মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিংয়ে কর্মরতদের স্থায়ীকরণ বন্ধ হোক
আমরা একটি সংকটকাল অতিবাহিত করছি। ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পদত্যাগের পর থেকে দেশে নানা ক্ষেত্রে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চলমান অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা বেকারেরা প্রচণ্ড হতাশার মধ্যে আছি। দীর্ঘদিন ধরে কোনো নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। বড় উল্লেখযোগ্য কোনো নিয়োগ সার্কুলারও নেই। কার্যত সব দপ্তরে নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থির হয়ে আছে। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দপ্তরে মাস্টাররোল, আউটসোর্সিং ও বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মরতদের গণহারে রাজস্বে স্থায়ী করা হচ্ছে, যা আমাদের বেকারদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এভাবে গণহারে তাদের স্থায়ী করে সব পদ পূরণ করলে যারা একটি চাকরির জন্য বছরের পর বছর রাত-দিন একাকার করে পড়ার টেবিলে বসে আছে, তাদের কী হবে? এভাবে গণহারে খালি পদগুলো পূরণ করলে ভবিষ্যতে কোনো নিয়োগ সার্কুলার আসার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। এমনকি চলমান নিয়োগগুলোও গতি হারাবে।
অভিযোগ রয়েছে, এ মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক বা আউটসোর্সিংয়ে নিযুক্ত কর্মীরা সিংহভাগ নিয়োগ পেয়েছে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে মামা-খালুর তদবির ও স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক পরিচয় এবং ঘুষের বিনিময়ে।
একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, বৈষম্যহীন ও বেকারবান্ধব নিয়োগের মাধ্যমে বেকারত্ব লাঘবের জন্যই ছাত্র ও চাকরিপ্রত্যাশীরা এই কোটা আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু কোটা আন্দোলনের সেই স্পিরিটের বিপরীতে গিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী কর্মকর্তা প্রকৃত মেধাবীদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের চাকরিতে স্থায়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক ও বৈষম্যমূলক।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যাশা থাকবে প্রকৃত মেধাবী-চাকরিপ্রত্যাশীদের বঞ্চিত করে এভাবে গণহারে মাস্টাররোল, আউটসোর্সিং ও বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক কর্মরতদের রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণ বন্ধ করা হবে। অধিকন্তু স্বাভাবিক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে স্থির অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে অনতিবিলম্বে নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রক্রিয়া চলমান রাখবে।
লেখক: মো. নজরুল ইসলাম, চাকরিপ্রত্যাশী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]