নিউইয়র্কের গ্যালারিতে বাংলাদেশি শিল্পী রেজাউল হকের ছবি
‘লাভ ইন মাল্টিপল ফর্মস‘ শিরোনামে নিউইয়র্কের অ্যাগোরা গ্যালারিতে বিশ্বের ১২ জন শিল্পীর আঁকা ছবি নিয়ে ২১ দিনব্যাপী শিল্পপ্রদর্শনী শেষ হয়েছে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয় ১ জুলাই। ৭ জুলাই ছিল শিল্পীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক রিসেপশন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্যালারি ডিরেক্টর সাবরিনা গিলবার্ট, গ্যালারি ওনারসহ বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারী শিল্পী ও অনেক শিল্পরসিক।
প্রদর্শনীতে জার্মানি, জাপান, তাইওয়ান, আজারবাইজান, রাশিয়া, কানাডা, আমেরিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পী রেজাউল হকের শিল্পকর্মও প্রদর্শিত হচ্ছে। উদ্বোধনের পর থেকেই অনেক শিল্পরসিক ও দর্শক গ্যালারিতে ভিড় জমান। দর্শকেরা ভীষণ আগ্রহ নিয়ে ঘুরে দেখেন সমকালীন শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো। প্রদর্শনীর শুরু থেকেই শিল্পী রেজাউল হকের আঁকা শিল্পকর্মগুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা লক্ষ করা গেছে। তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী ভাবনা, স্বকীয় ও ভিন্নমাত্রার শিল্পকর্মগুলো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিদেশিদের পাশাপাশি বাঙালি কমিউনিটিও সেখানে ভিড় জমাচ্ছে।
অ্যাগোরা গ্যালারি শিল্পী রেজাউল হকের ১৬টি চিত্রকর্ম রিপ্রেজেন্টেশনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে চারটি শিল্পকর্ম এ প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে। এ বিষয়ে শিল্পী রেজাউল হক লিটন জানান, স্বকীয় কৌশলে কাগজে খুব নিয়ন্ত্রিত উপায়ে তাপসঞ্চালন করে তিনি এ শিল্পকর্ম করেছেন। পরে কোথাও কোথাও প্রয়োজনে রং ব্যবহার করেছেন। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে তিনি এ কৌশলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এ শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছিলেন।
১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত অ্যাগোরা গ্যালারি সারা বিশ্বের সমকালীন শিল্পাঙ্গনে সুপরিচিত এবং সুনামের সঙ্গে শিল্পকলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গ্যালারি ডিরেক্টর জানান, ‘এ গ্যালারি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিভাবান শিল্পীদের খুঁজে নিয়ে তাদের শিল্প বিশ্বমঞ্চে পরিচিতি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এবার বিশ্বের ১২ জন প্রতিভাবান শিল্পীর শিল্পকর্ম নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি, এর মাধ্যমে প্রতিভাবান শিল্পীরা বিশ্বব্যাপী তাদের প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে পারবে।’
শিল্পী রেজাউল হক বাংলাদেশেও শিল্পপ্রেমীদের মধ্যে পরিচিত নাম। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় প্রদর্শনী, এশিয়ান বিয়েনালসহ একক ও দলীয় অনেক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তিনি তাঁর নিজস্ব কৌশল ছাড়াও চারকোল, অ্যাক্রেলিক, জলরং, মিশ্র মাধ্যম, ড্রইং ইত্যাদি মাধ্যমে কাজ করেন। তাঁর শিল্পকর্মের বিষয় মূলত মানুষের সংগ্রাম, সমাজের অসামঞ্জস্য, মানুষের গভীর অনুভূতি, অধিকার, স্বপ্ন ইত্যাদি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর কাজের গভীর নান্দনিকতা, কৌশলের অভিনবত্ব ও সমকালীন বিষয় শিল্পপ্রেমীদের মধ্যে প্রবল কৌতূহল ও আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে।