কানাডীয় সাহিত্য নিয়ে প্রথম বাংলা গবেষণাগ্রন্থ
কানাডার রাজনীতি, ব্যবসা, শিক্ষা, প্রশাসন, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঙালিরা এগিয়ে গেলেও এ দেশের সাহিত্য নিয়ে বাঙালিদের চিন্তাভাবনা খুব কমই চোখে পড়েছে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে টরন্টোবাসী সুব্রত কুমার দাস রচিত ‘কানাডীয় সাহিত্য: বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ গ্রন্থটি কানাডীয় সাহিত্যকে উদ্ভাসিত করবে বাংলাভাষী পাঠকদের মননজগতে। যদিও অল্প কয়েকজন বাংলাভাষী কানাডীয় সাহিত্যিক ইতিমধ্যে ইংরেজিতে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, অনুবাদ ইত্যাদি বিষয়ে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছেন, সমগ্র কানাডীয় সাহিত্যের একটি রূপরেখা তৈরি করে বাংলাভাষী পাঠক সমাজের কাছে উন্মোচিত করার কঠিন কাজটি সংশোধিত করার গরজ কেউ উপলব্ধি করেননি। আমেরিকার নিউজার্সি-ভিত্তিক গায়ত্রী মেমোরিয়াল লিটারারি অ্যাওয়ার্ড (২০১৮) পাওয়া লেখক সুব্রত কুমার দাস এই গরজটি হৃদয়ে ধারণ করেছেন এবং তাঁর মগজ তাড়িত উপাদান দিয়ে হৃদয় তাড়িত প্রকল্পটি পাঠকের দরবারে অবমুক্ত করেছেন। এই অবমুক্তিতে সমৃদ্ধ হলো বিশ্বসাহিত্যের ভান্ডার; সংযোজিত হলো এক নব অনুষঙ্গ— বাংলায় কানাডীয় সাহিত্য। অনুজপ্রতিম অনুসন্ধানী গবেষক লেখক সুব্রত কুমার দাসকে অভিনন্দন তাঁর অভিযাত্রায়।
গ্রন্থটি যদিও একত্রিশ অধ্যায়ের সীমানায় বন্দী, এই একত্রিশের বাইরে শুরুতেই ‘প্রাক কথন’ নামের ভূমিকাটি নির্মিত হয়েছে কথাশিল্পের মুনশিয়ানা দিয়ে। বলা যায়, পাঠকদের জন্য এটি ‘এপিটাইজার’। কঠোর পরিশ্রম ও সময়ের ফসল এই কথনমালা কানাডীয় সাহিত্যের চমকপ্রদ নানান অসাধারণ তথ্যে ভরপুর। সাহিত্যক্ষুধায় তাড়িত পাঠকদের এই ‘এপিটাইজার’ দ্রুত নিয়ে যাবে ‘ভোজন কক্ষে’, যেখানে সাজানো রয়েছে বৌদ্ধিক উপাদানে অতি যত্নে ‘রন্ধনকৃত’ একত্রিশটি ‘মেন্যু’। ‘মেন্যু’ তো নয়, যেন বিশাল সাহিত্যভান্ডারের নানান নমুনা নিয়ে ভেসে চলা এক অদম্য ‘যমুনাস্রোত’। পূর্বে সেইন্ট জন’স, পশ্চিমে ইউকনের বিভার ক্রিক, উত্তরে নুনাভুট আর দক্ষিণে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ বাজারের দেশ আমেরিকার সীমানা দিয়ে সাজানো ভূ-মানচিত্রের নানান সংস্কৃতির নিশ্বাসে সমৃদ্ধ এই কানাডার সাহিত্য বেড়ে উঠেছে বিচিত্র সব মানবিক উপাদানে। সুব্রতের এই গ্রন্থে রয়েছে কানাডীয়দের হৃদয় তাড়িত ভালোবাসার কথা, জঙ্গল জীবনে ঋণাত্মক তাপমাত্রায় অভিবাসন যাপনের করুণ ব্যথা। খনিশ্রমিকের ক্ষণিকের কথা, গৃহকর্মীর সতীত্ব রক্ষায় আদালতের নিষ্ঠা, ফিলিস্তিনি শিশুদের কান্নার নিনাদ আর নারী-পুরুষের জনন ক্ষুধা ঠাঁই করে নিয়েছে এই দেশের গল্প, উপন্যাস, নাটক, সংগীত, গজল, চিত্রশিল্প ও কাব্যধারায়।
