ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে বিপ্লবের সুর
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এখন যেন বিপ্লবের রংতুলিতে সজ্জিত। ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে ফুটে উঠেছে রংবেরঙের গ্রাফিতি ও বিল্পবী স্লোগানের চিত্র। প্রতিটি রং, প্রতিটি রেখা, প্রতিটি গ্রাফিতি বলছে নতুন এক স্বাধীনতার কথা, এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের কথা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এসব গ্রাফিতি ও বিপ্লবী কথাগুলো লিখেছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা আশা করছেন, এসব গ্রাফিতি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং একটি নতুন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, টিএসসিসি, প্রধান ফটক, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে আবাসিক হলগুলো—সবখানেই শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার ছাপ। আলপনা, গ্রাফিতি আর বিপ্লবী স্লোগানে সব মিলে ১৭৫ একরের ক্যাম্পাসকে করেছে এক অনন্য সুন্দর। এ গ্রাফিতি শুধু শিল্পকর্ম নয়, এগুলো হলো ত্যাগ, তিতীক্ষা ও অবিচল সংগ্রামের চিত্র।
দেয়ালে দেয়ালে লেখা ‘অপরাজনীতি রুখে দাও’, ‘পিন্ডির গোলামীর জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব মানি না মানব না’, ‘ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার নই, এসো দিনবদলের যোদ্ধা হই’, ‘বুলেট দিয়ে বিপ্লব থামে না’, ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে, মনে হয় আমিই সাঈদ’—এসব স্লোগানই বলে দিচ্ছে নতুন প্রজন্মের অদম্য চেতনার কথা। গ্রাফিতিগুলোয় অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বাক্স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবির কথাও উঠে এসেছে।
শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, এ বাংলাদেশ এখন সবার। কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই নেই এ দেশে। ছাত্রসমাজ আজ একতাবদ্ধ হয়েছে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবে থাকা দেশটাকে নতুনভাবে সংস্কার করতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ছাত্র-জনতাকে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের গ্রাফিতি ও স্লোগানগুলোও সেই বার্তা দিচ্ছে। স্বেচ্ছায় নিজস্ব অর্থায়নে ও কিছু ফান্ডিংয়ে শিক্ষার্থীরা এসব এঁকেছেন বলে জানিয়েছেন।
*লেখক: মুতাছিম বিল্লাহ রিয়াদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
**নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]