নিউইয়র্কের আকাশে বৃষ্টি

এই মুহূর্তে পিরু আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের জ্যামাইকাতে। একটা জব এজেন্সির অফিসে এসেছে কাজ খুঁজতে। যে কোনো অড জব বা কামলা কাজ দিলেই সে লুফে নেবে। তার পকেটে আছে মাত্র ১১ ডলার। এই টাকা দিয়ে হয়তো আজকে সাবওয়ে ট্রেনের ফিরতি টিকিট আর একবেলা খাবার হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা শুরু হবে আগামীকাল থেকে। বাংলাদেশে অনেকগুলো ফোন কল করতে হবে। রামপুরা বস্তির মিটিংয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার আছে। বাংলাদেশে তার বন্ধু আদিল বলেছে, বস্তির লোকদের সঙ্গে স্কাইপেতে লাইন লাগিয়ে দেবে। পিরু প্রতি মাসে বস্তির লোকদের জন্য টাকা পাঠায়। আদিল সেই টাকা প্রয়োজন অনুযায়ী ভাগ করে দেয়।
নিউইয়র্কে পিরুর রুমমেট শাহেদ মঞ্জুর একটা খবিশ টাইপের লোক। হাড় কিপটে। হাজার হাজার ডলার কামায়, কিন্তু পাঁচ পয়সারও খরচের হিসাব পাই পাই করে আদায় করে নেয়। দেশে সে স্ত্রী আর দুই বাচ্চাকে ফেলে এসেছে। কাগজপত্রের সমস্যা নেই, তবুও নিয়ে আসে না। তার অজুহাত আমেরিকায় পরিবার নিয়ে আসলে খরচপত্তর বেড়ে যাবে। খরচের ব্যাপার ছাড়াও তার বিশ্বাস আমেরিকায় সন্তান লালন পালন করে বড় করলে তারা নাকি মানুষ হয় না। আজ সকালেও অফিসে বের হওয়ার আগে সে পিরুর কাছে বাসার ইন্টারনেট বিলের বাইশ ডলার বকেয়ার কথা স্মরণ করে দিয়েছে। পিরু কিছুই বলেনি। তবে মনে মনে ভয়ংকর একটা খারাপ গালি দিয়েছে। খারাপ প্রকৃতির মানুষদের গালি দিলে পিরুর কেন যেন একটু একটু ভালো লাগে। তবে প্রথম প্রথম খারাপ লাগত। মনে মনে নিজেকে খারাপদের পর্যায়ে ভাবত। কিন্তু এখন সয়ে গেছে। তা ছাড়া সে তো কাউকে শুনিয়ে গালি দেয় না।
দুবার সাবওয়ের ট্রেন পরিবর্তন করে পিরু নিউ রিসোর্স জব এজেন্সির অফিসে ঢুকল। অফিসের ব্লন্ডি মেয়েটি পিরুকে কিছু গৎবাঁধা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল। মেয়েটি দেখতে বেশ। বয়স পঁচিশ কী ছাব্বিশ। নাম সিনথিয়া এলভিস। পরিচয় পর্ব শেষে হ্যান্ডশেক করার সময় মেয়েটি তার ভিজিটিং কার্ড দিয়েছিল। ওখানে চোখ বুলিয়ে পিরু জেনে নিয়েছে মেয়েটির নাম। খুব জানতে ইচ্ছে করছিল তার বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা। সেই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হবে বোকামি। পরিচয়ের প্রথম ধাপে এই জাতীয় প্রশ্ন করার মানেই হয় না। ভয়াবহ সুন্দরী মেয়েদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে যে, সে তার সৌন্দর্যের কিছুই উপলব্ধি করতে পারে না। তার সৌন্দর্য রক্ষিত থাকে অপরের চোখে। সে নিজেকে যতই সুন্দরী ভাবুক না কেন, অন্যের চোখ দ্বারা সত্যায়িত না হলে তার সৌন্দর্য গোল্লায় যায়। স্রষ্টা হচ্ছেন মানুষের দৈহিক সৌন্দর্য দানকারী আর তার নিজের সৃষ্টি দ্বারা তা প্রত্যয়িত হতে হয়। বড়ই আজব এই দুনিয়ার নিয়ম।

