ভাবো
ভাবো, একদিন পৃথিবীতে সব যুদ্ধ থেমে যায়। রাষ্ট্রনায়কেরা আর কোনোদিন ক্ষমতার লোভে মানুষের রক্ত ঝরায় না। কাঁটাতারের বেড়াগুলো গলে যায় সূর্যের তাপে, আর মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটে শান্তির পথে।
ভাবো, ফিলিস্তিনে শান্তি ছেয়ে যায়। মানুষগুলোর অসহায়ত্ব ফুরিয়ে যায়। কাঁদতে থাকা শিশুদের চোখে ফিরে আসে নিষ্পাপ হাসি। কোনো গৃহহীন শিশু ঠান্ডায় জমে না, মাটিতে প্রাণ দেয় না। আকাশে বোমা নয়, শুধুই রঙিন ঘুড়ি উড়ে। কারো মগজ ছিন্নভিন্ন হয় না।
ভাবো, ধর্ম আর রাজনীতি কারও জীবন নষ্ট করে না, কাউকে বিভক্ত করে না বরং একত্র করে। মানুষ কেবল মানুষ হিসেবে বাঁচে সমতার, ভালোবাসার আর মানবিকতার পৃথিবীতে। কেউ আর অন্নের অভাবে মরতে বসে না। ধর্ম কেবলই ব্যক্তিগত, আর তাতে কেউ কারও রক্ত ঝরায় না।
ভাবো, কোনো শিশুকে কখনো রাস্তায় জন্মাতে হয় না। তাদের চোখে থাকে স্বপ্ন, হাতে থাকে রঙিন খেলনা। ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমানোর বদলে তারা মায়ের হাত ধরে রাতে গল্প শুনে।
ভাবো, আমাদের দেশে শিক্ষা একমাত্র সম্পদ। ধনীরা শাসক নয়, বরং জ্ঞানীরা। কারও গলা চেপে ধরা হয় না কোনো মতবাদের জন্য।
ভাবো, আমি আর তুমি একদিন আমাদের সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে একসঙ্গে বসি। কোনো কথা অব্যক্ত থাকে না, কোনো অনুভূতি গোপনে বয়ে বেড়াতে হয় না। আমরা দুজনেই জানি, সবকিছু ঠিকঠাক।
ভাবো আরও যা চাও, ভাবো একআকাশ পরিমাণ বা তারও বেশি! আর ভাবো এসব সত্যি ,ভাবো এমনই একটি পৃথিবী। আমি রোজই ভাবি। কারণ, আমি জানি ভাবনার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই, আমাদের ভাবনায় অন্যের নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই ভাবলে সমস্যা কী? ভাবলে না হয় ভাবনায়, আঁকলে না হয় এমনই দৃশ্য মনের আঙিনায়!
কিন্তু বাস্তবে?
যুদ্ধ থামে না, ফিলিস্তিন নির্যাতিত হতেই থাকে, ক্ষুধার্ত পেটে স্বপ্ন মরে যায় রাস্তায়, মানুষ ধর্ম ব্যবসাই করে, অমানবিকই রয়, রোজই কণ্ঠনালি চেপে ধরা হয়, আর তুমি-তুমি কখনোই আমার কথা শোনার সময় পাও না, সব অব্যক্তই রয়। কারণ, এসব শুধুই ভাবনা! হয়তো একদিন সত্যি হবে।
লেখক: রেশমা রিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক, পঞ্চগড় বন্ধুসভা