প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনবিস্ফোরণের ভূমিকা

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

বিশ্ব আবহবিদ্যার রিপোর্ট অনুসারে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যায় পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট তৈরির মূলে রয়েছে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আতঙ্কজনক বিস্ফোরণ। হ্যারিকেন, বন্যা, গ্রিনহাউস গ্যাস, বায়ু দূষণ, অনাবৃষ্টি, গ্লোবাল ওয়ার্মিংসহ আরও যত ইকোলজিক্যাল হ্যাজার্ড বর্তমান পৃথিবীতে চরম মাত্রায় লক্ষণযোগ্য হচ্ছে, পৃথিবীর ইতিহাসে প্রকৃতির চরিত্রে এর আগে কখনো তা দৃষ্টিগোচর হয়নি। তিন শ বছর আগেও মানুষের বেঁচে থাকার জন্য, মানবসভ্যতার সংরক্ষণ সাধনে প্রয়োজন ছিল বেশি সংখ্যক জনশক্তির। কিন্তু সেই বেশি সংখ্যার পরিমাণ এখন এতটাই পরিব্যাপ্ত হয়েছে যে তাদের কর্মধারা ও উপস্থিতির ফলাফল ইকোসিস্টেমের বায়োডাইভারসিটি বিনষ্ট করে উদ্ভিদ আর বন্য প্রাণিজগতের ধ্বংসসাধনই যে ডেকে আনছে। তাই নয়, মানবজাতির ভবিষ্যৎকেও করে তুলেছে অনিশ্চিত। কেননা জনসংখ্যার আধিক্য প্রকৃত বাস্তবতায় আমাদের বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে নয়, বর্তমানে ইঙ্গিত দিচ্ছে, জনবিস্ফোরণ মানবজাতির অবলুপ্তির ভূমিকায় মারণ যন্ত্র হয়ে উঠতে পারে। পরিবেশবিদদের তাই ভাষ্য-In fact, instead of helping us to survive, our great numbers may actually be the instruments of our extinction.
সাধারণভাবে ভূমিকম্প, সুনামি, সাইক্লোন, টর্নেডো, হ্যারিকেন, আগ্নেয়গিরির সবিরাম অগ্নি উৎক্ষেপণ, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক ব্যাপারগুলো পৃথিবীর জটিল গঠনপ্রক্রিয়ার একেকটি প্রক্রিয়া ও সৃষ্টির বাস্তবতা হিসেবেই বিশ্লেষিত হয়ে থাকে। যেমন পৃথিবী সৃষ্টির প্রাথমিক ইতিহাস আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, আগ্নেয়গিরির কারণে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে জলের অস্তিত্ব বর্তমান। জীবের উপযুক্ত পরিবেশ আর পারিপার্শ্বিকতা তৈরির পেছনেও রয়েছে আগ্নেয়গিরির ভূমিকা। ভূমিকম্পের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে যে বিভিন্ন আকারের পাহাড় আর উপত্যকা মালা, তাদের জলধারা নিচে নেমেই সৃষ্টি করেছে নদনদী ও নানা ধরনের লেক। বন্যা, ভূমিধস, ঝড়, দাবাণল—এরাও মাটির দেহে বারংবার নতুনত্ব ও পূর্ণতা দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে জীবের অস্তিত্ব। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এভাবেই ভাঙা গড়ার ভেতর দিয়ে পৃথিবী লাভ করেছে তার বর্তমান চেহারা। সৃষ্টির এসব প্রক্রিয়াগুলো প্রকৃতির নিজস্ব আইনে পরিচালিত হয়েই সৃষ্টি করেছে সব রকম জীবদেহের উপযোগী বসবাসযোগ্য পরিবেশ। ভূবিজ্ঞানীরা তাই বলেছেন-There would be no natural disasters if it were not for humans. Without humans these are only natural events.

