ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের স্নাতক সমাপন উৎসব
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
শীতের সকাল। মৃদু ঠান্ডা, একটু কুয়াশাও। পূর্ব আকাশে সূর্য উদয় করে মুখ তুলতেই ছড়িয়ে পড়ছে সোনালি আলো, তখন ঝলমলে হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। এমন এক সকালেই তাড়াহুড়া করে সকালের বাসে ছুটে এলেন শিক্ষার্থীরা—আজ তাঁদের স্নাতক জীবনের শেষ দিন। তাই মনটা একটু ভারী, আবার উৎসবও ভরপুর। বলছিলাম কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের মাঝখানে সবুজে মোড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের অনার্স জীবনের শেষ দিনের কথা।
গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর ২০২৫) সকালে শুরু হয় এই সমাপন উৎসব। সকাল ৯টা থেকেই বিভাগজুড়ে জমে ওঠে উৎসবের আমেজ। সকাল ১০টার দিকে বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ছয় পাউন্ডের কেক কেটে শুরু হয় সমাপন উৎসবের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। ক্লাসরুম সাজানো হয়েছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভিন্ন ধারণা ও থিম নিয়ে—দেয়ালে ছিল ফটোফ্রেম, থিম্যাটিক সাজসজ্জা, রঙিন ব্যানার আর স্মৃতিচিহ্নে পরিপূর্ণ একটি নস্টালজিক পরিবেশ।
কেক কাটার পর শিক্ষার্থীরা বর্ণিল র্যালি নিয়ে বের হয় ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান স্পটে। অনুষদ ভবন, ডায়না চত্বর, প্রশাসন ভবন, মেইন গেট, আবার অনুষদে ফিরে র্যালিটি শেষ হয়। এটিকে কেন্দ্র করে চারপাশ ভরে ওঠে আনন্দ, ছবি তোলা, উল্লাস-উচ্ছ্বাসে। র্যালি শেষে হয় ফটোসেশন। বন্ধুরা, ব্যাচমেটরা, শিক্ষকেরা—সবাই যেন শেষ মুহূর্তের স্মৃতি যতটা সম্ভব ধরে রাখতে ব্যস্ত।
র্যালির পর ছিল খাবারের আয়োজন। মধ্যাহ্নভোজ আর ছোট্ট বিরতির পর বিকেলে জমে ওঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্ফুরণ-৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন নাচ, গান, কবিতা, অভিনয়সহ নানা পরিবেশনায়।
সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট—চার বছরের পথচলার স্বীকৃতি, ভালোবাসা আর প্রত্যয়ের প্রতীক। এরপর ব্যাচের সবার অংশগ্রহণে গ্রুপ ফটোসেশন ও স্মৃতি সংরক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। ক্যামেরায় সংরক্ষিত হতে থাকে সব অনুভূতি।
বিকেল ৪টার দিকে সমাপ্ত হয় অনুষ্ঠানের প্রায় সব আনুষ্ঠানিকতা। সারা দিনের উৎসবমুখর, আবেগঘন মুহূর্তগুলো যেন মনের ভেতর তীব্রভাবে নাড়া দিয়ে যায়। শেষবারের মতো বন্ধুরা বলে ওঠে—‘সব স্মৃতি যেন একে একে ভেসে উঠছে।’
দিনটি ছিল শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়; যেন পুরো চার বছর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আবেগ, অর্জন, বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার এক মহা-সমাপন। একটি স্মৃতিময় দিন—চিরদিনের জন্য বুকে গেঁথে রাখার মতো।
*লেখক: রানা আহম্মেদ অভি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়