প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম (শিক্ষার্থীরা যাঁকে সংক্ষেপে এসএমআই স্যার বলে ডাকেন) স্যার ১০ অক্টোবর হাজারো শিক্ষার্থীসহ পুরো দেশবাসীকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় চলে গেলেন। স্যারের অন্তহীন যাত্রায় আমরা যেমন বাকরুদ্ধ ও মর্মাহত, ঠিক তেমনি শরতের আকাশটাও স্যারের অনন্তযাত্রায় থেমে থেমে বৃষ্টির মাধ্যমে কেঁদেছে। বৃষ্টির কান্না আর শিক্ষার্থীদের অশ্রু সব মিলে একাকার হয়ে গেছে কলাভবন ও শহীদ মিনার এলাকাসহ পুরোটা ক্যাম্পাস। সত্যিকার অর্থে স্যারের মৃত্যু নিয়ে কিছু লিখব—এমনটা ভাবতেই ভীষণ খারাপ লাগছে, চোখের দুই কোণে পানি জমছে, হৃৎস্পন্দন দ্রুত বাড়ছে, লিখতে গেলে হাত কাঁপছে।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশে মন থেকে শ্রদ্ধা করার মতো যে গুটি ক’জন ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের নাম সর্বাগ্রেই চলে আসে। শিক্ষক হিসেবে তাঁর ক্লাসের গণ্ডি শুধু চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না বরং বিভিন্ন সাক্ষাৎকার, রাজনৈতিক আলোচনা, গোলটেবিল বৈঠক, সমাবর্তন বক্তব্য, টকশো, বিতর্ক, বক্তৃতাসহ সর্বত্রই ছিল স্যারের শিক্ষকতার ব্যাপ্তি।
নটর ডেমে পড়ার সময় ভাইয়াদের কাছে ডিইউডিএসের মডারেটর হিসেবে মনজুরুল স্যারের বিষয়ে অনেক গল্প শুনেছি। জ্ঞান অন্বেষণ, মেধার বিস্তার ও পরমতসহিষ্ণুতা ধারক হিসেবে পরিচিত বিতর্ককে তিনি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন। তিনি সব সময় আমাদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যুক্ত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিতেন।
নটর ডেমে পড়ার সময় ভাইয়াদের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির তৎকালীন মডারেটর হিসেবে মনজুরুল স্যারের বিষয়ে অনেক গল্প শুনেছি। জ্ঞান অন্বেষণ, মেধার বিস্তার ও পরমতসহিষ্ণুতার ধারক হিসেবে পরিচিত বিতর্ককে তিনি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন। তিনি সব সময় আমাদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যুক্ত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিতেন। উল্লেখ্য, মনজুরুল স্যার মডারেটর হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়টিকে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (ডিইউডিএস) জন্য একটি স্বর্ণযুগ বলা যায় এবং তাঁর সময়কালে বাংলাদেশে ইংরেজি বিতর্ক চর্চা বেশ সম্প্রসারিত হয়েছিল।
ব্যতিক্রমী ও অতুলনীয় শিক্ষক হিসেবে এসএমআই স্যার ছিলেন অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান, মুক্ত চিন্তার ধারক ও আধুনিক ভাবনার এক দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব। বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে অন্য ভাষার সাহিত্যের মিল-অমিল, বিভিন্ন সাহিত্য ধারা, ঔপনিবেশিক পরবর্তী সাহিত্য, আধুনিক ও উত্তরাধুনিক সাহিত্য কীভাবে বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মনস্তত্ত্বকে প্রভাবিত করে, সে বিষয়ের বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর এসএমআই স্যার ক্লাসে বিস্তারিত আলোচনা করতেন। স্যারের প্রতিটি ক্লাস মানেই আমাদের অন্তর্দৃষ্টি প্রসারিত করার একটা উত্তম ক্ষেত্র, যেটা অন্যান্য শিক্ষকের ক্লাসে নিশ্চিতভাবেই অনুপস্থিত ছিল। এসএমআই স্যারের ক্লাস সর্বদাই দ্বিমুখী ছিল, যেখানে আমরা স্যারের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারতাম এবং স্যার আমাদের ভিন্ন মতকে পরিকল্পিতভাবে উৎসাহিত করতেন। স্যারের পেডাগজি বা শিক্ষাদানের পদ্ধতি ও কৌশল ছিল বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে আধুনিক ও চমকপ্রদ, যা একেক দিন একেক কৌশলের মাধ্যমে শুরু হতো। প্রতিটি বিষয়ই উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতেন বলে স্যারের ক্লাসের বোধগম্যতা সবচেয়ে বেশি ছিল। এদিকে স্যারের শারীরিক ভাষা, অপলক চাহনি ও সর্বোপরি অপূর্ব বলার ভঙ্গির মাধ্যমে সমকালীন অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতির ধারা এবং বাস্তবতার সঙ্গে সাহিত্য কীভাবে এগিয়ে যায়, সে বিষয়গুলো নানান কায়দায় স্যার ক্লাসে শেয়ার করতেন, যা আমাদের পরবর্তী জীবনে বেশ কাজে দিয়েছে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের প্রতিটি কথা, বক্তব্য বা লেখায় রসবোধের প্রাধান্য ছিল চোখে পড়ার মতো, যা সমকালীন কোনো সাহিত্যিকের লেখায় তেমন একটা দেখা যায় না। অনেকের মতে, স্যারের বক্তব্য, লেখা বা কথায় হাস্যরসাত্মক যে উপাদান বিদ্যমান, সেগুলোতে মঞ্জু স্যারের নানা প্রখ্যাত রম্যরচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রভাব সুস্পষ্ট। স্যারের সাহিত্যকর্মসহ সব ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যঙ্গাত্মক উপমা, প্রতীক ও রূপকের ব্যাপক ব্যবহার বাংলা সাহিত্যকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।
এদিকে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের অন্যতম গুণ ছিল তাঁর জাদুকরি যোগাযোগদক্ষতা, যেটার মাধ্যমে চুম্বকের মতো অন্যদের কাছে টেনে আনতে পারতেন, প্রভাবিত করতে পারতেন। জাতীয় জাদুঘর, এশিয়াটিক সোসাইটি, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), টিআইবিসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসকারি সংস্থা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে তিনি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বহুমাত্রিক অবদান রেখেছেন। তা ছাড়া অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগসহ বাংলাদেশের প্রায় সবক’টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নে এসএমআই স্যার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।
আমরা বিশ্বাস করি—দৈহিকভাবে এসএমআই স্যার আমাদের সঙ্গে না থাকলেও; আমাদের মনের গহিনে, আমাদের চেতনায়, আমাদের মননে, আমাদের বিশ্বাসে স্যারের সরব উপস্থিতি থাকবে চিরদিন অমলিন।
বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার একাধারে প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক, চিত্রকলা সমালোচক, কলাম লেখক, গল্পকার, সাহিত্য সমালোচক, সমকালীন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ছিলেন। দৃশ্যকলার সৌন্দর্য, আবেগ, অনুভূতি, সংবেদনশীলতা ও শৈল্পিক মূল্যের সূক্ষ্ম মূল্যায়নের ওপর সমকালীন বাংলা সাহিত্যে এসএমআই স্যারের ‘নন্দনতত্ত্ব’ নামের বইটি বাস্তবিক অর্থেই অদ্বিতীয়। শিল্পকলা ও চিত্রকলার শৈল্পিক মান নিয়ে এসএমআই স্যারের বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও মতামত সৌন্দর্যতত্ত্বের ওপর স্যারের অসাধারণ মেধা ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর বহন করে। তা ছাড়া এসএমআই স্যারের ‘বাংলাদেশ আর্ট: কালেকশন অব কনটেম্পোরারি পেইন্টিংস’ বইটি একটি চিত্র সংকলন, যেটা বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রকরদের শিল্পকর্ম বোঝার জন্য একটি মূল উৎস বই হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত। অন্যদিকে বিশ্বকবির চিত্রকলা ও চিত্রভাবনা নিয়ে মনজুরুল স্যারের ‘রবীন্দ্রনাথের জ্যামিতি ও অন্যান্য শিল্পপ্রসঙ্গ’ একটি শিল্পবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলন, যেখানে শিল্পীসত্তার সৃষ্টিশীলতা ও শিল্পের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এদিকে সদা হাস্যময়, পরোপকারী ও সরলতার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে মনজুরুল স্যার ছিলেন ঈর্ষণীয়ভাবে জনপ্রিয়। শুধু কি একাডেমিক বিষয়, অনেকের ব্যক্তিগত বিষয় বা চাকরির জন্যও স্যার নির্বিচারে রেফারেন্স দিতেন। দেশব্যাপী পরিচিতির কারণে ইংরেজি বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই দীর্ঘ দিন ধরেই স্যারের রেফারেন্স ব্যবহার করে আসছেন। ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্য অনেক বিভাগের অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের উচ্চশিক্ষা, এমফিল বা পিএইচডি করার জন্য স্যারের কাছে থেকে সুপারিশপত্র নিয়েছেন। তা ছাড়া সর্বদাই শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক হিসেবে কোনো শিক্ষার্থী দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হলে সবার আগে স্যার বলে দিতেন কী করতে হবে, কোথা যেতে হবে এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে নিজে ফোন করে দিতেন। এমনকি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে শিক্ষাজীবন সমাপ্তের পথে চলে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থীকে এসএমআই স্যার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়ে নতুন জীবন উপহার দিয়ে গেছেন।
এ ছাড়া সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার অসাধারণ একজন ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন। আমাদের ক্লাসেও অনেক সময় ক্রিকেট বা ফুটবলের সর্বশেষ খেলার আপডেট জানতে চাইতেন। খুবই আশ্চর্যের বিষয় হলো—চিকিৎসাধীন থাকার সময় শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতির পর যখন স্যারের ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়েছিল, তখন আমাদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত হাসপাতালে যেতেন তাঁদের মধ্যে অন্যপ্রকাশের মাজহার ভাইসহ অনেককেই ক্রিকেট খেলার কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন। ক্রিকেট নিয়ে স্যারের মধ্যে যে কী পরিমাণ উত্তেজনা কাজ করত, সেটা এই ঘটানাই প্রমাণ করে।