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

এই প্রসঙ্গে তাই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বন্যা, ভূমিকম্প, সুনামি, সাইক্লোন যদি ভূদেহের সৃষ্টি প্রক্রিয়ারই একেকটি প্রক্রিয়া হয়, তাহলে জনবিস্ফোরণ কিংবা জন কার্যধারার সঙ্গে এসবের সম্পৃক্ততা কোথায়? কেন প্রকৃতির স্বাভাবিক ঘটনাগুলো মানুষের সংস্রবে এলেই আখ্যায়িত হবে দুর্যোগরূপে? এর প্রাথমিক জবাব টর্নেডো, সাইক্লোন, হ্যারিকেন, ভূমিধস, ভলকানিক ইরাপশন, সুনামি, ভূমিকম্প প্রভৃতি ঘটনাগুলো মানবসভ্যতায় অর্থনৈতিক দিকসহ অপরাপর বিষয়ের ক্ষতিসাধনের সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণে জীবনহানি ঘটায়। যেমন, ১৯৯৫ সালে জাপানের কোবে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ছয় হাজার পাঁচ শ। আর অর্থনৈতিক বিপর্যয় ১০০ বিলিয়ন ডলার। ২০১১ সালে জাপানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামিতে জীবনহানির সংখ্যা আট হাজার ছয় শ ৪৯ জন। মিসিং ১৩ হাজার দুই শ ৬২ জন। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুই শ ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের সুনামিতে মৃতের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার। ক্ষয়ক্ষতি ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সম্প্রতি ২০১৫ সংঘটিত নেপালের ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে জনজীবনে সম্পৃক্ত বাড়িঘরসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান। ২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হ্যারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮১ বিলিয়নের কাছাকাছি। জলোচ্ছ্বাসে মৃতের সংখ্যা এক হাজার চার শ ৩৬ জন। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ভয়ালতম খরা (drought) অতিক্রম করে গিয়েছিল হাজার বছরের সবগুলো রেকর্ড। সারা বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধনের তালিকা এভাবে ক্রমান্বয়ে আরও অনেক দীর্ঘতর করা যেতে পারে। কিন্তু তারপরেও পরিবেশবিদের এই সম্পর্কে অভিমত হলো বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনাবৃষ্টি, অ্যাসিড বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা, সাইক্লোন, টর্নেডো, ভূমিকম্পসহ আরও অজস্র প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের যে বিপুল ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে তার ৯৩ শতাংশ মানুষের অপরিমেয় উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে সৃষ্ট এবং এসব উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ঠিকঠাক তাল মিলিয়ে চলতে প্রস্তুত নয় আমাদের পৃথিবী। These are Anthropogenic hazards, that occur as a result of human interactions with the environment, because the universe is not required to be in perfect harmony with human ambition.
এবার বিশ্বমানবের কার্যধারা ও এনভায়রনমেন্ট পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় প্রকৃতির স্বাভাবিক ঘটনাগুলোকে কীভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রূপায়িত করে চলেছে সে সম্পর্কে প্রশ্নগুলোর উত্তর বিশ্লেষণ করে দেখা যাক। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পৃথক পৃথক কারণ আর বৈশিষ্ট্যের সম্পর্ক চিহ্নিত করে দুর্যোগকে কয়েকটি প্রধান শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
১) জিওফিজিক্যাল কারণে সংঘটিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়—ভূমিকম্প, সুনামি, আগ্নেয়গিরির অগ্নি উদগিরণ।
২) হাইড্রেলিজিক্যাল দুর্যোগসমূহ—বন্যা, ভূমিধস, সাগর মহাসাগর হঠাৎ উদ্দাম হয়ে ওঠায় উত্তাল ঢেউয়ের মহোচ্ছ্বাস।
৩) প্রাকৃতিক দুর্যোগের মেটিওরোলজিক্যাল কারণ—টাইফুন, সাইক্লোন, টর্নেডো, হ্যারিকেনসহ যেকোনো ঝড় অথবা অতি উষ্ণ বা অতি শীতলতার ফলে তাপমাত্রার অস্বাভাবিক ফারাক ও বিভিন্ন স্তরে কুয়াশা সৃষ্টি।
৪) ক্লাইমেটোলজিক্যাল কারণ—অনাবৃষ্টির কারণে সংক্ষিপ্ত অথবা দীর্ঘ খরা, বিভিন্ন দাবানল, গ্লেশিয়ারের তরলিত হয়ে পড়া।
৫) বায়োলজিক্যাল দিক—মহামারি আকারে বিভিন্ন ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব। ফলাফল উদ্ভিদ আর প্রাণিজগতে বিপর্যয় সৃষ্টি। গত দুই-তিন দশক ধরে সারা বিশ্বে সব ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্যাটার্ন পরিবর্তন এবং ঘন ঘন সংঘটনের মাত্রা পৃথিবীর অঞ্চল বিশেষে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে যেভাবে, তাদের কার্যকারণ নিরূপণ করে উৎকণ্ঠিত আবহাওয়াবিদরা অভিযোগ তুলেছেন মানুষেরই কর্মধারার দিকে।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