প্রাককথন পাঠ করলে জানা যাবে শ্রীলঙ্কায় জন্মগ্রহণকারী মাইকেল ওন্ডাটজে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার ঘাড়ে নিয়ে কানাডার ‘সাহিত্যরানী’ মার্গারেট অ্যাটউডের পাশে দিব্যি বসে আছেন কানাডীয় সাহিত্য তথা ‘ক্যানলিট’ জগতের অভিভাবকের পদ্মাসনে। সুব্রত তাঁর ‘সুব্রতীয় পদ্ধতি’ প্রয়োগ করে বিভিন্ন তথ্যাদি দিয়ে পরিবেশন করেছেন কানাডীয় সাহিত্য কীভাবে একটা প্রপঞ্চের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ‘ক্যানলিট’ হিসেবে নিজের পরিচয় দাঁড় করাল। ‘কানাডীয় সাহিত্যে বিশ্বসাহিত্যের স্বাদ’ অধ্যায়ে ক্যানলিটের নক্ষত্র হিসেবে তিনি নিয়ে এসেছেন চীনের তিয়েন আন মেন স্কয়ারের ১৯৮৯ সালের ঘটনা নিয়ে রচিত ‘ডু নট সে উই হ্যাভ নাথিং’ উপন্যাসের লেখক মালয়েশিয়ার চাইনিজ অভিবাসী মেডেলিন থিয়েনকে। আরেক নক্ষত্র ‘দ্য সেন্টিমেন্টালিস্ট’ উপন্যাসের রচয়িতা জোহানা স্কিরসরুড, যাঁর কাহিনিতে উঠে এসেছে ভিয়েতনাম যুদ্ধ-পরবর্তীকালের অভিজ্ঞতা, যেখানে নায়িকা কেবলই ছুটে চলেছেন তাঁর বাবার অন্ধকার অতীত জীবনের রহস্য উন্মোচনের পেছনে। এই অধ্যায়ে আরও আছেন কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ছোট ভাই আলেক্সান্ডার ট্রুডো, টরন্টোর বর্তমান পোয়েট লরিয়েট অ্যান মাইকেল, কানাডার প্রথম পোয়েট লরিয়েট জর্জ এলিয়ট ক্লার্ক এবং আরও অনেক সাহিত্যতারকার কথা। প্রাক কথন অনুযায়ী, হেইম্যানের ‘কুয়োডলিবেট্স’ হচ্ছে ১৬২৮ সালে প্রকাশিত কানাডার প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
‘বিশাল কানাডার দূরতিক্রম্য সাহিত্য’কে ভালোবেসে গবেষক সুব্রত খুঁজে বের করেছেন বেশ কিছু বাংলাভাষী কানাডীয় সাহিত্যিককে। তাঁরা হচ্ছেন ভারতের অর্জুন বসু, আয়েশা চ্যাটার্জী, ভারতী মুখার্জী, সাম মুখার্জী ও সব্যসাচী নাগ এবং বাংলাদেশের দয়ালী ইসলাম, আরিফ আনোয়ার ও লাবনী ইসলাম। আরিফ আনোয়ারের ‘দ্য স্টর্ম’ উপন্যাসে উঠে এসেছে ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের কথা। টরন্টোর বাংলাভাষীদের সংগঠন বিএলআরসি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লেখক আনোয়ারের সঙ্গে আলাপকালে তিনিও একমত হন যে, দশ লাখ মানুষের প্রাণ ঘাতক সত্তরের ঘূর্ণিঝড়ের পর প্রত্যাশিত ত্রাণ তৎপরতায় পাকিস্তান সরকারের নির্লিপ্ততা স্বাধীন বাংলাদেশের উন্মেষ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
কানাডীয় সাহিত্যের আধুনিক অবয়বকে অবলোকন করার জন্য এই গ্রন্থের ‘প্রসঙ্গ: ক্যানলিট’ তথা তৃতীয় অধ্যায়টি অত্যন্ত সহায়ক হবে। ব্রিটিশ উপনিবেশ ও প্রতিবেশী আমেরিকার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে কানাডাকে মুক্ত করার ভাবনা, কানাডার জাতীয়তাবাদ ও স্বকীয়তাবোধের আলোকে ‘ক্যানলিট’ নিঃসন্দেহে একটি বৈপ্লবিক প্রপঞ্চ। পঞ্চাশের দশকে সারা কানাডায় মোট বইয়ের দোকান ছিল গোটা পঞ্চাশেক। লেখকের সংখ্যাও ছিল হাতে গোনা এবং তখন