হাওরের পানে, হৃদয়ের টানে–২

জালে ধান শুকানোছবি: লেখকের পাঠানো

সোনাখালী থেকে আমরা গেলাম পাছআলমশ্রী গ্রামে। সেখানে মোবারকের (৪০) সঙ্গে কথা হলো। মোবারক বললেন, তিনি ইতিমধ্যেই তাঁর এক একর জমির ধান সংগ্রহ করেছেন। তাঁর এই এক একর জমি থেকে তিনি ৯২ মণ ধান পেয়েছেন। এখানে খোকনের (৪৫) সঙ্গে কথা হলো। খোকন জানালেন যে তিনি তাঁর এক একর জমি থেকে ১০০ মণ ধান পেয়েছেন। এ গ্রামেই কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিমউদ্দীনের (৭০) সঙ্গে। তিনি জানালেন, দুই একর জমি থেকে ২০০ মণ ধান পেয়েছেন। তাঁদের কথার মধ্যে অতিরঞ্জন কিছু নেই। এবার আসলে ধানের এমন বাম্পার ফলনই হয়েছে।

আমার নিজ গ্রাম বাউশার ইয়াসিন আদনান সাকিনের (২১) সঙ্গে কথা হলো। তাঁর বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। এখন সংসার সামলানোর দায়িত্ব তাঁর। তিনি এবার প্রায় সাড়ে ছয় একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। আশা করছেন, তাঁর সব জমির ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারলে প্রায় ৫০০ মণ ধান পাবেন। কথা হলো আমিনুলের (৩০) সঙ্গে। তিনি এবার ৬০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছেন। ধান পেয়েছেন ৫৫ মণ। পাশাপাশি তাঁর পানি সেচের একটা স্কিম আছে। সে তাঁর বিদ্যুৎ–চালিত পাম্পের মাধ্যমে অনেকের জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করে। বিনিময়ে তিনি টাকা পান। এবার সময়মতো তাঁর স্কিমের জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে পেরে তিনিও খুব খুশি। কথা হলো পল্লিচিকিৎসক সাইকুল ইসলামের (৩৮) সঙ্গে। তিনি এবার দুই দশমিক দু একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। এক একরের একটা খেত থেকে ১০০ মণ ধান পেয়ে ১০০০ টাকা দরে এবং ২৫ শতাংশের একটা জমি থেকে ২৫ মণ ধান পেয়ে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রিও করে দিয়েছেন। বাকি জমিগুলোতেও ভালো ধান হয়েছে।

এবার গ্রামের লোকেরা ধান শুকানোর জন্য খুব ছোট ছোট ছিদ্রবিশিষ্ট নেট ব্যবহার করছেন। সাধারণত হ্যাচারিতে মাছের ছোট পোনা সংরক্ষণের জন্য এই নেট ব্যবহৃত হয়। এই নেটে করে ধান শুকানোর সুবিধা অনেক। তাড়াহুড়োর সময় নেটের চার কোনার ধরে টান দিয়ে ধান একসঙ্গে করা যেমন সহজ, তেমনি ধানে যদি ধুলোবালি থাকে সেগুলোও পড়ে ধান একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায়। আর ধান শুকাতে ও জমা করতে লোকবলের প্রয়োজন হয় কম। আর তুলনামূলকভাবে নেটের দামও কম। নেট একটু যত্ন করে সংরক্ষণ করতে পারলে ব্যবহারও করা যাবে কয়েক বছর। শুনলাম, এই নেটের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা দুটিই বাড়ছে। ধান শুকানোর ক্ষেত্রে এই নতুন প্রযুক্তির সংযোজনটা আমার খুব ভালো লাগল। আসলে মানুষ তাঁর প্রয়োজনেই দৈনন্দিন জীবনের উপকারী জিনিসগলোকে খুঁজে নেয়।

