চরশরত মডেল হাইস্কুলের প্রথম পুনর্মিলনীতে যা যা হলো
‘বন্ধু, কী খবর বল?’ অনেক বছর পর বাল্যকালের বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতেই এভাবে কুশল বিনিময় শুরু হয়। চলে আলাপচারিতা আর পারিবারিক গল্প। কেউ কেউ ফিরে যান বিদ্যালয়জীবনের মজার স্মৃতিকথায়। নতুন-পুরোনো শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় জমজমাট হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৬ নম্বর ইছাখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চরশরত মডেল হাইস্কুলের সবুজ মাঠ। গত রোববার (১৪ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই পুনর্মিলনী। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো পুনর্মিলনী। তাই উৎসবের মাত্রাটা ছিল একটু বেশি।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী রিইউনিয়নের আহ্বায়ক ওয়াশিম আকরাম শাকিল, যাঁর নেতৃত্ব পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। ওয়াশিম আকরাম আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সফলতার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন, সদস্য মো. আরিফসহ আরও অনেকের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতায় এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া এই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাজীব নাথ, সহকারী শিক্ষক আবদুর রব, রবিউল হোসাইনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।
অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন চরশরত মডেল হাইস্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ৬ নম্বর ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল মোস্তফা। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সফলতার জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজে উপস্থিত থেকে নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন এবং চরশরত মডের হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্য ওবায়দুল হক।
সকাল নয়টায় অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। চরশরত মডেল হাইস্কুলের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবদুল আজিজ, ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন ও বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। প্রাক্তন ও বর্তমান—সবার পদচারণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ নতুনরূপে পরিচিতি লাভ করে। এ সময় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণা, হাঁড়িভাঙা প্রতিযোগিতা, মিউজিক্যাল চেয়ার, বালিশখেলা ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের দারুণ সব পারফরম্যান্স দেখে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা মুগ্ধ হন।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক কিশোর কুমার দাস প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ঘুরে ঘুরে দেখেন আর পুরোনো স্মৃতিতে বারবার ফিরে যান। এভাবে ছাত্র–শিক্ষক তাঁদের পুরোনো স্মৃতিগুলোকে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
বিদ্যালয় থেকে বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কৃতি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুটন দাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুজিত দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সালমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আরমান, নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কানিজ ফাতেমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মিতা রানী দাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আনোয়ার হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিমাই দাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্ত দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশু দাস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশ দাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌফিকুল ইসলামকে সবর্ধনা দেওয়া হয়। সুজিত দাস, মো. সালমান, মো. আরমান, মো. আনোয়ার নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
*লেখক: মো. সালমান, চরশরত মডেল হাইস্কুলের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী
**নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]