লেখকেরা পরস্পরকে চিনতেন না। ১৯৫৯ সালে কানাডা কাউন্সিল গভর্নর জেনারেল সাহিত্য পুরস্কার চালু করলে এবং পরবর্তীকালে মেধাবী লেখকদের মধ্যে অনুদান দেওয়া শুরু হলে ক্রমশ পাল্টে যেতে থাকে কানাডার গ্রন্থ জগতের চিত্র। ১৯৬২ সালে ‘Can.Lit’ নামে একটি কবিতা লেখেন কবি আল বার্নি। ১৯৬৯ সালে ‘Can.Lit’ শব্দটি পাওয়া যায় টরন্টোর ‘গেস্নাব অ্যান্ড মেইল’ পত্রিকায় উইলিয়াম ফ্রেঞ্চের লেখায়। ফ্রেঞ্চের ভাষায়, “... All of a sudden, we’ve got CanLit coming out of our ears. …’’ ষাটের দশকের সেই নীরব বিপ্লবের ফসল আজ কানাডার প্রতি ছয় শ মানুষের মধ্যে একজন লেখক। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত মার্গারেট অ্যাটউডের ‘সারভাইভাল’ গ্রন্থটি আজ ‘ক্যানলিট’-এর মূল চেতনাকে ধারণ করে আছে। এই গ্রন্থেই তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন কানাডার স্বকীয়তাবোধ–সংশ্লিষ্ট নানান না-জানা প্রশ্নের জাতীয়ভাবে মীমাংসিত জবাব। লেখক বারবারই হাত পেতেছেন অ্যাটউডের ‘সারভাইভাল’ ও ১৯১৭ সালে প্রকাশিত টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক নিকোলাস জেমস মাউন্টের গবেষণাগ্রন্থ ‘অ্যারাইভাল’ এর পাতায় পাতায়।
গবেষক সুব্রতের এই পরিশ্রমলব্ধ কাজের জন্য পাঠকের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই। এতক্ষণ যাঁদের নিয়ে আমি পর্যালোচনা করলাম, তাঁদের প্রায় সবাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় পুরস্কৃত; কেউ পঁচিশ হাজার ডলারের গভর্নর জেনারেল পুরস্কার, নয় তো এক লাখ ডলারের গিলার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক। কেউ আছেন ম্যান বুকার বিজয়ী। এলিস মুনরো নোবেল পেয়েছেন ২০১৩ সালে।
পরের ২৮টি অধ্যায়ে লেখক সুব্রত ২৮জন সাহিত্যিকের জীবন ও গ্রন্থকে আলোকিত করতে গিয়ে প্রসঙ্গ টেনেছেন বিভিন্ন দেশের শত শত সাহিত্যিকের। ভাবা যায় না, কী অসাধারণ কাজ করেছেন এই লেখক। পাঠককে একেবারে গিলিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায় তিনি অত্যন্ত পারদর্শিতা, আন্তরিকতা ও যত্নের সঙ্গে তাঁর সংগৃহীত তথ্যের বিন্যাস ঘটিয়েছেন। সূচিপত্রের এই অধ্যায়গুলোতে আছেন কিংবদন্তি লেখক সুজানা মুডি, কানাডীয় আধুনিক কাব্যধারার যুগপুরুষ আরভিং লেইটন, চে গুয়েভারার আদর্শে বেড়ে ওঠা ও ক্যানাডার কবিতায় নতুন ধারা সৃষ্টিকারী মিল্টন অ্যাকর্ন, ইংরেজ কবি এজরা পাউন্ডের অনুসারী ও গজল রচনাকারী ফিলিস ওয়েব, সঙ্গীতরচয়িতা, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও কবি লিওনার্দ কোহেন, জীবনীমূলক উপন্যাসের লেখক ক্যারল শিল্ডস, অকালপ্রয়াত কবি প্যাট লোথার, আইরিশ উপন্যাস ‘ইউলিসিস’ভক্ত শতাধিক গ্রন্থের লেখক জর্জ বাওয়ারিং, প্রায় দুই শ গ্রন্থের অনুবাদক (ফরাসি থেকে ইংরেজি) শিলা ফিশম্যান, প্রথাবিরোধী লেখক বিল বিসেট, ভূতপূর্ব গভর্নর জেনারেল লেখক ডেভিড জনস্টন এবং সিরীয় শরণার্থীদের জীবনকথা নিয়ে রচিত ‘দ্য বয় অন দ্য বিচ’ গ্রন্থের লেখক টিমা কুর্দি।
