‘করোনাপঞ্জি’ বই নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান

স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশনের আয়োজনে লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মীর ‘করোনাপঞ্জি’ বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান হয়ে গেল গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে
ছবি: সংগৃহীত

স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশনের আয়োজনে লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মীর ‘করোনাপঞ্জি’ বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান হয়ে গেল গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে। অনুষ্ঠান শুরু হয় করোনাকালের অভিজ্ঞতার কথা দিয়ে। মুক্ত আসরের উপদেষ্টা ফারাহ দিবা আহমেদ, সহসভাপতি আশফাকুজ্জামান, উন্নয়নকর্মী আবিদা সুলতানা ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা সহযোগী হোমায়রা আহমেদ করোনাকালের জীবনের কথা তুলে ধরেন।

‘করোনাপঞ্জি’ বইটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক মো. গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির ভয়ানক স্মৃতিতে ফারাহ জাবিন শাম্মী রোজনামচার আকারে উপস্থাপন করেছেন, একই সঙ্গে সেই সময়ের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক বিষয়গুলোকে মনের গভীর থেকে উপলব্ধির চেষ্টা করেছেন। প্রতিদিনের এসব বিবরণ শুধু তথ্যবহুলই নয়, বরং যেকোনো পাঠকের অনুভূতিকে ছুঁয়ে যাবে অতলে। এই বইয়ের কোনো কোনো ঘটনা আমাকে কাঁদিয়েছে।’

‘করোনাপঞ্জি’ লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মী বলেন, ‘করোনাকালীন সমাজে এবং সারা বিশ্বে নানা ধরনের ইস্যু তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে, যা আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেছিলাম। টানা ১ বছর ৯ মাস ১০ দিনের করোনাকালীন সময়ের কথা প্রকাশিত হয়েছে। ২০২৩ সালে স্বপ্ন ৭১ প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনার তথ্য ছাড়াও ছোট ছোট কবিতা, গল্প, স্মৃতি ও নানা ধরনের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ব্যক্তিগত ডায়েরি বই আকারে প্রকাশ করার বিষয়টা আমার কাছে অবশ্যই ভাল লাগার, আনন্দের ও দারুণ অভিজ্ঞতারও।

আমার লেখা এই বই নিয়ে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, করছে।’

এডুকেশনাল সাইকোলজি অ্যান্ড কাউন্সেলিং বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, আত্মজীবনীমূলক এই গ্রন্থ করোনাকালের সেসব দুঃসহ দিনের শুধু দলিলই নয়, এটা ভয়াবহ চাপমূলক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কীভাবে একজন ব্যক্তি ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে, তারও উদাহরণ। এই পঞ্জি লেখার মাধ্যমে লেখক যেমন নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়েছেন, বইটি পড়ে পাঠকও তাঁর স্মৃতির মধ্যে পুনরায় গাঁথুনি টানতে পারবেন। এতে পাঠকের মনেও প্রশান্তি আসবে বলা যায়।

ব্র্যাকের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর শরিফুল হাসান বলেন, ‘করোনাপঞ্জি’ বইটি একটা বড় রকমের ডকুমেন্ট হয়ে গেলে। বইটি গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন গণমাধ্যম ও সাংবাদিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরীসহ প্রমুখ।

আলোচনার পর্ব শেষে পাঠক-লেখকের প্রশ্ন–উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বইটি সংগ্রহ করার জন্য পাঠকদের আহ্বান জানিয়ে স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশনের প্রকাশক আবু সাঈদ অনুষ্ঠান শেষ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মুক্ত আসরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়শা জাহান নূপুর।

স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশনের এই আয়োজনের সঙ্গে সহ–আয়োজক হিসেবে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংগঠক ‘মুক্ত আসর’ ও বইবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘বইচারিতা’।