আব্বার সঙ্গে শেষ স্মৃতিটুকু
প্রতিনিয়ত আব্বার স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়। প্রতিদিনেই ভাবি আব্বাকে নিয়ে কিছু লিখতে বসব। কিন্তু লিখতে পারি না। আব্বার সহস্র স্মৃতি শুধু মনে পড়ে। চারপাশটা যেন আব্বার শব্দে জেগে ওঠে। ভাবতে খুবেই কষ্ট হয়, আব্বা নেই। আমাদের ছায়া নেই। আমাদের শক্তি নেই। ২ নভেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় আমাদের কেবলই স্মৃতি হয়ে চলে গেলেন চিরতরে। সেই দিনের কথা হয়তো কোনো দিন ভুলে যাওয়ার নয়।
সকালবেলা প্রায় অফিসে আসার আগে কথা হতো। সেই দিন কথা হয়েছিল। ভাবতে পারিনি আব্বার সঙ্গে এই শেষ কথা হবে। রাত আটটার পর খবর এল, আব্বার অনেক অসুস্থ। খবর শুনে বুকটা ধড়পড় করতে লাগে। কীভাবে জানি খুব দ্রুত হাসপাতালের পৌছে গেলাম। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে আছি।
আব্বাকে একটা হুইলচেয়ার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। আব্বার পুরো শরীর ঘামে শীতল হয়ে গেছে। জ্বলজ্বল করছে তাঁর চেহেরা। আব্বাকে তখনো বললাম, ‘আব্বার চিন্তা করিস না। আল্লাহ রহমতে ভালো হয়ে যাব।’ আব্বা যে ভয়ে নীরব হয়ে গেছেন। কথা একদম বের হচ্ছে না। কিছুই বলল না। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখল। ডাক্তার বলল, দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করাতে হবে। নার্স এসে নিয়ে গেলেন।
আইসিইউতে পাশে দাঁড়িয়ে আছি। চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়ছে। কল্পনা শুধু ভাসতে থাকে আব্বাকে নিয়ে।
প্রায় আধা ঘণ্টা পর একজন চিকিৎসক এসে বলেন, ‘রোগীর কে আছেন? ভেতরে আসুন।’ ভেতরের প্রবেশ করার পর আর ধরে রাখতে পারলাম না। একজন নার্স বললেন, ওনার মুখে পানি দিতে পারেন। মুখে শেষবারের মতো পানি দিলাম, আর কান্না থামছে না। এর মধ্যে বুঝে গেছি আব্বা আর নেই। আব্বা সব মায়া ছেড়ে চলে গেছেন অনন্তযাত্রায়। রেখে গেছেন অজস্র স্মৃতি। আব্বাকে ছাড়া দেখতে দেখতে সাত মাস পেরিয়ে গেল। নিশ্চয়ই আব্বা ওপারে ভালো আছেন...