স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা শক্তিশালী
মানুষের শারীরিক-মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ওষুধ। ওষুধশিল্প বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়েই একটি অন্যতম বৃহত্তম, লাভজনক এবং সম্ভাবনাময় শিল্প খাত হিসেবে সুপরিচিত। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও এখন সাধারণভাবে প্রচলিত ওষুধের পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির অ্যান্টিবায়োটিক; ইনসুলিন, হরমোন; নানা ধরনের প্রতিষেধক; অ্যান্টিক্যানসার ড্রাগ; ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, এইচআইভির ওষুধসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর, ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস’। ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের (International Pharmaceutical Federation, FIP) উদ্যোগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল সম্মেলনে ২৫ সেপ্টেম্বরকে (সংস্থাটির ১৯১২ সালের প্রতিষ্ঠা দিবস) বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী এবং ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রতিবছর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ/অনুষদ, ফার্মাসিস্টদের অঙ্গসংগঠন, ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এই দিবসটি নানা অর্থপূর্ণ কর্মকাণ্ড এবং আয়োজনের মধ্য দিয়ে যথাযথভাবে পালন করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১৩তম ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস’। প্রতিবছর এ দিবসে ভিন্ন নতুন ‘থিম’ নির্ধারিত হয়, যা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের গুরুত্ব সঠিকভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘Pharmacists strengthening health systems’ অর্থাৎ ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা’। স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক মান উন্নয়নে, উত্তম সেবা প্রদানে দক্ষ, প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্টদের সক্রিয় অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। ফার্মেসি পেশায় কর্মরতদের উৎসাহ প্রদান এবং জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা তৈরি করার উদ্দেশ্যেই মূলত বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় দিবসটি।
ফার্মাসিস্ট ও ওষুধবিদ্যা ছাড়া স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিজ্ঞান অগ্রসর হওয়া প্রায় অসম্ভব; এবং এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ ওষুধশিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ‘ফার্মাসিস্ট’। আধুনিক বিজ্ঞানের এ যুগে, ফার্মেসি (ঔষধ বিজ্ঞান, ঔষধ প্রযুক্তি, সংশ্লেষিক জৈব রসায়ন, অণুজীববিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানকে একত্রে উপস্থাপন করে) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে স্থান দখল করে নিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ থেকে যাঁরা বি ফার্ম (ব্যাচেলর অব ফার্মেসি) পাস করে থাকেন, তাঁদের বলা হয়ে থাকে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট অথবা এ-গ্রেড ফার্মাসিস্ট।
২০০৭ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৬০, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪০০–তে। এর মাঝে একটি বড় অংশ গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে কর্মরত। একসময় শোনা যেত ‘Study pharmacy, fly to America’ অর্থাৎ ‘ফার্মেসি পড়ো, আমেরিকার দিকে ওড়ো’। বর্তমানে ১৪টি সরকারি ও ২৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে মোট ৪০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর গড়ে ৫ হাজার জন ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েট স্নাতক সম্পন্ন করে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছে।
এককথায়, ঔষধ প্রস্তুত এবং প্রয়োগের বিশারদকেই ইংরেজি পরিভাষার বলা হয় ‘ফার্মাসিস্ট’ বা ‘ড্রাগ এক্সপার্ট’ বা ‘ড্রাগ কনসালট্যান্ট’। এখান থেকে পরবর্তীকালে ফার্মাসিস্ট, ফার্মাকোলজিস্ট, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, রিটেইল ফার্মাসিস্ট, হসপিটাল ফার্মাসিস্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল/প্রোডাকশন ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি শাখায় নানা কর্মের প্রসার হয়। সর্বোচ্চ সুফল অর্জনের লক্ষ্যে জ্ঞান, মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে একটি সঠিক, চাহিদাভিত্তিক মানবসম্পদ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং নিজেদের শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য অবস্থান তৈরি করতে প্রচলিত ব্যবস্থার মান উন্নয়ন, আধুনিকায়ন, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজন।
