চিঠি: নিষ্প্রভ সন্ধ্যা
প্রিয় অর্ক,
তোমায় নিয়ে এক প্রহর সুখে কাটলে, আমার হাজার প্রহর কাটে বিষণ্নতায়। কারণ, এই শহরে─‘কিছু প্রেম মরে যায়, কিছু মরে গিয়েও বেঁচে থাকে; ডরায় না ইতি কেউ, ডরায় বিষণ্নতাকে!’
আমাদের দেখা হয় না বহুদিন, মনে হয় অনন্তকাল। তবু মনে মনে ভাবি,─আমাদের দেখা হবে আবার রোজ-কাল।
আচ্ছা, তুমি কি এখনো ওই শিমুলতলার মোড়ে আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকো? আমি আসব বলে! রোজ নিয়ম করে আমার জন্য গান গাও, ছবি আঁকো, নাকি ছবি আঁকার রংতুলিটাই হারিয়ে গেছে?
নাকি আজও অভিমান আর অভিযোগের একঘর কবিতা লিখে রাখো। আজও কি বেলি ফুলের মালা দেখলে আমাকে মনে করো—একটা বেলি ফুলের মালার জন্য তোমার সঙ্গে রোজ কত অভিমান পুষতাম।
মন খারাপে তোমার কথা মনে পড়লেই বারান্দায় এসে আকাশ দেখতাম। কেন জানি, আজকের আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেছে। শহরজুড়ে ঘোর অমানিশা। দেখে মনে হয়, দুপুরবেলা সন্ধ্যা নেমেছে আমার শহরজুড়ে। বৃষ্টি আসার আগের মুহূর্ত সুন্দর হয় জানি! কিন্তু এই সুন্দর সময়টা তোমার-আমার জীবনে যদি স্থায়ী হয়ে থেকে যেত, আমি-তুমি আমরা─আমাদের হয়ে অনন্তকাল ভালোবেসে যেতাম।
এই নিয়ে তোমাকে আমার লেখা কত নম্বর চিঠি জানা নেই। তবে আজও কোনো উত্তর আসেনি। আকাশের সব মেঘ সরে গিয়ে আরও একবার সূর্যি মামা উঁকি দিল। তুমি কি আমার একটা চিঠিও পড়নি। বেলা তো শেষের দিকে, কবে আসবে ফিরে এই বনলতার দিকে!
তুমি ফিরবে কোনো একদিন, হয়তো নীলিমায় হারানো কোনো এক নিষ্প্রভ বেলায়। তুমি ফিরবে বহুদিন পর, নয়তো হাজার বছর পর জ্যোৎস্নামাখা সন্ধ্যায়; নিজেই চিঠির উত্তর হয়ে।
ইতি
তোমার অপেক্ষায়─
তোমার বনলতা
*লেখক: শিক্ষার্থী, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