অবসরতা যেন অলসতায় পরিণতি না হয়

প্রতীকী ছবি

সারা পৃথিবীতে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। অন্যান্য সচেতন রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেও এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই কর্মবিরতি গণসচেতনতার জন্য অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এ বিরতির দীর্ঘ সময়টা আমরা শুয়ে-বসেও পার করতে পারি, আবার ভালো কোনো কাজেও ব্যয় করতে পারি। সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বাড়িতে বসেই এ সময়ে আমরা নানা পুণ্যের কাজও করতে পারি প্রতিনিয়ত। এ জন্য প্রয়োজন সময়ের মূল্য সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা।

স্কুলে ‘সময়ের মূল্য’ নিয়ে রচনা সবাই লিখলেও বাস্তবে কিন্তু সময়কে আমরা খুব কমই মূল্যায়ন করি। শুয়ে-বসে, টিভি, সিনেমা, ফেসবুক, ইউটিউব, গেমস, চায়ের দোকান ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় হারিয়ে যায় আমাদের জীবনের বড় একটি অংশ। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এটা নিয়ে আমাদের যেমন নেই কোনো আফসোস বা অনুশোচনা, তেমনি নেই কোনো পদক্ষেপ ও সচেতনতা।

বর্তমানের এই অবসর সময়ে অনেক শিক্ষার্থীই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগছে। স্বপ্ন পূরণের পথে উদ্যম হারিয়ে থমকে উঠছে। কারণ অবসর সময়টা কাজের চেয়ে অলসতা আর ভুল পথেই বেশি ব্যয় হয়। তবে কেউ যদি এই অবসর সময়কে কাজে লাগায়, সে জীবনে অনেক কিছুই অর্জন করতে পারবে। কারণ যারা জীবনে বড় কিছু হয়েছে, তারা জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এ অবসর সময়কে অবশ্যই কাজে লাগিয়েছে। কথা হলো, কজন আর তা কাজে লাগায়!

চরম বাস্তবতা হলো, আমরা অবসরকে অলসতায় পরিণত করি। অলসতা মানে কর্মবিমুখতা, উদ্যমহীনতা, আলসেমি। আর এই অলসতাই নিজের ও সমাজের অবক্ষয় ডেকে আনে। মোট কথা, অলসতা একটি জাতির উন্নতির পথে হুমকিস্বরূপ।
অতএব, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক যদি এ বিষয়ে পূর্ণ সচেতন হন যে তাঁর সন্তান ঠিকমতো পড়াশোনা করছে, না অবসর সময়ে অলসতায় গা ভাসিয়ে বিপথগামী হচ্ছে!
শিক্ষকেরাও যদি শিক্ষার্থীদের মাঝেমধ্যে একটু খোঁজখবর নেন, তাহলে আশা করা যায় আমাদের শিক্ষার্থীরা অলসতা নামের এই বিপজ্জনক পথ থেকে বেঁচে থাকতে সক্ষম হবে এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তেও সক্ষম হবে।

*লেখক: শিক্ষার্থী, মারহালাতুত তাকমিল (মাস্টার্স ডিগ্রি), দারুস-সুন্নাহ মাদ্রাসা টাঙ্গাইল। [email protected]