পর্তুগালের নাগরিকেরা ১ মে থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন

পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অন্তনিও কস্তা
ছবি: লেখক

পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অন্তনিও কস্তা ২৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে আগামী পয়লা মে থেকে চতুর্থ ধাপের লকডাউন তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর ফলে জনগণের জীবনযাত্রায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। এছাড়া বর্তমানে জারি থাকা জরুরি অবস্থা বর্ধিত করা হচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিক এবং দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, সেনজেনভুক্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা স্পেনের সাথে সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে , রেস্তোরা, কফি শপ এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান গ্রাহকসহ রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত খোলা থাকবে (অভ্যন্তরে এক‌ই টেবিলে ছয়জন বাইরে সর্বোচ্চ ১০ জন ) , শপিং সেন্টার সাধারণ দিনে রাত ৯ টা পর্যন্ত এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সন্ধ্যা ৭ ট পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সাধারণ দিনে রাত ৯ টা পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি ও সরকারি ছুটির দিনে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত চলবে। সুপার মার্কেটগুলো বর্তমানে রাত ৯টা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বিক্রয় করতে পারবে যা ইতিপূর্বে ছিল সন্ধ্যা ৮টা। তাছাড়া বহিরাঙ্গনে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আছে।

শরীর চর্চা কেন্দ্র স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবে, খোলা আকাশের নিচে সকল ধরনের খেলাধুলা করা যাবে, বিয়ে বা যে কোনো অনুষ্ঠান ৫০ শতাংশ ধারণ ক্ষমতা ব্যবহার করা বা পালন করা যাবে।

যুক্তরাজ্য থেকে ভ্রমণকারীদের নিষেধাজ্ঞা ইতিমধ্যে তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রাজিল, ভারত এবং ইউরোপের উচ্চ করোনা সংক্রমণ দেশগুলো থেকে ভ্রমণকারীদের ১৪ দিনোর কোয়ারেন্টিন থাকতে হবে এবং বর্তমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যেসকল স্বাস্থ্যবিধি আছে তার মেনে চলতে হবে।

সমুদ্র সৈকত ব্যবহারের ক্ষেত্রে গত ২০২০ সালের যে নিয়ম ছিল তা বলবৎ থাকবে অর্থাৎ প্রতিটি গ্রুপকে ১ দশমিক ৫ মিটার দূরত্বে অবস্থান করতে হবে এবং ট্রাফিক সিগনালের মত লাল, হলুদ, সবুজ তিনটি সংকেত দ্বারা সমুদ্র সৈকতের ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নির্ণয় করা হবে। অর্থাৎ যদি কোনো সৈকতে লাল চিহ্ন থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে ওখানে আর প্রবেশ করা যাবে না। তাছাড়া নাগরিকেরা গন্তব্য ঠিক করার আগে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সমুদ্র সৈকতের চিত্র জেনে নিতে পারবেন।

গত জানুয়ারি মাসে করোনা সংকটে হাবুডুবু খাওয়া দেশটি এখন খুবই ভালো অবস্থানে রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তথা প্রতিবেশী ইউরোপিয়ান দেশগুলো যেখানে নতুন করে জরুরি অবস্থা ও লকডাউন দিচ্ছে অথচ পর্তুগাল স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে। এ বিষয়ে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট সবসময়ই দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন কেননা সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছেন তারই ফলাফল পর্তুগাল পেতে শুরু করেছে।

বর্তমানের সংক্রমণ পরিস্থিতি পূর্বের তুলনায় খুবই ভালো শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ২৯ এপ্রিল ৪৭০ জন নতুন সংক্রমণসহ মোট ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং নতুন একজনের মৃত্যুসহ সর্বমোট ১৬ হাজার ৯৭৪ জন মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

টিকার ক্ষেত্রে পুরো ইউরোপের মতো পর্তুগালের অচলাবস্থা থাকলেও গত বেশ কিছুদিন ধরে তার গতি পেয়েছে। এক কোটি দুই লাখ লোকের এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে একটি ডোজ টিকা নিয়েছেন ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৬ জন। তবে এর মাঝে দুইটি করে পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন ৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৯ জন।

*লেখক: ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী, সমাজসেবক