ঐতিহ্যবাহী সরকারি বাঙলা কলেজের জন্মদিন

১৯৬৪ সালে বাঙলা কলেজ মিরপুরে স্থানান্তরিত হয়।
ছবি: সংগৃহীত

শুভ জন্মদিন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি বাঙলা কলেজ (জিবিসি)। ১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর কলেজটির যাত্রা শুরু হয়। আজ ৫৯তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বাহক এই প্রতিষ্ঠান। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে একমাত্র বাংলা ভাষায় পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে, যা বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ভাষা আন্দোলনের একজন ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ আবুল কাশেম ১৯৬২ সালে বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে বাঙলা কলেজ মিরপুরে স্থানান্তরিত হয়। এর আগে প্রতিষ্ঠাকালীন বছরে এর ক্লাস হতো নবকুমার ইনস্টিটিউটে রাতের শিফটে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ-দেশীয় দোসররা বাঙলা কলেজকে একটি বধ্যভূমি হিসেবে ব্যবহার করেছিল।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর অবাঙালি বিহারিরা বাঙলা কলেজ দখল করে নেয়। দীর্ঘ নয় মাস অবরুদ্ধ ছিল কলেজটি, কলেজের সাইনবোর্ড নামিয়ে এ সময় ‘উর্দু কলেজ’ সাইনবোর্ড লাগানো হয়।

১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর কলেজটি প্রতিষ্ঠা হয়, আজ ৫৯তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।
ছবি: সংগৃহীত

ঐতিহাসিক এই বিদ্যাপীঠে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন এবং প্রতিবছর ডিগ্রি অর্জন করে দেশে উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এ ছাড়া বর্তমানে উন্নতমানের শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে দেশপ্রেম, নৈতিক মূল্যবোধ এবং স্বপ্ন বিনির্মাণের পথ দেখাচ্ছে।

শুধু শিক্ষা ক্ষেত্র নয়, বাংলাদেশ নামের জাতিরাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে অনস্বীকার্য অবদান। জাতির সংকট ও দুর্দিনে প্রতিষ্ঠানটির মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বারবার। এ ছাড়া নানা সৃষ্টি ও উদ্ভাবনে এবং সংগীত, নাটক, ক্রীড়া, আবৃত্তি, বিতর্কচর্চাসহ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে প্রতিষ্ঠানটি অসামান্য অবদান রেখে চলেছে।

পরিশেষে, সরকারি বাঙলা কলেজের জন্মদিন উপলক্ষে সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ এই শুভক্ষণে স্রষ্টার নিকট একটাই আর্তি, তিনি যেন করোনা মহামারি কাটিয়ে আবারও সুস্থ ও সুন্দর সকাল যেন ফিরিয়ে দেয়।

  • লেখক: তায়েব হোসেন, বাংলা বিভাগ (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), সরকারি বাঙলা কলেজ