শরণার্থী দিবসে সিইউডিএসের প্রদর্শনী বিতর্ক
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক সংগঠন চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (সিইউডিএস), জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) সহযোগিতায় একটি প্রদর্শনী বিতর্কের আয়োজন করেছিল। প্রতি মিনিটে বিশ্বে কমপক্ষে ২০ জন মানুষ যুদ্ধ, নির্যাতন বা সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে নিজ আবাসস্থল ছাড়তে বাধ্য হয়। এরাই অন্য কোনো দেশে কিংবা অন্য কোনো অঞ্চলে আত্মপ্রকাশ করে শরণার্থী হিসেবে, যাদের প্রতি সবার পক্ষ থেকে সহানুভূতি, সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিতর্ক কেবল মতামত প্রকাশের মাধ্যমই নয়, সামাজিক অসঙ্গতিগুলো সম্পর্কে আলোচনা তৈরি করেও মানুষকে সহায়তা করে।
এই প্রদর্শনী বিতর্কে, বিশ্বের জনগণ বুঝতে পারবে, শরণার্থীদেরও সুরক্ষার অধিকার আছে। এ প্রদর্শনী বিতর্ক, চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (সিইউডিএস) অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
প্রদর্শনী বিতর্কে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইউডিএসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিইউডিএসের মডারেটর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন এ বি এম আবু নোমান।
বিতর্কের সার্বিক পরিচালনায় স্পিকার হিসেবে ছিলেন সিইউডিএসের সাবেক সভাপতি কাজী জাওয়াদ হোসাইন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সিইউডিএসের গবেষণা ও উন্নয়নসহায়ক সম্পাদক আনিকা তাহসিন হক।
প্রদর্শনী বিতর্কে সরকার দলের সদস্যরা ছিলেন অর্জন ত্রিপুরা, ইভেন্ট ও লজিস্টিক সেক্রেটারি, সিইউডিএস; আলিফ হায়দার, গবেষণা ও উন্নয়ন সম্পাদক, সিইউডিএস এবং মোহাম্মদ বখতিয়ার, ডিবেট সেক্রেটারি (বাংলা), সিইউডিএস।
বিরোধী দলের সদস্যরা ছিলেন মো. হাসিব খান, যুগ্ম সম্পাদক, সিইউডিএস; জান্নাতুল নাইম, সাংগঠনিক সম্পাদক, সিইউডিএস এবং সাঈদ শাহরিয়ার রহমান, ডিবেট সেক্রেটারি ( ইংলিশ), সিইউডিএস।
বিতর্কের বিষয় ছিল, ‘This house believes that private sector should be sharing the burden to contribute to the humanitarian needs of refugees and others forcible displaced.’
প্রদর্শনী বিতর্কের শেষে বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ তাঁর বক্তব্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উত্থিত উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের শরণার্থী সমস্যার তীব্রতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের সমস্যা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কঠোর নিয়মকানুন, মুনাফা সর্বাধিকীকরণ ও ভালো পরিষেবা নিশ্চিত করার পর্যাপ্ত সুবিধা রয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের যদি বেসরকারি খাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে তাদের দেশীয় অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করে অর্থ উপার্জন এবং তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তখন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সরাসরি অর্থনৈতিক বিকাশে অবদান রাখতে পারবে, কেবল অন্য দেশের বোঝা হয়ে থাকবে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সিইউডিএস আয়োজিত প্রদর্শনী বিতর্কটি শরণার্থী সম্পর্কে সমাজে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করার পাশাপাশি শরণার্থী সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে। সিইউডিএস সব সময়ই মানবাধিকারের পক্ষে ও সামাজিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য মাধ্যম তৈরি করে এসেছে এবং আগামীতেও একইভাবে নিজেদের অবস্থান বজায় রাখায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।