সুপ্তির হাসি সুপ্তির রাগ

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

সকালেই মায়ের হাতে হালকা মার খেয়েছিল সুপ্তি। সারা দিন রাগ করে মায়ের সঙ্গে আর কথা বলেনি। রাগ করে ভাত খেলেও অল্প খেয়েছে। মাছ রান্না হয়েছিল আজ। সুপ্তির পছন্দের তেলাপিয়া মাছ; কিন্তু তার মনে তো রাগের আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়েছে। সে মাছ খায়নি। মা পাতে দিয়েছিল। সুপ্তি তুলে রেখেছে। অল্প একটু ভাত আর একটু ডাল দিয়ে কোনোমতে খেয়ে বলতে গেলে দৌড়ে খাওয়ার ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

সুপ্তি চলে যাওয়ার পর বাবা বললেন, আচ্ছা তোমার সমস্যা কী ইয়াসমীন?

মা ইয়াসমীন বানু বললেন, সমস্যা কী মানে?
বাবা বললেন, আমার মেয়েটাকে আবার মারছ। কেন? ও এখন বড় হচ্ছে না।
মা বললেন, বড় আর ছোট নেই। মেয়েকে মা সারা জীবন মারতে পারে। এটা মায়ের অধিকার ও কর্তব্য। মাইরের কাজ করলে কোলে নিয়ে আদর করব?
বাবা বললেন, কী করছে সুপু?

ব্লার্ব: নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

মা বললেন, কত শখ করে কাচের ফুলদানিটা কিনলাম মেলা থেকে। আজকে ওর হাত থেকে পড়ে ওটা ভেঙে গেছে। এত বড় হইছে,একটু স্থির হলো না এখনো। তিড়িংবিড়িং তিড়িংবিড়িং সারাক্ষণ।

বাবা বললেন, ইচ্ছা করে তো ভাঙেনি ইয়াসমীন। তুমি আমার মেয়েকে আর এসব ছোট কারণে কখনো মারবে না। ফুলদানি আমি তোমাকে ১০টা কিনে দেব। বাবা খেয়ে চলে এলেন। তার মাছের টুকরা তিনি খেয়েছেন। সুপ্তিরটা সুপ্তি খায়নি। তার মাছের টুকরাটা প্লেটে রয়ে গেছে। সঙ্গে মায়ের মাছের টুকরাটাও। তিনিও খাননি। মেয়ে না খেলে মায়েরও খেতে ইচ্ছা করে না।

বিকেলে আমজাদ চৌধুরী সুন্দর একটা ফুলদানি কিনে আনলেন। বাসায় এসে দেখেন, সুপ্তি ফ্লোরে বসে আছে। মা সোফায় বসে তার মাথায় তেল মেখে দিচ্ছেন। তারা খোশগল্পে মশগুল। সুপ্তি শব্দ করে হাসছে। মা নিশ্চয়ই মজার কিছু বলছে। এত হাসি সে তার বাবার সঙ্গে কখনো হাসে না।

  • ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম থেকে