লেখকদের জীবন ও কর্ম নিয়ে লিখতে গিয়ে আমাদের আজকের গ্রন্থকার সুব্রত এমন সব তথ্য পরিবেশন করেছেন, আমার বিশ্বাস, পাঠকেরা হৃদয় দিয়ে মগ্ন হবেন বইটি পাঠকালে। চিত্রশিল্পী লেখক এমিলি কারের (১৮৭১-১৯৪৫) আঁকা ‘দ্য ক্রেজি স্টেয়ার্স’ ছবিটি তাঁর মৃত্যুর ৭০ বছর পর বিক্রি হয়েছে সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলারে। লুসি মড মন্টগোমারি রচিত ‘অ্যান অব গ্রিন গ্যাবেলস’ উপন্যাসটি এতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, বইটিকে প্রথম তিন মাসে চার বার ছাপতে হয়। যখন কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে সাধারণ মানুষের গড় বার্ষিক আয় ছিল ৩০০ ডলার, তখন ১৯১০ সালে এই লেখিকা এই বইয়ের জন্য সম্মানী পান ১৩ হাজার ডলার। পাঁচবার গভর্নর জেনারেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী হিউ ম্যাকলেনানের ‘টু সলিটিউডস’ উপন্যাসটি সকালে প্রকাশিত হলে দুপুরের মধ্যেই সব কপি (৪,৫০০০) বই বিক্রি হয়ে যায়। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন ২৫টি কাব্যগ্রন্থের কবি ডরোথি লিভসে। লিভসের কবিতায় সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা থাকলেও তাঁর কবিতায় যৌনতার প্রকাশ শিল্পোত্তীর্ণ হয়নি। ২০০১ সালে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪৩টি গ্রন্থের লেখক পি কে পেইজের ‘প্লানেট আর্থ’ কবিতাটি নিউইয়র্ক, অ্যানটার্টিক অঞ্চল এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একই সঙ্গে পাঠ করে কবিকে সম্মান জানানো হয়। গুয়েনডলিন ম্যাকওয়েনের কবিতায় কোরআনের কথা যেমন আছে, তেমনি তাঁর কবিতায় নটরাজ শিব নাচে, নাচে কণিকা।
গোল্ডরাশের কবি রবার্ট সার্ভিসের একটি শোকগাথা দিয়ে শেষ করতে চাই আজকের পর্যালোচনা। ‘দ্য ক্রিমেশন অব স্যাম ম্যাকগি’ কবিতায় আমরা দেখি খনিশ্রমিক স্যামের শেষকৃত্য। স্যামকে ফার্নেসের চিতায় তুলে দিলে জ্বলে ওঠে আগুন; জ্বলে ওঠে কবির মন। ফার্নেসের দরজা খুলে একটু দেখার চেষ্টা করলে চিতার হৃদয়ে শুয়ে থাকা স্যামের লাশ কবির সঙ্গে কথা বলে। স্মিত হাসি দিয়ে লাশ বলে ওঠে, “দয়া করে দরজা বন্ধ করো। আমি এখানে ভালোই আছি। তোমাদেরকে বাইরে ঠান্ডার মধ্যে ছেড়ে এসে আমি এখন ভেতরে উষ্ণতার ছোঁয়ায় আছি। আমি শঙ্কিত এই ভেবে যে, বাইরে এত বাতাস আর শৈত্য প্রবাহের মধ্যে তোমরা নিরাপদে বাড়ি পৌঁছতে পারবে কি না।”
‘কানাডীয় সাহিত্য: বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ গ্রন্থে সংযোজিত রেফারেন্সগুলো পিপাসু পাঠকদের নিজেদের পছন্দের ‘ক্যানলিট’ সড়কে ভ্রমণ করতে Global Positioning System বা GPS হিসেবে দায়িত্ব পালনে ভূমিকা রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।