একদিকে সেমিস্টার ফাইনালের চাপ, অন্যদিকে বিশ্বকাপ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) তর্ক-বিতর্ক আর জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে চলছে বিশ্বকাপ উদ্যাপন। টংদোকানের চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হল, বন্ধুবান্ধবের আড্ডা—এমনকি ক্লাসের ফাঁকেও চলছে প্রিয় দলের ভালো–মন্দের বাড়াবাড়ি। গতবারের তুলনায় এবারের বিশ্বকাপ একটু ভিন্ন। কারণ, দিনে–রাতে দুই সময় খেলা দেখার সুযোগ হচ্ছে। তাই বিশ্বকাপ ঘিরে প্রিয় দলের সমর্থকদের উত্তেজনা আর উন্মাদনা যেন একটু বেশিই।
ক্যাম্পাসে বিকেল হলেই দলের সমর্থকেরা জার্সি গায়ে পতাকা হাতে আর বাঁশি বাজিয়ে জানান দেন উন্মাদনার কথা। গত বৃহস্পতিবার ব্রাজিল সমর্থকেরা ৭০ ফুট পতাকা নিয়ে মিছিল করেছিলেন গোটা ক্যাম্পাসে। প্রিয় দল জিতে গেলে রাতেও চলে স্লোগানে আনন্দমিছিল। ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা কে বেশি সেরা? নেইমার, মেসির মধ্যে কে বেশি শ্রেষ্ঠ, কার কত অর্জন? ব্রাজিল সমর্থকেরা বলেন, মিশন হেক্সা এবার সফল হবে। অন্যদিকে ভ্যামোস আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা, ‘ভাই, যা-ই বলেন, বিশ্বকাপ আমাদের।’
ক্যাম্পাসের হল, রাস্তাঘাট বিভিন্ন জায়গায় শোভা পেয়েছে যাঁর যাঁর পছন্দের সব পতাকা। কমতি নেই প্রিয় দলের সমর্থক কমিটি করতে আর প্রচার–প্রচারণায়। তবে খেলার সময় হলেই দল সমর্থকের ঊর্ধ্বে সিনিয়র–জুনিয়র ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে মিলে খেলা দেখা, তর্ক-বিতর্ক, বিশ্লেষণ–নির্বিশেষে আমাদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়। শেষ পর্যন্ত যেন সুশৃঙ্খলভাবে খেলাগুলো উপভোগ করতে পারি, সেটাই একমাত্র চাওয়া।
ক্যাম্পাসে খেলা দেখার জন্য দুটি জায়ান্ট স্ক্রিন স্পনসর করেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। কেন্দ্রীয় ক্রিকেট মাঠে স্ক্রিন স্থাপন করায় সেখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের মেলবন্ধনে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বকাপের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ ফয়সাল (আর্জেন্টিনা সমর্থক) বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এটাই আমার প্রথম বিশ্বকাপ দেখা। কিন্তু বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল চলার কারণে না পারছি খেলা দেখে প্রিয় দলকে সমর্থন করতে, না পারছি সিজিপিএ–এর চিন্তায় পড়া বাদ দিয়ে খেলা দেখতে।
তবে ক্যাম্পাস জীবনে প্রথম বিশ্বকাপ হওয়ায় সব মিলিয়ে দারুণ এক অভিজ্ঞতা।’
লেখক: নাজিম হোসেন, শিক্ষার্থী, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া