ঝিমু

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

বাচ্চা ঝিমুর সঙ্গে খেলতে গিয়ে বাবা এমন ঝামেলায় পড়বেন, তা জানলে খেলতে আসতেন না! এখন ঝিমুর থাবায় পড়ছেন বাবা। সে নন–স্টপ কেঁদেই যাচ্ছে। মেলা থেকে মাটির একটা ঘোড়া কিনেছিলেন ঝিমুর জন্য। হাত থেকে পড়ে ঘোড়াটা ভেঙে গেল। বাবা যতই বলেন, আরেকটা কিনে আনবেন, ঝিমু ততই জোরে কাঁদে। নতুন আরেকটা নয়, সে যেটা ভেঙে গেছে, সেটাই চায়। সুপার গ্লু দিয়ে মাটির ঘোড়া লাগানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলেন বাবা। যতক্ষণ সুপার গ্লু দিয়ে চেষ্টা করলেন, ঝিমু ততক্ষণ চুপচাপ থাকল। যখন দেখল, ভাঙা ঘোড়া জোড়া লাগেনি, তখন আবার কান্না জুড়ে দিল। কোনোভাবেই মাটির খেলনা ঘোড়া জোড়া লাগাতে পারলেন না বাবা। মেয়ের কান্নায় তার মাথা ধরার উপক্রম।

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই–মেইল: [email protected]

মা এলেন, সব দেখলেন, কিছু না বলে চলে গেলেন। মাটির খেলনা ঘোড়া ভেঙে যাওয়ায় মেয়ের সঙ্গে তিনিও আহত হইছেন! চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ।

মেয়ের কান্না থামাতে না পেরে বাবা নিজেই ঘোড়া সাজলেন, তারপর ঝিমুকে পিঠে চড়ালেন। জীবন্ত ঘোড়া পেয়ে ঝিমু খেলনা ঘোড়ার কথা ভুলে গেল। কান্নার বদলে এখন হাসির কলকলানি। বাবা দেখলেন, বাচ্চাদের খুশি করা তেমন কঠিন নয়। এরপর তিনি কারণে–অকারণে ঘোড়া সাজেন, ঝিমু হয়ে যায় ঘোড়ার মাহুত। ঘোড়া হতে পেরে বাবা খুশি হলেন। সমস্যা হচ্ছে বাবা ঘরে না থাকলে ঝিমু মায়ের পিঠে চড়ার জন্য কান্না করে! পিঠে চড়ার সুখস্মৃতিগুলো দ্রুতই ঝাপসা হয়ে যায় মানবশিশুর জীবন থেকে।