‘নাগরিক সংবাদ’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

এখানে একটা কথা বলে রাখি। গ্রামে এখন বিনোদন বলতে বোঝায় চায়ের দোকানে বসে টেলিভিশনে সিনেমা দখা অথবা মোবাইল ফোনে সারা দিন তাকিয়ে থাকা। আমাদের গ্রামের অনেক ছেলে যারা পড়াশোনা, কৃষিকাজ, ব্যবসা, চাকরি বা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি গ্রামে বা এলাকায় চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিবছরই ঈদ উপলক্ষে যখন সবাই একত্র হয়, তখন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তারা আমাদের গ্রাম তথা এলাকাকে মাতিয়ে রাখে। এবার পবিত্র রমজানের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। একদিকে আমাদের গ্রামের বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের মধ্যে যেমন ফুটবল খেলার আয়োজন করেছে, অন্যদিকে তেমনি বাউশা, নোয়াগাঁও, পাছ আলমশ্রী, তালুক কানাই ও সোনাখালী গ্রামকে নিয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। আমাদের গ্রামের হায়দার আলী সুমন, টিপু চৌধুরী, রানা হামিদ দীপু, সাকিন, আমিনুল, রনি তালুকদার, আতিক হাসান, মাইনুল, মুজিবুর, পলাশ, আমান, সম্রাট, সুলেমান, আমান, শাহীন, অমিত, অনিক, স্বাধীন, রকি, রবিন, শুভসহ এমন অনেক খেলাপ্রিয় ছেলে আছে, যাদের খেলাধুলাসহ যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে যেকোনো সময় ডাক দেওয়ামাত্রই হাজির হয়। এমন একটা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ আমাদের গ্রামে হয়ে গেছে। আর এদের কল্যাণেই আমাদের এলাকার মতো একটা ঝগড়াপ্রবণ এলাকায় সফলভাবে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করার মতো একটা অসম্ভব কাজ সম্ভব হয়েছে। আমি আমার গ্রামের ছেলেদের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি গ্রামের সব খেলাপ্রিয় ও সংস্কৃতিমনা ছেলেদের ধন্যবাদ জানাই। আমি সুমন, টিটু, রানা, আমিনুল, সাকিনসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরে ওরা আনন্দ যেমন পেয়েছে, তেমনি আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। আশা করি, ওদের হাত ধরেই পুরো এলাকায় একটা সুন্দর ও সহনশীল পরিবেশ গড়ে উঠবে।

ধান সেদ্ধ চলছে
।ছবি: লেখকের পাঠানো

এবার বি-আর-৮৮ ( মেয়াদোত্তীর্ণ বি-আর২৮ ধানের স্থলাভিষিক্ত) ও বি-আর-২৯ জাতের ধান চাষ করে সবাই খুব লাভবান হয়েছেন। বিভিন্ন গ্রামে দেখলাম নারী-পুরুষ সবাই ফসল তোলায় ভীষণ ব্যস্ত। কেউ ধান শুকোচ্ছেন, কেউ বাতাসে ধান উড়িয়ে পরিষ্কার করছেন, কেউ ধান সেদ্ধ করছেন, কেউ ধান বস্তায় ভরছেন, কেউ খড় শুকোচ্ছেন, কেউবা ঠেলাগাড়ি বা পিকআপ দিয়ে খড় ও ধান নিয়ে যাচ্ছেন। সে এক এলাহিকাণ্ড। কারও সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। আর সুযোগ থাকবেইবা কী করে? বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতে না পারলে সংসার চলবে কী করে?

এবার একটা বিষয় লক্ষ করলাম। এলাকার অনেকেই ধানের পাশাপাশি মিষ্টিকুমড়া, ক্ষীরা ও মরিচের চাষ করেছেন। মিষ্টিকুমড়ার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু দাম কিছুটা কম থাকায় মিষ্টিকুমড়া চাষ থেকে কৃষকেরা তেমন একটা লাভবান হননি। মরিচের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। টমেটো চাষ করে অনেকেই লোকসান দিয়েছেন। সবচেয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন ক্ষীরাচাষিরা। বাউশা গ্রামের এমন কয়েকজন হলেন উত্তরপাড়ার শফিকুল, মাঝপাড়ার রাসেল, দক্ষিণপাড়ার মুজিবুর, খোকা ও নয়ন মিয়া। তাঁদের ধানি জমি খুব কম। তাঁরা প্রতিবছর ক্ষীরা চাষ করে ভালো আয় করেন। নয়ন তাঁর ১ একর ১০ শতাংশ জমিতে ক্ষীরা চাষ করে আশা করেছিলেন যে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষীরা বিক্রি করতে পারবেন। অথচ বিক্রি করেছে ১০০০০ টাকার। গত বছর মাত্র ২৫ শতাংশ জমিতে চাষ করে ক্ষীরা বিক্রি করেছিলেন ৩০০০০ টাকা। অন্যান্য বছর ক্ষীরা চাষে যাঁরা লাভের মুখ দেখতেন, এবার তাঁদের মাথায় হাত।