অ্যাপ্লিকেশন ফরম পূরণ করে পিরু সিনথিয়ার হাতে দিল। মেয়েটি মনোযোগ সহকারে ফরমে চোখ বুলিয়ে নিল। কোনো তথ্য বাদ গেল কিনা পরখ করে নিল। তারপর পাশ ঘিরে কম্পিউটারের মনিটরে চোখ রাখল। পিরু মেয়েটিকে অবাক চোখে দেখতে লাগল। মেয়েটিকে সামনাসামনি যেমন লাগে পাশ থেকে একটু অন্যরকম লাগে। তবে দুপাশ থেকেই দেখতে ভালো লাগে। মনে হয় দুজন অপরূপ নারী একজন মানুষের ভেতর বাস করছে। একই মানুষকে কেন দুই রকম লাগে। এর ব্যাখ্যা কী হতে পারে? জানালা থেকে উপচে পড়া আলোর জন্য কী এই তারতম্য। নাকি পিরুর আজকের দিনটিই হচ্ছে সবকিছু ভালো লাগার দিন। অনেকটা ভালোবাসা দিবসের মতো। যদিও আজকের দিনটি শুরু হয়েছিল রুমমেটকে গালি দিয়ে। কে জানে হয়তো মেয়েটির একটা ক্ষমতা আছে নিজেকে দুই রূপে প্রকাশ করবার। সে অস্ট্রিচ পাখির কথা স্মরণ করল। এই পাখি বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করবার জন্য তার সামনে এসে অনেক রকম নৃত্য করে। মেয়েটিও আকার-ইঙ্গিতে হয়তো অস্ট্রিচ পাখির মতো কিছু একটা ইঙ্গিত করছে যাতে মেয়েটির জন্য পিরুর মোহ জন্মায়। কিন্তু পিরু তো ওর কাছেই পাত্তাই পাবে না। নেহাত অফিসে না বসলে মেয়েটি হয়তো পিরুর সন্দেহভাজন চোখ দেখে পুলিশকে ফোন করে বসত। পিরু ভাবছে মেয়েটির বয়ফেন্ড অবশ্যই একটা ভাগ্যবান পুরুষ। সেও হয়তো অন্য কোনো রকম ক্ষমতার অধিকারী। হয় বাড়ি-গাড়ি, টাকা পয়সার ক্ষমতা আর তা না হলে হয়তো অতি সুদর্শন কোনো যুবক। পৃথিবীর সব প্রাণীই কোনো না কোনো ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। প্যাসিফিক ও ভারতীয় মহাসাগরের উষ্ণ পানিতে ক্লাউন ফিশ নামে এক প্রকার মাছ আছে যারা কিনা প্রয়োজনবোধে নিজেদের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারে। হলিউডের বিখ্যাত অ্যানিমেশন মুভি ‘নিমো’ ওই রকম একটা বাচ্চা মাছের হারিয়ে যাওয়া গল্প নিয়ে তৈরি। এই মাছের গোত্র প্রধান থাকে একটা মেয়ে মাছ। কখনো যদি ওই গোত্র প্রধান নেত্রী মাছ মারা যায় তাহলে সবচেয়ে ক্ষমতাবান পুরুষ ক্লাউন ফিসটি তার লিঙ্গ পরিবর্তন করে হয়ে যায় মেয়ে বা নেত্রী। একটা মাছেরও কি ভয়াবহ রকমের ক্ষমতা দেওয়া আছে। মাছের কথা ভাবতে গিয়ে পিরুর নিজের ক্ষমতার কথা মনে পড়ে গেলে। মনটা একটু বিষণ্নতার দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ ব্লন্ডি মেয়েটির কথা শুনে সংবিৎ ফিরে পেল।
আই হ্যাভ আ গুড নিউজ ফর ইউ। সিনথিয়ার প্রশ্নে পিরু ওর দিকে ফিরে তাকায়।
হয়্যার ইজ দ্যাট? কাজটা কোথায়। সে বুঝতে পারল তার জন্য কাজ অপেক্ষা করছে।
ভ্যালে পার্কিং ইন হোটেল ফর নেক্সট টু উইক ইন লং আইল্যান্ড সিটি। ইউ ক্যান স্টার্ট টুডে ইফ ইউ আর আভেইলেবল। অর্থাৎ লং আইল্যান্ড শহরের একটা আবাসিক হোটেলের গাড়ি পার্কিং করার কাজ পরবর্তী দুই সপ্তাহের জন্য। চাইলে আজকেই সে কাজ শুরু করতে পারে। ওই বিল্ডিংয়ে যে সমস্ত ভিজিটরেরা নিজেরা গাড়ি পার্কিং করবে না পিরু তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গাড়ি পার্ক করে আসবে। আমেরিকার সাধারণত অর্থবান লোকেরা আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা শপিং মলে এই জাতীয় ভ্যালে পার্কিং করে থাকে। এই কাজে প্রতি ঘণ্টার বেতন বাদেও অনেক টিপস বা বকশিশ পাওয়া যায়।
থ্যাঙ্ক ইউ বলে পিরু নতুন কাজের আরও বিস্তারিত জেনে জ্যামাইকার দিকে পা বাড়াল।
