টরন্টোতে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের একাংশ
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের একাংশ

কানাডার প্রভাবশালী এমপি জন ম্যাককে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধিশালী। কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা এখানকার বহুজাতিক সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

১ জুলাই বুধবার কানাডা ডে উদ্‌যাপন উপলক্ষে কানন গার্ডিয়ান ফার্মেসি আয়োজিত কানাডা ডে শিশু কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জন ম্যাক কে বলেন, বহুজাতিক সংস্কৃতি তথা অভিবাসী সংস্কৃতিতে একাত্ম হওয়াটা যেকোনো কমিউনিটির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশি কমিউনিটি মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন না থেকে একাত্ম হয়েছে এবং সেটি বিস্তৃতিরও উদ্যোগ নিয়েছে। কমিউনিটির এই প্রবণতাকে স্বাগত জানান তিনি।

বক্তব্য দিচ্ছেন জন ম্যাককে এমপি
বক্তব্য দিচ্ছেন জন ম্যাককে এমপি

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশি মালিকানাধীন কানন গার্ডিয়ান ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী ফার্মাসিস্ট কানন বড়ুয়া। এই পর্বের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সনৎ বড়ুয়া।
শেষ পর্বে টরন্টো পুলিশের সাবেক প্রধান বিল ব্লেয়ার সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। সম্মানিত অতিথি বিল ব্লেয়ার ছাড়াও পুরস্কার বিতরণী পর্বে বক্তব্য রাখেন নতুন দেশ ডটকমের প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর ও কানন বড়ুয়া প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটির বিশিষ্ট সংগঠক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, প্রতিযোগিতার বিচারক শিল্পী নুর জালালী, সনৎ বড়ুয়া, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের অন্যতম স্বত্বাধিকারী মৌসুমী বড়ুয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডার সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন বাহার প্রমুখ।
এই আয়োজনে বাংলাদেশি কমিউনিটি ছাড়াও অন্যান্য কমিউনিটির বিপুলসংখ্যক নাগরিক উপস্থিত ছিলেন।
কানাডার জন্মদিবস কানাডা ডে উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কানন গার্ডিয়ান ফার্মেসি। বয়স অনুপাতে তিন গ্রুপে ভাগ করে কানাডার ঋতু বিষয়বস্তুর ওপর তাৎক্ষণিক চিত্র অঙ্কন করতে দেওয়া হয় প্রতিযোগীদের। বিভিন্ন কমিউনিটি থেকে প্রায় ৫০ জন শিশু-কিশোর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী নুর জামাল ও তামিম বিচারক হিসেবে সেরা আঁকিয়েদের বাছাই করেন।
সম্মিলিত গ্রুপের মধ্যে সেরা চিত্রের জন্য পুরষ্কার পায় শিপ্রা। এ ছাড়া ‘ক’ গ্রুপে সেরা তিনজন আঁকিয়ে হলো শিপ্রা, অলিভিয়া ও প্রপা। ‘খ’ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে অরুণিমা চক্রবর্তী, মাসুদা জেবিন রায়না, ক্যাথরিন পালমার। ‘গ’ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে অভিয়া সুবাসানথিয়ার, আখিয়া দেবনাথ, মিফতাউল জান্নাত।

অতিথিদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন শিশু-কিশোর
অতিথিদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন শিশু-কিশোর

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে গিয়ে টরন্টো পুলিশের সাবেক প্রধান বিল ব্লেয়ার বলেন, শিশু-কিশোরদের আঁকা চিত্রকর্মগুলো দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন। বিপুলসংখ্যক প্রতিভাবান ভবিষ্যৎ চিত্রশিল্পীর সমাবেশ থেকে সেরাদের বাছাই করা রীতিমতো একটি দুরূহ কাজ হিসেবে মন্তব্য করে তিনি অংশগ্রহণকারী সকল শিশুকিশোর আঁকিয়েদের ধন্যবাদ জানান।
বিল ব্লেয়ার তাঁর বক্তৃতায় বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রশংসা করে বলেন, কানাডার মূলধারার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। অত্যন্ত সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই কমিউনিটি মূলধারার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয় হলে কানাডার বহুমাত্রিক সংস্কৃতি আরও উৎকর্ষ লাভ করবে।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত স্কারবোরো সাউথওয়েষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল পার্টির মনোনীত এমপি প্রার্থী বিল ব্লেয়ার আরও বলেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাদের সঙ্গে আমার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটির যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
আয়োজক ফার্মাসিস্ট কানন বড়ুয়া বলেন, কানাডার মূলধারার সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশি কমিউনিটির যোগসূত্রকে আরও নিবিড় করার অভিপ্রায় নিয়েই তিনি এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। আগামী বছর আর বড় আয়তনে এই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।