জীবন রক্ষায় ভূমিকা পালনকারী যে ওষুধ, সেই শিল্পের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে দাপটের সঙ্গে টিকে আছে, একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নিয়ে যেতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে, যার নেপথ্যে অনেকটা অবদান ফার্মাসিস্টদের। নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং পেশাগত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে ওষুধশিল্পে উৎপাদন, মান উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, মানের নিশ্চয়তা প্রদান, ভিন্ন তাপমাত্রা-আর্দ্রতায় ওষুধের স্থিতিশীলতা যাচাই, গবেষণা ও উন্নয়ন, বিপণন, উৎপাদন পরিকল্পনা, ডিসপেন্সিং, রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স, ব্যবসায় সম্প্রসারণ ও তৈরি পণ্যের রপ্তানিসহ দেশের অনেক বড় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত আছেন। এ ছাড়া তাঁরা অত্যন্ত মেধা এবং কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায়, কমিউনিটি ফার্মেসিতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন।
ফার্মাসিস্টরা এ দেশের ওষুধশিল্পের বিকাশে আমূল পরিবর্তন এনেছেন, ওষুধ মানেই যে ‘অতি উচ্চ মূল্য, অতি উচ্চ প্রযুক্তি’ একসময়ের এই ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে দিয়ে স্বল্প মূল্যে, জনসাধারণের ক্রয়সীমার মধ্যেই, গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিক্রয় সম্ভব হচ্ছে। একটি সম্পূর্ণরূপে ওষুধ আমদানিনির্ভর দেশ থেকে বর্তমানে ওষুধ রপ্তানিমুখী দেশে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশে ওষুধের মোট চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে, যে মাত্রার স্বনির্ভরতা পৃথিবীর খুব কম দেশের পক্ষেই অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। ২০২১ সালে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৫৭টি দেশে মানসম্পন্ন ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ, যার মাঝে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, মিয়ানমার, কেনিয়া, ফিলিপাইনস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য আমদানিকারক দেশ। বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে বড় ওষুধ উৎপাদন ও রপ্তানিকারক।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি করা হয় ৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এক দশকের ব্যবধানে করোনা–পরবর্তী অর্থবছর ২০২০-২১ সালে এসে সেই ওষুধ রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৪ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ কোটি ডলারে, যা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি আয়ের খাত হিসেবে চিহ্নিত। উল্লেখ্য, মহামারিকালে শুধু কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রপ্তানি থেকেই আয়ের পরিমাণ আনুমানিক ৪০০ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে সেই পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় এই ওষুধগুলো থেকে আয় এখন তুলনামূলক কমে এসেছে।
শুধু শিল্প-বাণিজ্য এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ নয়, সামাজিক এবং মানবিক দায়বদ্ধতার দিক থেকেও ফার্মাসিস্টরা এক অসামান্য ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায়, বেসরকারি হাসপাতালে, কমিউনিটি ফার্মেসিতে, শিক্ষা ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন ফার্মাসিস্টরা। শুধু ওষুধ তৈরি করে দেওয়াই নয়, ওষুধের সঠিক, প্রয়োজনীয়, যৌক্তিক, কার্যকর ও নিরাপদ উপায়ে গ্রহণের ওপর ফার্মাসিস্টদের ভূমিকায় জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সামান্য কিছু ব্যাপারে পরিবর্তন এসেছে, যেমন ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রবিহীন, অতিরিক্ত কিংবা অপ্রয়োজনীয় ওষুধ বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মডেল ফার্মেসি, যেখানে একজন রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। বর্তমানে দেশে ১৯৫টির মতো মডেল ফার্মেসিতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা কাজ করে যাচ্ছেন। মডেল ফার্মেসির আয়তন হবে ন্যূনতম ৩০০ বর্গফুট (বাংলাদেশে ১২০ বর্গফুট), উচ্চতা ৮ ফুট এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য থাকতে হবে শীতাতপব্যবস্থা। ওষুধ বিক্রয়, রোগীকে ওষুধ সেবনের সঠিক পদ্ধতি জানানো, নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান, সঠিক প্রক্রিয়ায় ওষুধ সরবরাহ এবং সংরক্ষণ, মান নিশ্চিতকরণ, নকল/ভেজাল/মেয়াদোত্তীর্ণ/অনুমোদনবিহীন ওষুধ চিহ্নিতকরণ, তথ্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ডেটাবেজ তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ, বিক্রীত ওষুধের রেজিস্টার হালনাগাদ করা ইত্যাদি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নিরাপদ ওষুধ উৎপাদন, বিতরণ ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণে ফার্মাসিস্টদের অবদান অনস্বীকার্য।
একজন দক্ষ-প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট কাজের পাশাপাশি আন্তপেশাজীবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী জনবল যেমন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানের মাঝে সমন্বয় এবং সুব্যবস্থাপনায় তৎপর। উন্নত বিশ্বে ডাক্তার নির্ভুলভাবে রোগনির্ণয় করেন আর ফার্মাসিস্টরা সঠিক ওষুধ নিরাপদভাবে প্রয়োগ করতে সহযোগিতা করেন। এর জন্য প্রয়োজন ‘হসপিটাল ফার্মেসি’, তবেই বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। একজন হসপিটাল ফার্মাসিস্ট তাঁর রোগীকে ওষুধ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যাবলি, কার্যকারিতা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, উপকারিতা-অপকারিতা, প্রস্তুত প্রণালি ইত্যাদি সম্পর্কে জানিয়ে থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশনা অনুসারে প্রতি ১ হাজার মানুষের চিকিৎসায় অন্তত একজন করে অথবা তদূর্ধ্ব সংখ্যক ফার্মাসিস্ট থাকা আবশ্যক [১: ১০০০ অনুপাতে] যা বাংলাদেশে এখনো পর্যাপ্ত নয়। দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ফার্মাসিস্টদের সংযুক্ত করা অনেকাংশেই এখন সময়ের দাবি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে সরকারি নিয়োগে অফিস বা হাসপাতালে চাকরির ক্ষেত্র, সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা, জনবল অত্যন্ত কম, যার কারণে এই খাতটি সংকুচিত অবস্থায় পড়ে আছে, ফার্মাসিস্টরা তাঁদের মেধার উপযুক্ত প্রয়োগ করতে পারছেন না, সাধারণ মানুষও তাঁদের প্রাপ্য সেবার মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
একজন ফার্মাসিস্টের পেশাকে অভিহিত করা হয়ে থাকে গ্রাহকের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং উত্তম পরামর্শদাতা হিসেবে। নিঃসন্দেহে এ কাজে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা অত্যন্ত প্রয়োজন। একজন রোগীর সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন, কাউন্সেলিং প্রদান, তাঁর ওষুধবিষয়ক যেকোনো জিজ্ঞাসা যেমন ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা, ওষুধ সেবনের নিয়মাবলি, বয়স-ওজন-অবস্থা অনুযায়ী যৌক্তিক মাত্রা নির্ধারণ, মাত্রার সমন্বয়, ওষুধের উপকারিতা-অপকারিতা-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, গর্ভকালীন বা স্তন্যদানকালীন সময়ে নিরাপদ ওষুধ সেবনসহ রোগীকে যাবতীয় নির্দেশাবলি দিয়ে থাকেন। সঠিক ওষুধের সঠিক মাত্রার ব্যবহার এই বিষয়ে সূক্ষ্ম-অতি সূক্ষ্ম ধারণা পাওয়া যায় একজন ফার্মাসিস্ট থেকে।
ফার্মাসিস্টদের অদম্য মেধা এবং যোগ্যতার এক অনন্য উচ্চতার বহিঃপ্রকাশ- ওষুধ-সংক্রান্ত ‘গবেষণা’ খাত। দেশ-বিদেশে উন্নততর গবেষণা চালিয়ে নিরাপদ, উন্নত, কার্যকরী, মানসম্মত, সহজলভ্য নতুন ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক আবিষ্কার এবং ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ পরিচালনা করার কাজে সচেষ্ট তাঁরা। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারিতে সবাই যখন লকডাউনে বন্দী, তখন ফার্মাসিস্ট, গবেষকেরা অচেনা যোদ্ধার ন্যায় নিজ জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে রাত-দিন নীরবে পরিশ্রম করেছেন, টিকা আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এর জন্য বলা হয়ে থাকে, ‘A doctor saves a patient, but a pharmacist saves the entire nation’ অর্থাৎ তার মেধা, কঠোর প্রচেষ্টার ফলে যুগান্তকারী ওষুধ কিংবা টিকা আবিষ্কারের মাধ্যমে সে গোটা জাতিকে বড় বিপর্যয় বা স্বাস্থ্যহানি থেকে রক্ষা করে।
লেখক: নাজিবাহ নাসরিন, এম ফার্ম শিক্ষার্থী, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়