পিরুর পুরো নাম পিরুল হক। বাবা-মা শখ করে ডাকত পিরু বলে। একমাত্র বোন ইউলিয়া থাকে স্বামীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। তাদের বিয়ে হয়েছে নয় বছর হবে। এই দীর্ঘ সময় ইউলিয়ার সঙ্গে পিরুর একবারেও দেখা হয়নি। তবে মাঝে সাঝে ফোনে কথা হয়। পিরু অবিবাহিত। বয়স তেত্রিশ হবে। এই জীবনে বিয়ে থা করার ইচ্ছে তার নেই। বাংলাদেশে থাকতে ওর ভালো লাগার একজন মানুষ ছিল। নাম মনিহার। তিন বছর আগে পিরু তার এক বন্ধুর মাধ্যমে খবর পেয়েছে যে মনিহার এখন তিন বাচ্চার মা। তার বড় মেয়ের বয়স এগারো। তার জন্য অবশ্য পিরুর খুব একটা মাথা ব্যথা নেই। মাঝে মধ্যে যে মনটা আনচান করে ওঠে না তা নয়। তবে পিরু জীবনের সবকিছুকেই খুব সহজ ভাবে গ্রহণ করেছে। বাবার সঙ্গে পিরুর কোনো রকম সম্পর্ক নেই বললেই চলে। বাবা মমিরুল হক ছিলেন সহকারী সচিব। জ্ঞান হওয়ার পর জেনেছে তার বাবার জীবনযাপনের সঙ্গে আয়-রোজগারের মিল নেই। বাবাও পিরুকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন তার রিবিলিয়ান বা বিদ্রোহী টাইপের মনোভাব দেখে। ভয় করতেন একদিন তার ছেলে তাকে নিয়ে ঝামেলা করবে। হয়েছেও তাই। পিরু পড়াশোনা করেছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে। এসএসসি পরীক্ষার সময় বাবা তাকে ফোন করেছিল তার পরীক্ষা কি রকম হচ্ছে জানতে চেয়ে।
ফোনের ওপার থেকে পিরুর প্রশ্ন ছিল, বাবা, তুমি কত বেতন পাও?
এসব প্রশ্ন করার মানে কি? তুমি কেমন আছ, পরীক্ষা কেমন হচ্ছে তাই বল।
না, মানে অনেক দিন যাবৎ জানতে ইচ্ছে করছিল, তুমি সরকারি চাকরি করে আমাদের পেছনে কীভাবে এত টাকা খরচ করতে পার।
আমার আয় রোজগার নিয়ে তোমাকে এত ভাবতে হবে না। তোমার পরীক্ষা কেমন যাচ্ছে?
পিরুর উত্তর ছিল, বাবা তুমি কি ঘুষ খাও? ঘুষ কীভাবে খেতে হয়। ঘুষ তো কেউ খায় না। ঘুষ আসলে নেওয়া হয়। বাংলা হচ্ছে আজব একটা ভাষা। যে জিনিস হাতবদল হয় তা খাওয়া বলেও চালিয়ে দেওয়া যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এতে কমিউনিকেশন করতে কোনো সমস্যা হয় না। বক্তা ও শ্রোতা দুজনেই বুঝতে পারেন কী বোঝানো হচ্ছে। ভাষা ব্যবহারের এই ধরনের নমনীয়তা বা ফ্লেক্সিবিলিটি আছে বলেই কিন্তু বাংলা ভাষাটা অনেক রিচ বা ধনী। তুমি নিজে যে রকম ধনী সেই রকম। নিজের কথাতে পিরু নিজেই হো হো করে হেসে উঠল। অপর প্রান্ত থেকে মমিরুল হক সাহেব ফোন রেখে দিলেন।
এই ঘটনার পর থেকে মমিরুল হক সাহেব পিরুকে অনেকটা এড়িয়েই চলতেন। ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তার মা মমিনা বেগম। পিরুর বাবা স্ত্রীকে আদর করে মমি বলে ডাকতেন। বাবার সঙ্গে পিরুর সম্পর্কের কিছুটা দূরত্ব থাকলেও পিরু তার বাবার মুখে মমি ডাক শুনতে খুব পছন্দ করত। সারা জীবন বাবার এই একটা পছন্দসই অভ্যাস পিরু তার মধ্যে দেখতে পেয়েছিল।
