ফরিদপুরে ‘খুশির ঝুড়ি’
ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন দোকানে এক অভিনব ঝুড়ির দেখা মিলছে। এর নাম ‘খুশির ঝুড়ি’। ঝুড়িতে পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, ওয়েফার, কলাসহ নানা খাদ্যসামগ্রী আছে। অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষ এ ঝুড়ি থেকে খাবার নিতে পারবেন।
ফরিদপুরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনের একটি দোকানে এমন একটি ঝুড়ির দেখা মিলল। কাছে গিয়ে দেখা গেল ঝুড়িটির সঙ্গে একটি ফেস্টুন যুক্ত করা। সেখানে লেখা ‘খুশির ঝুড়ি: অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খুশির ঝুড়ি। অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষ এই ঝুড়ি থেকে খাবার নিতে পারবেন। আপনি চাইলে এই দোকান থেকে খাবার কিনে ঝুড়িতে রাখতে পারেন।’ খুশির ঝুড়ির ভেতরে রয়েছে পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, ওয়েফার, কলাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী।
ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনের ওই দোকানের ঝুড়িটি সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় দোকানমালিক বললেন, ‘এ ঝুড়ি থেকে যেকোনো অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষ যেকোনো সময় যেকোনো খাবার নিতে পারবেন বিনা মূল্যে। আর যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি দোকান থেকে কিছু কেনার সময় ঝুড়িটিতে অসহায়দের জন্য খাবার রাখতে চান, চাইলে সেটাও করতে পারবেন। প্রতিদিন অনেকেই ঝুড়িটি দেখে নিজের ইচ্ছায় খাবার কিনে দিচ্ছেন আর অসহায় মানুষ যখন দোকানে কিছু চাইতে আসছেন, তখন ঝুড়ি থেকে খাবার দিচ্ছি।’
দোকানির সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেল, ফরিদপুরে এই খুশির ঝুড়ির উদ্যোগ নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনুপ্রয়াস।
এ সংগঠনের কর্মীরা জানান, এখন পর্যন্ত তাঁরা ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার নয়টি দোকানে নয়টি ঝুড়ির ব্যবস্থা করেছেন। ফরিদপুরের অনেক স্থানে খুশির ঝুড়ির ব্যবস্থা তাঁরা করতে চান। ফেসবুকে এবং সরাসরি অনেকেই খুশির ঝুড়িকে প্রশংসা করছেন। অনেকে আগ্রহী হয়ে ঝুড়ি ও ফেস্টুনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন আরও বেশি দোকানে লাগানোর জন্য।
এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লক্ষ্য শুধু ফরিদপুরে না, বাংলাদেশের সব জেলায় খুশির ঝুড়ির চলন শুরু হোক। অসহায়–ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য অনেক টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, ১০ থেকে ২০ টাকার পাউরুটি, কলা, বিস্কুট রাখলেও তাঁরা তাঁদের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারেন। ঝুড়িটি দোকানে লাগানোর জন্য দোকানি খুব সুন্দরভাবে তদারকি করতে পারছেন, ক্ষুধার্ত–অসহায় যাঁরা লেখা পড়তে পারেন না, তাঁরা দোকানির কাছে সাহায্য বা খাবার চাইলে দোকানি ঝুড়ি থেকে তাঁদের খাবার দিতে পারছেন।
খুশির ঝুড়ি অসহায় মানুষের মধ্যে খুশি ছড়াচ্ছে। ফরিদপুরে ভিক্ষুক, রিকশাচালকসহ, ক্ষুধার্ত প্রায় ৫০ জন মানুষ প্রতিদিন খুশির ঝুড়ি থেকে খাবার নিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করতে পারছেন।
*লেখক: মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী