কবিতা
ঝুল বারান্দায় মা
আবদুল্লাহ জাহিদ
ঝুল বারান্দাটা এখন বড় বেশি ফাঁকা
মা অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতেন একা
রেলিঙে বেয়ে ওঠা বাগান-বিলাস
পাতার আড়ালে এক টুকরো আকাশ।
এত দেরিতে এলি খোকা?
সবে তো দশটা বাজে!
তর্ক করিস না তাড়াতাড়ি খা
পান খাওয়া লাল ঠোঁটে অভিমানী
তারপর পিঠ চুলকে নেবার সুখ
রাতের জ্যোৎস্নায় ভিজে ভিজে
হারানো দিনের গল্পে মশগুল
এভাবেই চলছিল বেশ।
লাল পেড়ে গরদের শাড়িতে
অপরূপা মনে হতো তাঁকে।
শত ঝড়ঝাপটায় ঋজু,
সংসারটা আঁকড়ে রেখেছেন
সামলেছেন, থেকেছেন অনড়।
কখনো সঙ্গী ছিলাম আমি
তখনই শিখেছি সেই বীজমন্ত্র
‘আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন’
কর্কটের ব্যথায় কুকড়েছেন
তবুও উহ্ শব্দটি নাই
যদি আমার ব্যথা পাই ।
ঝুল বারান্দায় পত্রিকা, চায়ের পেয়ালা
সাচি-পান আর জর্দার ঘ্রাণ,
পাতাবাহার আর ফুলের টব
ভাবিনি হবে অচেনা সেই সব,
বাতাসে থাকবে না মায়ের সুবাস।
‘শিকল কেটে তোতা পাখিকে উড়িয়ে...
মায়ের খোঁজ নিতে হবে,
দূর আকাশের নক্ষত্র ছায়ায়
যেখানে সব মায়েরা চলে যায়—
‘শুভ্র কাফন পড়ে
শেফালির ফুল’
[হে আমার প্রতিপালক! আমার পিতা- মাতার প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।]