সিনেমা নিয়ে হইচই
চারদিকে সিনেমা—হইহই কাণ্ড রইরই ব্যাপার! আলোচনা হচ্ছে, হচ্ছে সমালোচনাও! যদিওবা সমালোচনা হয়, তবে বুঝতে হবে তাঁরা নিশ্চয়ই কাজ করছেন। কাজ করছেন বলেই মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে! ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমা নিয়ে উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি চরমে। সিনেমা বেশি দেখা হয়েছে সে জন্য নয়। বেশি দেখার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে ‘পরাণ’ আর ‘হাওয়া’। বাংলা সিনেমার পালে যেন নতুন হাওয়া এই সিনেমা দুটি।
আসলে ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমার বাজেট ১০০ কোটি টাকা ছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহের জাল আগে থেকে বোনা ছিল। এখন পরিচালক সেই সন্দেহের আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন, তিনি জানান যে বাজেট নাকি চার কোটি টাকা মাত্র। এখন আসলে কার কথা সত্য বলে ধরে নেব? পরিচালকের নাকি প্রযোজক তথা নায়কের, নাকি কোনোটাই নয়।
একটা দিন চিন্তা করে দেখা যায় যে সিনেমার কাটতি বাড়ানোর জন্য কেউ ১০০ কোটি টাকা বাজেট বলতেই পারেন, কারণ, তিনি তো দিনের আলোতে সেই বাজেটের হিসাব আমাদের দেখাননি। আর পরিচালকের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব তো না–ও হতে পারে। পরাণ আর হাওয়ার মাঝে ‘দিন দ্য ডে’ হাওয়া হয়ে যাচ্ছিল বলে আবার যে এটাকে আলোচনায় আনার কৌশল নয়, তা কে বলবে?
সিনেমা নিয়ে মিশা সওদাগরের বক্তব্যও এই সিনেমা নিয়ে আলোচনা বাড়িয়েছে। তিনি সব সময় অনন্ত জলিলের সিনেমায় অভিনয় করেন, তিনিই অনন্ত জলিলকে নিয়ে মন্তব্য করছেন। কেমন একটা ব্যাপার না? সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলার মতো অবস্থা। তবু সিনেমা চলুক, মানুষ হলে যাক।
আরেক প্যাঁচ লেগেছে হাওয়া সিনেমা নিয়ে। সিনেমায় শালিক আটকে রাখার জন্য ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। যেখানে মানুষের দাম হয় না লাখ টাকাও কিংবা টেনেটুনে কোটি, সেখানে শালিকের দাম ২০ কোটি টাকা! তা–ও আবার সিনেমায় বলে দেওয়া আছে যে সেটাকে গ্রাফিকস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিম্ভুতকিমাকার।
পরাণ সিনেমা এবারের ঈদের সবচেয়ে সফল সিনেমা। এটা নাকি আবার বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত-মিন্নির কাহিনি নিয়ে বানানো। এমনটাই দাবি সবার। তাঁদের পরিবার আবার এর মামলা জন্য করতে চায়।
প্যাঁচ মাহিয়া মাহির ‘আশীর্বাদ’ সিনেমা নিয়েও। নায়িকা ও প্রযোজক মিলে একে অপরকে দোষ দেওয়ার দারুণ খেলায় মত্ত হয়েছিলেন তাঁরা। এখন আবার বোন হয়ে গেছেন, মিলে গেছেন খুব ভালো কথা। মাঝখান দিয়ে সিনেমাটার প্রচার হয়ে গেল। ফ্রিতে সবাই নিউজ করে দিল। মানুষ তো এসবই খায়!
তবুও দিনশেষে সিনেমা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটা সুখের খবর। তবে এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না, সেটা সিনেমার জন্য খুবই দুঃখজনক। একটা শিল্পকে কখনোই গলা টিপে ধরা যায় না। শিল্প শিল্পের গতিতে চলবে। প্রতিবাদ করবে, নিয়ম–অনিয়ম নিয়ে কথা বলবে, মিছিল করবে, শিল্পকে শিল্পের মতো চলতে দেওয়াই শ্রেয়!