ভূমিকম্প: পৃথিবীর দৈহিক গঠনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ভূঅভ্যন্তরের ট্যাক্টোনিক প্লেটের প্রান্তগুলো পরস্পর লেগে থেকে সর্বদাই ধীরে ধীরে মুভ করে। কিন্তু কোনো কারণে হঠাৎ তাদের স্থানচ্যুতির ফলে যখন পরস্পরকে দ্রুত অতিক্রম করে যায় তখনই অনুভূত হয় তীব্র ভূকম্পন। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা কয়েক যুগ ধরে জিওলজিক্যাল জরিপ চালিয়ে গবেষণা শেষ করে মন্তব্য করেছেন, ভূমিকম্প ভূঅভ্যন্তরের স্বাভাবিক ঘটনা হলেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকশনের কারণে (তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে টেকনিক্যাল পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে) যে প্রচণ্ড চাপ ভূঅভ্যন্তরের কঠিন আবরণে সৃষ্টি হয়, তার ফলে ভূমিকম্পের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। নগরায়ণ বৃদ্ধি, নিউক্লিয়ার টেস্ট ও উঁচু উঁচু ম্যাসিভ বিল্ডিং তৈরির ফলেও চাপ বাড়ছে ভূগর্ভের কঠিন স্তরের ওপরে। চাপ বাড়ছে মাটির নিচ থেকে মাত্রাতিরিক্ত জল উত্তোলনের কারণেও।
সুনামি: সাধারণত ভূমিকম্পের জন্য সাগরের জলরাশি ব্যাপকভাবে উচ্ছ্বসিত হয়ে ঢেউয়ের পর ঢেউ তুলে যখন ওপরের দিকে ঠেলে উঠে বিপুলবেগে ছুটে আসে তখনই সৃষ্টি হয় সুনামি। আগ্নেয়গিরির কারণেও সুনামি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে উত্তপ্ত গ্যাসের প্রবল চাপে একইভাবে উঠে আসে জল।
আগ্নেয়গিরি: ভূগর্ভের কঠিন আবরণ (Crust Layer) কোনো কারণে দুর্বল হলে, তাতে ফাটল সৃষ্টি হলে কিংবা ভূমিকম্পের ফলে উত্তপ্ত তরল অথবা অর্ধ তরল পদার্থরাশি যখন প্রবল গতিতে উদগিরীত হওয়ার সুযোগ পায়, তখনই শুরু হয় আগ্নেয়গিরির অগ্নি উৎক্ষেপণ।
যা হোক ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের এক শ বছরের তথ্য রেকর্ড থেকে জানা জানা যাচ্ছে, জিওফিজিক্যাল দুর্যোগ বৃদ্ধির পেছনে মানুষের ভূমিকা না যতটা তার চেয়ে বহুগুণ বেশি প্রভাব হাইড্রোলজিক্যাল, মেটিওরোলজিক্যাল, ক্লাইমেটোলজিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল দুর্যোগ বাড়ার পেছনে। এর কারণ জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ও তাদের সীমাহীন চাহিদার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের প্রতিকূল কর্মপ্রবাহের প্রতিফলন। বন্যা, টাইফুন, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, দাবানল, খরা, ভূমিধস, বিভিন্ন ব্যাধি ইত্যাদি দুর্যোগের প্রধান কারণ নাটকীয় গতিতে বিশ্ব জলবায়ুর পরিবর্তন। যা মানুষ প্রতিনিয়ত করে চলেছে বনাঞ্চল ধ্বংস ও জলাশয় ভরাটের মাধ্যমে। নগরায়ণের বিস্তৃতিতে মেগাসিটির পরিকল্পনায়। উপকূল এলাকায় কিংবা নদীতীরে ব্যাপক জনবসতি সৃষ্টিতে। গ্রিনহাউস গ্যাসের নিরন্তর বৃদ্ধিতে তাপমাত্রার উচ্চতা বাড়িয়ে। প্রযুক্তির ব্যবহার করে যথেচ্ছভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে। ভূমি, জল ও বায়ু দূষণে। বায়োডাইভারসিটির বিনষ্টিকরণে। সমুদ্র বক্ষের স্ফীতি বাড়িয়ে। পাহাড় কেটে। জীবগ্রহের পারিপার্শ্বিকতা আমূল বদলে দিয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য সম্পূর্ণ নষ্ট করে।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

