘Bangladesh’s Socio Economic Development’ প্রদর্শন করা হয়। এরপর পররাষ্ট্র সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ভিডিও সংগীত ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিব’ প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া ভিয়েতনামি শিল্পীর বাংলা ও ভিয়েতনামি সংগীত পরিবেশন করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে প্রকাশিত লন্ডনভিত্তিক বাংলাদেশি শিল্পী রুবাইয়াত জাহানের ‘বাংলাদেশ’ গানটি এবং প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সংগীত ভিডিও পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশি রসনা স্বাদে সান্ধ্যভোজে আপ্যায়িত করা হয়। বিজ্ঞপ্তি