এমবিএসটিইউ ক্লিন-এর সঙ্গে একদিন

এমবিএসটিইউ ক্লিন (MBSTU Clean) একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এটি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি ব্যতিক্রমী সংগঠন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করে থাকে। এই স্বপ্নবান শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখেন একটা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। ইতিমধ্যে তাঁরা ফরমালি তাঁদের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার সাতটি ইভেন্ট সফলভাবে শেষ করেছেন। করোনাকালে সংগঠনের যাত্রা শুরু হলেও মাঝখানে কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবার সংগঠনটি পুরো উদ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ফেসবুক পেজে ইভেন্ট তৈরি করে তারা এক একটি পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম পরিচালনা করে। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতি ইভেন্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নতুন শিক্ষার্থীরা এসব ইভেন্টে যোগ দেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্যাম্পাস পরিষ্কারের কাজে হাত বাড়ান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তাঁদের এই কাজটা আমার মনকে খুব নাড়া দিয়ে গেছে। তাই মনে মনে খুব ইচ্ছে ছিল কবে এই সুন্দর মনের মানুষগুলোর সঙ্গে দেখা করব! অবশেষে সেই সুযোগও চলে এল। ব্যক্তিগত কাজে গত ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমার যাওয়ার একটা শিডিউল ছিল। বৃহস্পতিবার হঠাৎ সন্ধ্যার পরেই জানতে পারলাম এই শুক্রবারই তাদের একটা ইভেন্ট রয়েছে। যাহোক, শুক্রবার ঢাকা থেকে ৬টা ৩০ মিনিটে বাস ধরে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে ৯টা ৩০ বেজে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নতুন একাডেমিক ভবন ১২ তলার সামনে গিয়ে এমবিএসটিইউ ক্লিনের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। তারা সবাই হাতে গ্লাভস পরে ক্যাম্পাস পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার সপ্তম ইভেন্টের কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে পরিচিত হলাম এবং কিছুক্ষণ কথা বললাম। এই সুন্দর মনের মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে অসম্ভব একটা ভালো লাগা কাজ করল।

এমবিএসটিইউ ক্লিনের সদস্যরা বলছিলেন, তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির কাজ করছেন। এ কারণে শিগগিরই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ডাস্টবিন বসানোর পরিকল্পনা আছে তাঁদের। তা ছাড়া তাঁরা সচেতনতামূলক পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণের কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ক্যাম্পাসের সবাই যদি সচেতন হয়ে যান, তবে তাঁদের দৃঢ়বিশ্বাস এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস একদিন অবশ্যই পরিপাটি, সুন্দর একটা ক্যাম্পাসে পরিণত হবে। যেখানে যত্রতত্র দেখা যাবে না ময়লার স্তূপ। কেউ ডাস্টবিন ছাড়া অন্য কোথাও ময়লা ফেলবে না।

এমবিএসটিইউ ক্লিনের সব সদস্যের জন্য মন থেকে শুভকামনা রইল। তাঁদের মনের আশা অবশ্যই একদিন পূর্ণতা পাবে। তবে শুধু মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় না, দেশের অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি এমন সংগঠন থাকত, তবে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় একদিন অবশ্যই হয়ে উঠবে পরিপাটি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আরও দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস।

* লেখক: প্রীতম মন্ডল, ব্যাংক কর্মকর্তা, সাবেক শিক্ষার্থী, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়