প্রবাসের বনভোজন ও বাংলা সংস্কৃতি

উত্তর আমেরিকার শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোতে গ্রীষ্মকালে, বিশেষ করে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে প্রবাসী বাঙালিরা বার্ষিক বনভোজনে মেতে ওঠেন। মিশিগানের বাঙালিরাও পিছিয়ে থাকেন না এই আয়োজন থেকে। বিশেষ এই দিনের জন্য অনেকে পুরো বছর অপেক্ষা করে থাকেন।
প্রবাসের নগর ব্যস্ততায় দিনটি মূলত সবার সঙ্গে মিলিত হওয়ার এক মাহেন্দ্রক্ষণ। বছরের এই দিনেই অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। কথা হয়। দেশ থেকে নতুন কেউ এলে তাঁর সঙ্গে পরিচিত হওয়া। আবার কেউ কেউ বনভোজনে এসে বিয়ের ছেলে দেখা, মেয়ে দেখার কাজটিও সেরে ফেলেন।

মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন আঞ্চলিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। বনভোজন শুধু খাওয়াদাওয়ার মধ্যেই সীমিত থাকে না। একে উপলক্ষ করে গানবাজনা, খেলাধুলা, আড্ডা, লটারি, কবিতা আবৃত্তি, স্মরণিকা প্রকাশ, র্যাফল ড্রসহ থাকে বিভিন্ন আয়োজন।
কোনো কোনো সংগঠন র্যাফল ড্রতে গাড়িও পুরস্কার হিসেবে দিয়ে থাকে। কেউবা দেয় বাংলাদেশে যাওয়া–আসার প্লেনের টিকিট। বেশ কিছু সংগঠন তাদের সংগঠনের বার্ষিক স্মরণিকা প্রকাশ করে বনভোজনের দিনটিতে। স্মরণিকায় দেশের কবি–সাহিত্যিকদের লেখাসহ প্রবাসের লেখকেরা লেখা দিয়ে থাকেন। স্মরণিকাগুলো হয় মানসম্মত। বেশির ভাগ লেখাই হয় আবেগমিশ্রিত। ফেলে আসা দেশ, দেশের মাটি, দেশের মানুষের কথা।

বনভোজনে থাকে পুরোপুরি দেশীয় আমেজ। মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বিপুলসংখ্যক বাঙালির বাস। রয়েছে অনেক বাঙালি সংগঠন। এখন প্রতি শনি ও রোববার বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন পিকনিক স্পটে পিকনিক করছে, যা চলবে আগামী দেড় মাস। বিভিন্ন বাঙালি গ্রোসারিতে শোভা পাচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠনের বনভোজনের দিন, তারিখ, স্থান, র্যাফল ড্রর পুরস্কারের বিবরণসহ বড় বড় ফ্লায়ার। প্রবাসে বনভোজনও বাঙালির এক বড় পার্বণ।