জনসংখ্যা বিস্ফোরণের সঙ্গে মানুষের সীমাহীন উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্ব যে তাল মিলিয়ে রাখতে প্রস্তুত নয়, তার বাস্তব প্রমাণ বিশ্ব আবহবিদ্যার বিবিধ রিপোর্টগুলো। সেসব তথ্যের উপসংহার আমাদের এটাই জানাচ্ছে যে, ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গের কথা তো দুরওয়াস্ত, সত্তরের দশকেও জলবায়ু ও আবহাওয়াসংক্রান্ত পরিবেশ পরিস্থিতি যে পর্যায়ে ছিল, বর্তমানে ক্লাইমেট পরিবর্তনের কারণে তা এরই মধ্যে পাঁচ গুণ বিপদ সীমা অতিক্রম করে গেছে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে অতিমাত্রায় জড় সভ্যতার উন্নয়নসাধনে আর আরামদায়ক বিলাসবহুল জীবন যাপনে বিশাল মানুষের পরিসংখ্যান, প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদকে এত বেশি বিরাট ব্যাপকতায় ব্যবহার করে ফেলেছে, পৃথিবীর সবগুলো বিষয় নিয়ে মানুষ এত বেশি কৌতূহলী পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে যে, পৃথিবীর স্বাভাবিক জলবায়ুর পরিবেশ বর্তমানে চরম সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড যা কিনা ঢাল হিসেবে সোলার এবং স্পেস রেডিয়েশনের বিরুদ্ধে কাজ করে পৃথিবীর জলবায়ুকে রক্ষা করে, সংরক্ষিত রাখে তাপমাত্রার মৃদুতাকে তাও আজ শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে ক্রমে ক্রমে। ফলাফল পৃথিবীর উত্তর ম্যাগনেটিক পোল স্থানান্তর হয়ে যাচ্ছে দক্ষিণের দিকে। যার পরিণতিতে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি আরও বেশি প্রচণ্ড হয়ে অচিরেই ভয়াবহতম রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটিয়ে বিপর্যস্ত করবে মানবজীবন। যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধি আর বিশ্বায়নের প্রভাব মানব সভ্যতাকে কীভাবে সংকটময় করে তুলছে সেই বাস্তবতাকে অতি নগণ্য সংখ্যক মানব মনই সক্ষম হচ্ছে উপলব্ধি করতে। এখনো সিংহভাগ মানুষের অজানা প্রযুক্তির উন্নততম অবস্থানে পৌঁছেও প্রকৃতি এবং তার পারিপার্শ্বিকতার ওপর নির্ভর করেই কেবল মানুষের পক্ষে, তার সভ্যতার পক্ষে কীভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।

ধারাবাহিক এই রচনার আগের চার পর্ব ক্লিক করুন: