সাদা মেঘের দল নেমেছে জমিনে
শরৎ মানেই নীল আকাশ, তুলোর মতো সাদা মেঘ আর কাশফুলের শুভ্রতা। প্রকৃতির এই সহজ-সরল, অথচ মোহনীয় রূপ যেন নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দেয় ব্যস্ততা আর ক্লান্তিতে ঘেরা মানুষের হৃদয়ে। তেমনি দক্ষিণবঙ্গের মায়াবী নদী কীর্তনখোলার তীর ঘেঁষে অবস্থিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও এখন শরতের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যে অমলিন। চোখজুড়ানো লাল ইটের দালানগুলোর প্রান্তে প্রান্তে সাদা কাশফুল বাতাসে দোল খেলার দৃশ্যে মনে হবে, মেঘের দল নেমে এসেছে ৫৩ একরের জমিনে।
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
শুভ্র কাশফুলের বিন্যাস, গোধূলির সূর্যরশ্মির খেলা আর আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের দৃশ্য যে কাউকেই কিছুটা সময় স্তব্ধ করে দেয়। নিজের চিন্তাচেতনাকে ছেড়ে কিছুটা সময় প্রকৃতির কাছে সঁপে দিতে করে উৎসাহিত। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় মানুষ ও দূর থেকে আগত দর্শনার্থীরাও এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। কেউ সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করেন, আবার কেউ নিঃশব্দেই কাশফুলের ছায়ায় হারিয়ে যান।
ক্যাম্পাসের শরতের এই সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তরা নূর বলেন, ‘শরৎকাল বাংলাদেশের প্রকৃতিতে শুভ্র-নীল নির্মলতা নিয়ে আসে, যেখানে আকাশ হয় স্বচ্ছ নীল এবং মাঠঘাট শুভ্র কাশফুলে সেজে ওঠে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ একরের ক্যাম্পাস শরতের এ সৌন্দর্যে এক ভিন্ন রূপে সেজে ওঠে। লাল ইটের স্থাপত্যে গড়া এ ক্যাম্পাস নীল আকাশ, সাদা মেঘের ভেলা এবং কাশফুলের শুভ্রতার রঙে রঙিন হয়ে ওঠে, যা এর সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশের বিস্তীর্ণ মাঠ শরৎ এলেই এ ফুলে ছেয়ে যায়। সকালের শিশির ভেজা কিংবা বিকেলের সোনালি আলোয় দুলতে থাকা এ কাশবন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মানুষের মনকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করে।’
একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, ‘শেষ বিকেলের রোদে সাদা কাশফুল যেন আলতো করে বিদায় জানায় স্মৃতিকে। এই ফুল কেবল সৌন্দর্যের বার্তা বয়ে আনে না, শান্তির প্রতীক হিসেবেও স্থায়ী হয় তরুণ মনে। ঢেউয়ের মতো ভেসে আসে নীরবতার সুর। প্রকৃতির এই নিখাদ সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
শরৎ কেটে গেলে হয়তো আবার নতুন ঋতু আসবে, কিন্তু এই মুহূর্তগুলো বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের সেই অম্লান সৌন্দর্য হয়ে থেকে যাবে স্মৃতি হয়ে, ছবি হয়ে, হাওয়ার মতো চিরন্তন স্পন্দনে।
লেখক: এনামুল হোসেন রিকু, শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়