করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোরিয়া যেভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে, একই পথে কি জার্মানি হেঁটেছে। কোরিয়া সংক্রমণের চেইন ভাঙার জন্য ব্যাপকভাবে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করেছে। একই পথ কি জার্মানি নিয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, জার্মানি এ কৌশল দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে নিয়েছে। এ কৌশল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ধীর করার ক্ষেত্রে সাফল্য আনছে জার্মানিতে। জার্মানি অন্য যেকোনো ইউরোপীয় দেশের তুলনায় বেশি পরিমাণ করোনাভাইরাস পরীক্ষা করছে, করোনাভাইরাসের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। রোগীর সাম্প্রতিক চলাফেরা শনাক্ত করতে স্মার্টফোনে লোকেশন ডেটা ব্যবহার করা। সম্ভাব্যভাবে সংক্রমিত লোকদের আরও সঠিকভাবে অনুসন্ধান করা এবং পৃথক করা হয়। সেলফোন ট্র্যাকিং করা, যেমনটা কোরিয়া করেছে, তেমনটি জার্মানিতে চলছে। জার্মানির সরকারি কর্মকর্তা এবং মহামারি বিশেষজ্ঞরা ট্রেস, টেস্ট ও ট্রিট অনুসরণ করছেন। যে কৌশলটি দক্ষিণ কোরিয়াকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করেছিল। গত ১৫ মার্চ জার্মানির একটি করোনা পরীক্ষার বুথে করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখলাম, সম্ভাব্য আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ব্যাপক স্ক্রিনিং এবং রোগীদের নিরীক্ষণের জন্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করেছে জার্মানি, যেমনটি ২০২০ সালে ৭ ডিসেম্বর সিউলের চুন চুং ইয়ং ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে দেখেছিলাম।
জার্মানিতে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট নেতৃত্ব দিচ্ছে, কোরিয়ায় দিচ্ছে কোরিয়া সেন্টার ফর কন্ট্রোল ডিজিজ। জার্মানি এবং দক্ষিণ কোরিয়া দুটি আলাদা দেশ। তবে দেশ দুটি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের কৌশল অভিন্ন সুরে। তবে জার্মানি উদারনৈতিক মানবাধিকারের দেশ হওয়ায় অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে করোনা নিয়ন্ত্রণে, তা ছাড়া ইইউভুক্ত হওয়ায় যোগাযোগ শিথিল রাখতে হচ্ছে,অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ও একই সঙ্গে নানান দেশের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রিত করে করোনার লাগাম টানতে সক্ষম হচ্ছে। আমি যা দেখেছি, দুই দেশেই টেস্ট, টেস্ট, টেস্ট নীতিতে হেঁটেছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়া নানা সূচকে এগিয়ে থাকলেও সব বিদেশিকে ২২ মার্চের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করাতে বলায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ, এতে সামাজিক দূরত্ব তেমন না থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।