
আনন্দ শব্দটির মাঝে আছে এক অনাবিল শান্তি। আমাদের প্রাত্যহিক ঝঞ্ঝাটময় জীবনে আনন্দ আসে তপ্ত দাহ মধ্যাহ্ন দুপুরে এক পশলা বৃষ্টির মতো। যার দীর্ঘায়ু ভীষণ স্বল্প। অজস্র অশান্তির মাঝে ‘আনন্দ’ নিয়ে আসে প্রাণের ছন্দ। ছেলেমেয়ে, আবালবৃদ্ধবনিতা থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ আনন্দ খোঁজে। আনন্দই জোগায় বেঁচে থাকার প্রেরণা।
ছোট্টবেলায় আব্বুকে জিজ্ঞাসা করতাম:
‘পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ কীসে হয়?’
আমার অধ্যাপক বাবা বলতেন:
‘ভালো রেজাল্টের চেয়ে বড় আনন্দ পৃথিবীতে আর কিছু নেই।’
তখন ভাবতাম আব্বু বুঝি পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য এভাবে বলছেন। আজ ভাবি এ রেজাল্ট শুধুই পরীক্ষার রেজাল্ট নয়। যেকোনো কষ্টার্জিত ফলাফল।
আনন্দ লাগে যখন ১২ ঘণ্টা গাধা খাটুনির পর রকেটকে দেখি। নিমেষেই ভুলে যাই সারা দিনের কাজের গ্লানি। আল্লাহর শোকর আদায়ের পাশাপাশি মনটা ধাই ধাই করে নাচতে থাকে। সেই মুহূর্তে যেন অনুভব করি স্কুল ছুটির আনন্দ। অজান্তেই মন আওড়িয়ে যায়:
এখন আমার ছুটি...
গরম-গরম পাউরুটি!
বাই দ্যা ওয়ে রকেট হচ্ছে আমার টয়োটা একো। ছুটির পর ওইতো আমাকে বাড়ি পৌঁছিয়ে দেয়। তাই অতি বাধিত হয়ে ওকেই আমি রকেট ডাকি।
আমার জামাই অবশ্য আমার আনন্দিত হওয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি ভাবেন পাউরুটি পেলেই বউ অনেক খুশি।
আফসোস!
পরিশেষে...আহসান হাবীবের ‘আনন্দ’ কবিতাটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে হয়:
আনন্দ রে,
তুই আনন্দ!
কোথায় থাকিস বল?
তুই কী আমার মা?
নাকি তুই,
মায়ের ভালোবাসা।
থুক্কু...
আনন্দ রে,
তুই আনন্দ!
কোথায় থাকিস বল?
তুই কী আমার,
চাকরি?
নাকি তুই,
চাকরি শেষে বাড়ি ফেরা!
ভোররাতের প্রত্যাশা মহান রব্বুল আলামিনের কাছে...
সবার জীবনই হোক আনন্দময়।
...
সিরাজুম মনিরা: ক্যালগেরি, আলবার্টা, কানাডা।