
কানাডার ওন্টারিও প্রদেশের প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) ডাগ ফোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেছেন টরন্টোয় নিয়োজিত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ। গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) টরন্টোর কুইন্স পার্কে তিনি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, ডাগ ফোর্ড দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী প্রিমিয়ার। বৈঠককালে তিনি বাংলাদেশ কনস্যুলেটের গত এক বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বৈঠকে কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, টরন্টোয় বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট খোলার বিষয়টি ওন্টারিও, সাস্কাচেওয়ান, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, ম্যানিটোবা ও আলবার্টায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন।
দেশটির সঙ্গে পরীক্ষিত ও গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে নাঈম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশটির সমর্থনকে স্মরণ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার কানাডার সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
কনসাল জেনারেল আরও জানান, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার ও দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান বাজার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ওন্টারিও তথা কানাডা বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি কনসাল জেনারেলকে তাঁর সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বিশেষত পরিবেশবান্ধব পারমাণবিক শক্তি চুল্লি, অর্থনৈতিক অভিবাসন, শিক্ষা ও হাইটেক আইটিভিত্তিক সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন।
ডাগ ফোর্ড জানান, আগামী দিনে ওন্টারিওতে আরও ২ লাখ ৫০ হাজার দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ এর অন্যতম উৎস হতে পারে। এই লক্ষ্যে তিনি প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশ কনস্যুলেট গত সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ-কানাডা বিজনেস ফোরাম-২০১৯’ সফলভাবে আয়োজন করেছে। এই বিজনেস ফোরামের মাধ্যমে যে গতির সঞ্চার হয়েছে, তা সুসংহত করার জন্য আগামী দিনেও কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

কনসাল জেনারেল প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ডের কাছে আইসিটি, জাহাজ নির্মাণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, বর্জ্য ও পানি ব্যবস্থাপনা, নবায়নযোগ্য শক্তি, ভেটেরিনারি মেডিসিন, মেডিকেল সরঞ্জাম, কৃষিখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতকে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করে সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
কনসাল জেনারেল বর্তমান সরকারের অধীনে যে অসামান্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করতে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করার জন্য প্রিমিয়ারকে একটি বাণিজ্য মিশন প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেন। প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে সম্মত হয়েছেন।
বৈঠক শেষে কনসাল জেনারেল বঙ্গবন্ধুর কারাগারের রোজনামচার ইংরেজি অনুবাদ এবং ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা প্রিমিয়ারকে স্মারক উপহার হিসেবে প্রদান করেন।
বৈঠকে কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কনসাল মানসুরিন চৌধুরী ও কনসাল মনোয়ার মোকাররম উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি