ধারাবাহিকতা

মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথমার্ধের ঢিমেতালে খেলায় উত্তেজনার পারদ যখন চরমে, তখনই ছোট ভাইয়েরা পরামর্শ দিয়ে বলতে শুরু করল, তাড়াতাড়ি ব্রাজিলের পতাকাতলে চলে আসেন! শৈল্পিক ফুটবল ওরাই খেলে! আর্জেন্টিনা যদি ভিনগ্রহের ফুটবলও খেলত, তবু বলতাম না, আমাগো পতাকাতলে চলে আসেন! এটা হয় না!

কেন?

বৈচিত্র্যময়তা ও বহুত্ববাদের বহুমাত্রিক সৌন্দর্য দিয়েই পৃথিবী গড়া। ভিআর না থাকার যুগে কিংবদন্তি ম্যারাডোনার বিস্ময়কর হাতগোলকে একপক্ষ তাচ্ছিল্য করে উড়িয়ে দেয়! অপর পক্ষ ১৯৮২ সালে ব্রিটেন কর্তৃক ফকল্যান্ড যুদ্ধের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিশোধ হিসেবে দেখে। খোদ ডিয়েগো নিজেও ঐতিহাসিক ওই ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিজয়কে রিভেঞ্জ বলেছেন। ব্রিটেন থেকে ৮ হাজার মাইল দূরে ফকল্যান্ড ভৌগোলিকভাবেই আর্জেন্টিনার নিকটতম দ্বীপ। কিন্তু মেরেকেটে জেলজুলুম দিয়েই কলোনিয়াল মনস্টাররা ওই দ্বীপে আর্জেন্টাইন অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। বর্তমানে এটি যুক্তরাজ্যের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিদ্যমান।

দানবের বিরুদ্ধে মজলুমের প্রতিরোধ কিংবা প্রতিশোধ সব সময়ই সুন্দর। আমরা যারা নিপীড়িতের পক্ষে বিপ্লবের পূজারি, তাদের কাছে অতি অবশ্যই গর্বের।

নানামুখী বিতর্ক সত্ত্বেও একই বিষয় বহুভাবে ইন্টারপ্রেট করা এবং একে অপরের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাই মানবীয় গুণের অবিনাশী অনুষঙ্গ। ফিলানথ্রোপিক সমাজ গড়তে হলে এই অনুষঙ্গের নার্সিং অতীব জরুরি। আমরা যেমন সেলেসাও সাম্বা ফুটবলে মুগ্ধ হই, পেলেকে দেখে অনুপ্রাণিত হই; তেমনি কেউ না কেউ ভামোসে মুগ্ধ! কোনো মুগ্ধতারেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।

সমাজতন্ত্রের অনন্য ধারক ডিয়েগো ম্যারাডোনার যোগ্যতম উত্তরসূরিরা এগিয়ে চলুক।