এস ট্রেন ধরে পিরু জ্যামাইকা থেকে ম্যানহাটন এসে পৌঁছাল। কাঁধে রাখা ব্যাগ থেকে একটা এনভেলাপ বের করে স্টেশনের মেইল বক্সে ফেলে দিল। তারপর তেত্রিশ নম্বর স্ট্রিটের দিকে পা বাড়াল। নিউ নিউইয়র্কের আকাশে শরতের শ্বেত শুভ্র মেঘের আনাগোনা। সুউচ্চ কাচের দালানের মধ্য দিয়ে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে মেঘদের আনাগোনা। বিশাল শহরের মানুষেরা মহা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফুটপাথের পাশে একটা সাদা চামড়ার ভিক্ষুক কালো টুপি নিয়ে বসে আছে। তার মুখভর্তি সাদা দাঁড়ি, গায়ে নিল জিন্সের জ্যাকেট। পকেটে একটা মদের বোতল। বাইরে থেকে তার লাল মাথা দেখা যাচ্ছে। ভিক্ষুকের কাঁধে একটা তোতা পাখি। অনেক পথচারী তোতা পাখিটার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ছবি তোলাতে ব্যস্ত। খুব সম্ভবত ভিক্ষুকটির আয় রোজগারের বড় হাতিয়ার হচ্ছে তোতা পাখিটি। পিরু স্পষ্টতই শুনতে পেল পাখিটি মেয়েলি কণ্ঠে বলে চলেছে, হাই স্ট্রেঞ্জার, হাউ আর ইউ। হাউ আর ইউ (হে আগন্তুক, তুমি কেমন আছ, তুমি কেমন আছ)।
পিরুকে আরও সাত ব্লক হেঁটে যেতে হবে। পিরু মাথা নিচু করে হেঁটে যাচ্ছে। সে কিছুটা চিন্তিত। আজ রাতে রামপুরা বস্তির মিটিংয়ে তাকে ফোন করতে হবে। গত মাসে সে প্রায় পঁচানব্বই হাজার টাকা পাঠিয়েছে। চারটা পরিবারের মধ্যে সে টাকা সমান ভাগে ভাগ হয়েছে। দুইটা পরিবার একটা করে রিকশা ভ্যান কিনবে। যে দুজন রিকশা চালাবে তারা মাছ ধরার ট্রলারে করে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরে এসেছে। কপাল ভালো থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ার জঙ্গলে এদের কবর হয়নি। একজন মহিলার পিঠা বিক্রির দোকান দেবার কথা আর বাকিজন মাছের ব্যবসা করবে। কিছু টাকা বাকি থাকবে তা দিয়ে আজমল নামের তিন বছরের বাচ্চার চোখের চিকিৎসা করাতে হবে। ওর একটা চোখ কী কারণে বন্ধ হয়ে আছে। পরবর্তী দুই সপ্তাহ পিরুর আরও কিছু কাজ করতে হবে। টাকা প্রয়োজন। অনেকগুলো অসহায় মুখ তার দিকে চেয়ে আছে। পিরু আনমনা একা একা হেঁটে চলেছে। কী আশ্চর্য।। এতগুলো অসহায় মুখের সঙ্গে পিরু সেই ব্লন্ডি মেয়েটি সিন্থিয়ার মুখটাও দেখতে পেল। সে হাত দিয়ে ইশারা করে পিরুকে ডাকছে। সে বসে আছে কাচের দেয়াল ঘেরা একটা কফি শপে। পিরুকে ইশারা করছে কফি পান করবে কিনা। পিরু তার কল্পনা জগতের এই অমূল্য মুহূর্তটুকুকে নষ্ট করতে দিল না। সে সিন্থিয়ার দিকে এগিয়ে গেল। আহ্লাদী হয়ে মেয়েটি পিরুকে প্রশ্ন করল পিরু তোমাকে আমি জানতে চাই। তুমি কে? কোথা থেকে এসেছ? তোমার রেজুউমিতে দেখেছি তুমি কম্পিউটার সায়েন্স থেকে মাস্টার্স করেছ, তবে গাড়ি পার্কিং করার মতো অড জব কর কেন? তোমার ব্যর্থতা কোথায়? আমাকে বল প্লিজ।
নিউইয়র্কের আকাশ জুড়ে হঠাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। পিরু আকাশ দেখতে চাইল কিন্তু এত বড় শহরের উঁচু উঁচু অট্টালিকার মাঝে ভেদ করে আকাশের দেখা পাওয়া এত সহজ নয়। ইতিমধ্যে রাস্তার মানুষজন বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচবার জন্য ফুটপাথের পাশের দোকানগুলোতে গা চেপে দাঁড়িয়ে আছে। পিরু বৃষ্টির মধ্যেই হেঁটে চলেছে আর নিজে নিজেই বিড়বিড় করে ভিক্ষুকের সেই তোতা পাখিটির মতো বলে চলেছে, হে আগন্তুক, তুমি কেমন আছ? তুমি কেমন আছ?
(লেখকের ইমেইল: [email protected])