মাঠকর্মীরা যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ম্যান অব দ্য ম্যাচ
ম্যান অব দ্য ম্যাচ পাচ্ছেন গ্রাউন্ডসম্যান। তা–ও আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে। বিশ্বাস হয় না, তা–ই না? কোনো ক্রিকেটার না হয়েও ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়ার ঘটনা কিন্তু সত্যিই আছে।
অদ্ভুত এই ঘটনাই কিন্তু ঘটেছে ২০০০ সালে। নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা খেলছিল একটা টেস্ট। জোহানেসবার্গে সে টেস্টের প্রথম চার দিনের মাত্র একটা দিনই খেলা হতে পেরেছিল, তিন দিনই ভেস্তে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। খেলা হয়েছে টেস্টের যে দ্বিতীয় দিনে, সেদিন নিউজিল্যান্ড ২০০ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮ রানে থেমে যাওয়া তাদের ইনিংস আবার শুরু করতে পেরেছিল একেবারে পঞ্চম দিনে গিয়ে। সেদিন তারা শুধু ব্যাটিংটাই করেছে, ৩ উইকেটে ২৭১ রান হয়েছে তাদের, ব্যস। খেলার ফলে তাতে কোনোও প্রভাব আসেনি। ড্র হওয়া ম্যাচে অতটুকুই খেলা হতে পেরেছিল জোহানেসবার্গের মাঠকর্মীদের কল্যাণে। ম্যাচ শেষে প্রধান গ্রাউন্ডসম্যান ক্রিস স্কট ও তাঁর সহযোগীদেরই ঘোষণা করা হয় ম্যাচসেরা। তা দীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে মাঠকর্মীদের উল্লেখযোগ্য অবদান তো কম থাকার কথা না, তাই বলে এভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পেয়ে যাবেন!
মোহাম্মদ সিরাজ এশিয়া কাপের ফাইনালে তাঁর ম্যান অব দ্য ম্যাচের পাওয়া ক্যাশ পুরস্কার পাঁচ হাজার ইউএস ডলার দিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার মাঠকর্মীদের। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর রোহিত শর্মাও তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। এসিসি ও শ্রীলঙ্কা বোর্ডের তরফ থেকেও কলম্বো ও ক্যান্ডির কিউরেটর, গ্রাউন্ডসম্যানরা পেয়েছেন ৫০ হাজার ইউএস ডলার। অর্থকড়ি উপহার দেওয়ার ঘটনা খুঁজলে পাওয়া যাবে আরও। এই তো সাকিব আল হাসানই এ বছর চট্টগ্রামে এক ম্যাচ শেষে তাঁর ম্যাচসেরার পুরস্কারের যে টাকা, তা চট্টগ্রামের মাঠকর্মীদের উপহার দিয়েছিলেন। উপহার ঠিক আছে। কিন্তু মাঠকর্মীই একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ, ব্যাপারটা অন্য রকম না!
সে যা–ই হোক, ওই অদ্ভুত ঘটনাটাই কিন্তু চমকপ্রদ এক ইতিহাস হয়ে গেছে। এখনো ওই ম্যাচের স্কোরকার্ডে লেখা আছে—ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ক্রিস স্কট ও তাঁর স্টাফ।
লেখক: শিক্ষার্থী