হাওরে দোকান
।ছবি: লেখকের পাঠানো

জোহরের নামাজ আমাদের গ্রামের মসজিদে পড়ে বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছি। সময়স্বল্পতার কারণে এরপর আর বেশি দেরি না করে নেত্রকোনার উদ্দেশে রওনা করে দিই। বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার কাছে এসেই ললিত মিয়ার মরিচখেতের দিকে চোখ গেল। ৫০ শতাংশের এই জমিতে মরিচের ফলন বরাবরের মতো এবারও ভালো হয়েছে। সুন্দর ও তরতাজা সবুজ মরিচগাছগুলোকে দেখে খুব ভালো লাগল। এই খেতটায় মরিচ, ডাঁটা ইত্যাদি চাষ করে ললিত মিয়া প্রতিবছর ভালো আয় করেন। এখান থেকে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর রাজতলা বাজার পার হয়ে রাস্তার পাশে একটা ধান মাড়ানোর মেশিনে বেশ কয়েকজনকে ধান মাড়াতে দেখলাম। আগে এই কাজটা গরু দিয়ে করতে হতো, যা ছিল অনেক সময়সাপেক্ষ। এখন ধান কাটা, ধান মাড়ানো ও ধান বাড়িতে নেওয়া ইত্যাদি সব কাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কৃষকের কষ্ট অনেকটাই কমে গেছে।

প্রতিবছরই ঈদ উপলক্ষে সবাই একত্র হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তারা আমাদের গ্রাম তথা এলাকাকে মাতিয়ে রাখে। এবার পবিত্র রমজানের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। একদিকে আমাদের গ্রামের বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের মধ্যে যেমন ফুটবল খেলার আয়োজন করেছে, অন্যদিকে তেমনি বাউশা, নোয়াগাঁও, পাছ আলমশ্রী, তালুক কানাই ও সোনাখালী গ্রামকে নিয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে।

আমরা আরও একটু এগিয়ে যাওয়ার পর রাস্তার ধারে একটা সবজিখেতে নায়েকপুর গ্রামের ছদ্দু মিয়াকে (৪৫) কাজ করতে দেখলাম। ৫০ শতাংশের জমিতে তিনি মরিচ, ডাঁটা, ঢ্যাঁড়স, পুঁইশাক ও কলমিশাকের চাষ করেছেন। ফলনও মোটামুটি ভালো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম এই সবজি বিক্রির আয় দিয়ে ভালোই চলতে পারেন। তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা রাস্তার দুই পাশের ধান আর সবজিখেত এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নানা রকম কর্মকাণ্ড দেখতে দেখতে কাইটাইল বাজার হয়ে গোগবাজারের ব্রিজে এলাম। গোগবাজার সাইডুলী নদীর তীরে অবস্থিত। সঙ্গেই বিশাল বড় হাওর থাকায় বর্ষাকালে এই জায়গাটি ছোটখাটো একটা পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়। ব্রিজে ওঠার আগেই নদীর ধারের একটি খেতে একটা চটপটি ও ফুচকার দোকান দেখলাম। চটপটিওয়ালা মো. রফিক ভান্ডারী বেশ চালু মানুষ। তাঁর বাড়ি তিয়শ্রী গ্রামে। পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৭।

হাওরে কুমড়া
ছবি: লেখকের পাঠানো

রমজান থেকে বর্ষা মৌসুম পর্যন্ত তিনি এই ব্রিজের কাছেই ভ্রাম্যমাণ দোকান চালান। আবার শীত মৌসুমে ধর্মীয় সভা, গানের অনুষ্ঠান ইত্যাদির কাছে দোকান চালান। তখন লাভও বেশি হয়। পাশাপাশি অল্প ধানি জমি ছাড়াও দুটি গরু পালন করেন। এভাবে চলে তাঁর সংসার। তাঁর মতে, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালোই আছেন। তাঁর এখানে চটপটি–ফুচকা খেয়ে আমরা গোগবাজার গেলাম। বাজারে ‘মোহনা কিচেন’ নামের একটা দোতলা রেস্তোরাঁ আছে। রেস্তোরাঁটি নদীর তীরে হওয়ায় এখানে বসাটা বর্ষাকালে বেশ উপভোগ্য হওয়ার কথা। আগেই শুনেছিলাম, এ বাজারে শর্ষে ভাঙার ঘানি আছে। একটু খুঁজেই ঘানিটা পেয়ে গেলাম। অনেক দিন পর ঘানি দেখলাম। ছোটবেলায় দেখতাম বিভিন্ন গ্রামে শর্ষে ভাঙানোর ঘানি ছিল। এখন এগুলো দেখা যায় না। বিশুদ্ধ শর্ষের তেল পাওয়াও এখন প্রায় অসম্ভব। ঘানির মালিক মানিক মিয়া এ সময় বাইরে ছিলেন। মেয়ে তাসলিমার কাছে জানতে পারলাম এখানে চার কেজি শর্ষে ভেঙে এক লিটার তেল পাওয়া যায়। আর কেউ চাইলে এখান থেকে নির্ভেজাল শর্ষের তেল ৪০০ টাকা দরে যেকোনো সময় নিতে পারেন।

