তিন তরুণীর নেতৃত্বে সরস্বতীপূজা
আজকের সকালটা অন্য রকম। অন্যান্য দিনের তুলনায় শীতের তীব্রতা কম। শিশির ভেঙে পূর্ব দিগন্তে উঠেছে টকটকে লাল সূর্য। গাছের পাতায় পাতায় লেগে আছে শিশিরের জল। গাছে ফুটে আছে তরতাজা ফুল। শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি শুরু হয়ে গেছে। বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে ধরণিতে বরণ করে নিতে এ যেন প্রকৃতির মায়াময় আয়োজন। বাড়িতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে পূজার প্রস্তুতি। বিদ্যা, জ্ঞান ও শিল্পকলার দেবী সরস্বতী। অভ্র, আবির, আমের মুকুল, যবের শিষ, দোয়াত–কলমসহযোগে দেবী সরস্বতীর পূজার রীতি।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার ডাকবাংলো–সংলগ্ন সৌহার্দ্যপাড়ার পায়ে হাঁটা রাস্তার ওপর সুদৃশ্য কাপড়ের প্যান্ডেলের ভেতর বানানো হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। সৌহার্দ্যপাড়ার বিদ্যার্থীদের আয়োজনে চার বছর ধরে সাড়ম্বরে সরস্বতীপূজার আয়োজন হয়ে আসছে। পূজার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকে একটি নতুন উদ্যোগ। ২০২৩ সালে এ উদ্যোগের আওতায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে খাতা, কলম, পেনসিল ও রাবার বিতরণ করা হয়। ২০২৪ সালে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছিল।
সৌহার্দ্যপাড়ার সরস্বতীপূজার এ আয়োজনে বিগত বছরে নেতৃত্বে ছিলেন ছেলেরা। কিন্তু পড়ালেখা ও ব্যক্তিগত কাজে আগের আয়োজকদের কেউ এ বছর না থাকায় পূজা হবে কি হবে না, এমন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সব অনিশ্চয়তা দূর করে পূজার আয়োজনের নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন সৌমিতা, শ্রাবণী ও বনানী। তাঁরা তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়পর্যায়ের শিক্ষার্থী। স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছেন।
‘প্রতিবছর পূজা হয়। আমরা এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চেয়েছি,’ বলেন সৌমিতা। শ্রাবণীর কণ্ঠেও ছিল এক অভিব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘সবাই একসঙ্গে পূজায় অঞ্জলি দেওয়ার আনন্দ অন্য রকম। আমরা এ আনন্দ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করতে চাইনি। তা ছাড়া বয়োজ্যেষ্ঠরাও আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। আয়োজন করতে সহযোগিতা করেছেন।’ উপস্থিত ভক্তমণ্ডলী পূজার সার্বিক আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।