ইলেকট্রিক্যাল ছাত্রের প্রেমপত্র
প্রিয়তমা,
সেদিন তোমাকে ক্যাম্পাসে প্রথম দেখেই ১০০০ ভোল্টের শক লাগে হৃদয়ে। তোমাকে দেখার পর থেকে হৃদয়ের অনুভূতির তারগুলোর মধ্যে শর্টসার্কিট হয়ে যায়। আর তোমার ভাবনা সারাটি ক্ষণ ক্রিটিক্যাল স্পিডে মনের মধ্যে বিচরণ করছে।
তোমার-আমার সম্পর্ক হবে জেনারেটরের মতো। যেখানে ভালোবাসা, ঝগড়া, মান-অভিমান নামের মনস্তাত্ত্বিক শক্তির সাহায্যে দুটি সিঙ্গেল পারসনকে সম্পর্কের জালে রূপান্তরিত করে। আমার মনের উপরিভাগে কোনো সন্দেহ নেই, কোনো হতাশার রেজিস্ট্যান্স নেই, নেই কোনো ভেজাল পদার্থ। শুধু তুমি হে তুমিই পারবে আমার মনের অন্ধকার ঘরকে এলইডি লাইটের মতো আলোয় আলোকিত করতে।
তোমাকে দেখলেই ট্রান্সফরমারের ইএমএফ সূত্রের মতো আকর্ষণ কাজ করে। কোনো বাহ্যিক সংযোগ ছাড়াই ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মতো অজানা এক ভালোবাসার চৌম্বকক্ষেত্র আমার চারপাশে বিরাজ করে। শত চেষ্টা করেও তোমার সামনে যেতে পারি না। কী করে পারব বল, সারা রাত ধরে চার্জ করা প্র্যাকটিসের ব্যাটারি তোমার সামনে গেলেই ডিসচার্জ হতে শুরু করে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমাদের সম্পর্কটা ওহমের সূত্রের মতো ব্যাস্তানুপাতিক। আবার মনে হয়, সমানুপাতিকই হবে। আচ্ছা তুমি কি বলবে, সত্যিটা কী? নাকি চিঠিটা পড়ে রাগের মাথায় ওভারলোড হয়ে ইলেকট্রিক নাইফ দিয়ে চিঠি টুকরা টুকরা করে ফেলবে?
দয়া করে এ রকম কোনো কিছুই কোরো না। যদি করো, তাহলে আমার হৃদয় তোমার ঘৃণা নামের কণার আঘাতে টুকরা টুকরা হয়ে যাবে, যা একমাত্র ভালোবাসা নামের টেপিং ছাড়া জোড়া লাগানো যাবে না। আচ্ছা, তুমি কি এখন হাসছ? জানো, তুমি যখন হাসো, তোমার হাসি অতিরিক্ত সার্জ ভোল্টেজের মতো আমার হৃদয়ের প্রতিটি কোনায় গিয়ে আঘাত করে। তুমি কি ভাবছ তাতে আমার কষ্ট হয়? নাহ, আমার কষ্ট হয় না; বরং মনের ভেতর অজানা এক পদার্থের বিস্ফোরণ ঘটে, যা নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মতো শিকল আকারে বাড়তেই থাকে।
আর ভালোবাসার খাঁটি প্রেমিকেরা কখনো কষ্ট পায় না, ভয় পায় না। তারা চলার পথের যেকোনো রেজিস্ট্যান্সকে অতিক্রম করতে পারে। আমিও পারব তোমাকে মনের কথাটি বলতে। প্রাইম মুভারের মতো বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে আমিও হাজির হবো তোমার সামনে। তখন আর কোনো ডিফলেক্টিং টর্ক আমাকে আটকাতে পারবে না।
লেখক: নাহিদ হোসাইন, কবি, গল্প লেখক, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