গোগবাজারেই মূলত আমাদের হাওর ভ্রমণ শেষ হয়। এরপর নেত্রকোনার দিকে যাত্রা শুরু। এক শ কিলোমিটারের মতো যাওয়ার পরও সেদিন ক্লান্ত বোধ করিনি। সারা দিনের অভিজ্ঞতার আনন্দ নিয়েই ফিরছিলাম আমরা। কত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখা, কত মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়, কত মানুষের ক্লান্তহীন পরিশ্রমের সাক্ষী হওয়া! এ রকম সুযোগ তো সব সময় হয় না। দেশের অর্থনীতির যাঁরা চালিকা শক্তি, তাঁদের সান্নিধ্যে সারাটা দিন থাকতে পেরেছি, এত আমার জন্য খুব আনন্দের বিষয়। আমার সব সময় মনে হয় কৃষকেরা যখন জমিতে বীজ বোনেন, তখন শুধু ফসলের বীজ বোনেন না, স্বপ্নেরও বীজ বোনেন। তাঁদের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন, জীবনে হাসি আর আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। কিন্তু আমাদের এলাকার কৃষকদের এসব স্বপ্নের বাস্তবায়ন অনেক সময়ই অধরা থেকে যায়। আমরা বাইরে থেকে হঠাৎ একদিন হাওর দেখতে গিয়ে এর সৌন্দর্যে যেমন বিমোহিত হই কৃষকদের বাস্তবতাটা তেমন নয়, বরং অনেকটাই ভিন্ন। ফসল ফলাতে গিয়ে তাঁদের যে পরিমাণ শ্রম, ঘাম আর অর্থ ব্যয় করতে হয়,  সেই তুলনায় লাভ ততটা হয় না। অনেক কৃষক আছেন কৃষিকাজের খরচ জোগাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ফসলের একটা বড় অংশ বিক্রি করে সে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এতে তাঁর আয়ের বড় অংশই চলে যায়। আর যে বছর বন্যা, শিলাবৃষ্টি বা ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যায়, সে বছর তো তাঁদের কষ্ট আর দুর্দশার কোনো সীমাই থাকে না। আর এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি তাঁদের প্রায়ই হতে হয়। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। অনেক বছর পর এবার তাঁরা সবদিক থেকেই একটা কৃষিবান্ধব পরিবেশ পেয়েছেন। তাই সবকিছুতে না হলেও ধান চাষে বেশ লাভবান হয়েছেন।

বাউল সাধক সম্পর্কে কোনো তথ্য চোখে পড়েনি, যা দেখে কোনো পথিক বা কোনো দর্শনার্থী তাঁর সম্পর্কে জানতে পারবে
ছবি: লেখকের পাঠানো

আমাদের কৃষির উন্নয়ন একদিকে কৃষককে যেমন শক্তিশালী করে, অপর দিকে জাতীয় অর্থনীতিকেও বেগবান করে। বিশেষ করে খাদ্যনিরাপত্তা অনেকটাই নির্ভর করে হাওরাঞ্চলের ধান ফসলের ওপর। তাই হাওরের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে সবার আগে। হাওরের যোগাযোগব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, মৎস্য ও পশুসম্পদের উন্নয়নে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে কৃষকদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এগুলো করতে হবে অর্থনীতিকে বেগবান করার স্বার্থেই। কৃষকেরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আর পদ্ধতি নিয়ে একদিন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর কৃষকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কৃষিকাজ করবেন, এমন সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় রইলাম। শেষ...

  • লেখক: মো. মোতাহার হোসেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক, মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা।