রঙিন আয়োজনের গল্প

তখন রাত ৯টা ৩০ মিনিট। বাস থেকে নেমেই সোজা চলে গেলাম ক্যাম্পাসে। উত্তর-পূর্বের এক কোনায় অবস্থিত গবিসাস কার্যালয় তখনো সরগরম। জনাবিশেক শিক্ষার্থী সাজসজ্জার কাজ করছে। পরদিন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। গবিসাস দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রাচীন সাংবাদিক সংগঠন।

আর ৩০ মিনিট পর কাজ শেষে সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করলাম। রাতে ঘুমাতে প্রায় তিনটা বেজে গেল। তবে পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালেই ঘুম ভেঙে গেল। দ্রুতই ক্যাম্পাসে চলে গেলাম।

আগের রাতের ঘর্মাক্ত ছেলেগুলো তখন বাহারি সাজে হাজির। ক্যাম্পাসে দারুণ উৎসবমুখর পরিবেশ। একে একে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হতে থাকেন সাবেক গবিসাস নেতৃবৃন্দ। সঠিক সময়ে হাজির হন রঙিন দিনের প্রধান অতিথি ঢাকা–২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ।

বেলা ১১টায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে সমবেত সবাই গবিসাস কার্যালয়ের পাশে হাজির হন। মিডিয়া চত্বরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। একই সঙ্গে ফিতা কেটে ফিচার প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়। এতে ক্যাম্পাসে কর্মরত কলম–সৈনিকদের বিগত এক বছরের লেখা স্থান পায়। আমন্ত্রিত অতিথিরা ঘুরে ঘুরে এসব লেখা দেখেন।

এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। এতে সংবাদ ও সাংবাদিকতা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সাংবাদিকতার সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান। বক্তারা গবিসাসের ১১ বছরের অগ্রযাত্রার প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে সামনেও অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। সভার শেষ পর্যায়ে গবিসাসের ২০২৪ সালের বর্ষপঞ্জিকা উন্মোচন করা হয়।

দুপুরে আমন্ত্রিত অতিথি ও গবিসাস নেতারা উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে মধ্যাহ্নভোজ শেষ করেন। এরপর গবিসাস কার্যালয়ে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত অ্যাজেন্ডা শেষে সংগঠনের সাবেক-বর্তমান সদস্যরা বিভিন্ন আলাপচারিতায় মত্ত হন। নবীন-প্রবীণ মিলনমেলায় উঠে আসে নানা স্মৃতি।

দুপুর থেকেই মিডিয়া চত্বরে নিয়মিত বিরতিতে গান পরিবেশন করছিল গণ বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিক কমিউনিটি (জিবিএমসি)। সন্ধ্যায় এতে যুক্ত হয় গবিসাসের জনাপঞ্চাশেক মানুষ। সমবেত কণ্ঠে সুরের মূর্ছনায় সবাই এক বেলা অন্য জগতে হারিয়ে যায়! রাত আটটায় সব উপস্থিতির মিলিত অংশগ্রহণে একটি ‘অফিশিয়াল স্থিরচিত্র’ আয়োজনের মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

লেখক: অনীক আহমেদ, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়