বস্তুত, এসএমআই স্যার সব সময় তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্ন দেখতে আর তা বাস্তবায়নের জন্য বেশি বেশি বই পড়তে উৎসাহিত করতেন। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি দেশ–বিদেশের বিখ্যাত লেখকদের গল্প, উপন্যাস পড়তে উৎসাহ দিতেন। বর্তমানে চলমান শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নিয়ে স্যার বেশ চিন্তিত ছিলেন। আমি শিক্ষাসচিবের পিএসের দায়িত্বে থাকাকালীন এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে বেশ কথা হতো। এ ছাড়া আদর্শ মানুষ তৈরিকে প্রাধান্য না দিয়ে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল কেন্দ্রীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার ওপর স্যারের ভীষণ ক্ষোভ ছিল বলে তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমরা ভালো মানের পরীক্ষার্থী তৈরিতে যতটা উদ্যোগী, শিক্ষার্থী তৈরিতে ততটা অমনোযোগী।’ উল্লেখ্য, যে বিষয় নিয়ে কেউ সহজে কথা বলতে সাহস পেতেন না; মনজুরুল স্যার সেসব বিষয়ের ওপর অকপটে সাহসিকতার সঙ্গে কথা বলতেন। প্রতিকূল পরিবেশে এসএমআই স্যার কঠিন বিষয় অত্যন্ত সহজ ভাষায় বলে ফেলতে পারতেন এবং তিনি যেটা বিশ্বাস করতেন সেটা প্রাণ খুলে ও দৃঢ়তার সঙ্গে প্রকাশ করতে কখনো ভয় পেতেন না।
গত কয়েক বছরে কবি–সাহিত্যিকদের মৃত্যুর মিছিলের তালিকায় নতুন সংযোজন হলেন আমৃত্যু নির্লোভ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার। এমন প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের মৃত্যুতে দেশ ক্রমশ জ্ঞানীশূন্য হওয়ার পথে। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের চির প্রস্থানের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে একটি অপূরণীয় ক্ষতি আর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা সহজে পূরণীয় নয়।
আজন্ম স্বপ্নচারী ও সদা হাস্যোজ্জ্বল এসএমআই স্যারকে কেউ কখনো বিমর্ষ আর হতাশ হতে দেখেছেন বলে শুনিনি। তারুণ্যের উদ্যম ও শক্তিতে বিশ্বাসী, প্রাণবন্ত ও কর্মচঞ্চল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে গত মাসে শেষবার কথা বলার সময় নানান কারণে স্যারকে বেশ উদ্বিগ্ন ও বিষণ্ণ মনে হয়েছে। স্যারের অসুস্থতা আর মৃত্যুর খবরটি পত্র-পত্রিকা, টিভি চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি ১১ অক্টোবর বিরূপ আবহাওয়াতেও অপরাজেয় বাংলা, কলা ভবনসহ শহীদ মিনারে অসংখ্য লোকের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের সমাবেশই প্রমাণ সর্বস্তরের মানুষ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে কত আপন ভাবতেন, কতটা ভালোবাসতেন, কতটা শ্রদ্ধা করতেন।
এদিকে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির পর থেকে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে আমার অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে, রয়েছে অপরিসীম কৃতজ্ঞতাবোধ আর পরিশোধের অযোগ্য অনেক ঋণ। মাস্টার্স পরীক্ষার পর পরই স্যারের সুপারিশের কারণে আমি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার পদে চাকরি পেয়েছিলাম। তা ছাড়া বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর স্যারের দেওয়া উপদেশগুলো আমার পরবর্তী কর্মজীবনের বেশ কাজে দিয়েছে। আমার মতো দেশব্যাপী অসংখ্য শিক্ষার্থীকে স্যার অভিভাবকের মতো নানাভাবে উপকার করে গেছেন। পাশাপাশি স্যারের প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণায়, উৎসাহ ও সহায়তায় ছাত্রাবস্থায় আমার প্রথম নিবন্ধটি একটি জাতীয় দৈনিকে তিনি ছাপানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, যা আমি কখনোই ভুলব না।
আমরা বিশ্বাস করি, দৈহিকভাবে এসএমআই স্যার আমাদের সঙ্গে না থাকলেও; আমাদের মনের গহিনে, আমাদের চেতনায়, আমাদের মননে, আমাদের বিশ্বাসে স্যারের সরব উপস্থিতি থাকবে চিরদিন অমলিন। স্যারের আদর্শ ছড়িয়ে যাক সবার মধ্যে...বিনম্র শ্রদ্ধা আমাদের শ্রদ্ধাস্পদেষু সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের প্রতি।
লেখক: শেখ হাফিজুর রহমান সজল, উপসচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং প্রাক্তন ছাত্র, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]