এ আমার প্রিয় ইডেন ক্যাম্পাস
এখানে ভোর হয় শিশির পতনের পিনপতন নীরবতা নিয়ে।
এখানে সূর্য ওঠে আগামীর, এখানে সূর্য ওঠে সম্ভাবনার, এখানে সূর্য ওঠে আনন্দ-উল্লাসের, এখানে সূর্য ওঠে দিগ্বিজয়ীর।
ক্যাম্পাস মানেই আরেকটা ভালোবাসার জায়গা, যেখানে বন্ধুদের সঙ্গে গানে, গল্পে, আড্ডায় মেতে ওঠা নিত্যদিনের কাজ। সবুজ ঘাসের গালিচায় মোড়ানো মুখরিত চারপাশ, সেখানে বসে একসঙ্গে বন্ধুরা মিলে চা–শিঙাড়া খাওয়া আর খুনসুটিতে মেতে ওঠা।
শ্রাবণের সকাল। সাদা-নীল আকাশে জ্বলজ্বল করছে মিষ্টি রোদের হাসি। সে হাসি ছড়িয়ে পড়ে কচি ঘাসের বুকে, গাছের পাতায়, এমনকি তরুণীদের আড্ডায়ও!
দেশে নারীপ্রগতির ধারাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বয়ে নিয়ে চলা এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাসি অবশ্য রোদ বা বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকে না। প্রিয় ক্যাম্পাস প্রতিদিনই আমাদের মুখে হাসি আর স্বপ্ন বুনে যায়।
খেলাধুলার জন্যও ক্যাম্পাসটি একটি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা হাজারো তরুণীর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আশার আলো ও অনুপ্রেরণা জোগায়। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন। যেমন হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, ক্যারম, রাগবি—কী খেলেন না ইডেনের মেয়েরা! দৌড়ঝাঁপ, সাইক্লিং—কোনো কিছুতেই তাঁরা পিছিয়ে নেই। রয়েছে বিশাল একটি খেলার মাঠ! সবুজ গাছগাছালি, একটি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ, যা ইডেনের তরুণীদের একটি অন্যতম ভালো লাগার জায়গা।
রয়েছে সুন্দর একটি পুকুর, ইডেনের তরুণীদের জন্য আরেকটি বিশেষ ভালো লাগার স্থান। পুকুরের পাড়ে বসে বা দাঁড়িয়ে সর্বদা নানা রঙের পোশাকে ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকেন তরুণীরা। এটি তাঁদের জন্য অন্যতম একটি শান্তির স্থান। এখানে তাঁরা আড্ডাসহ নানা আনন্দেই মেতে থাকেন, আবার কেউবা পুকুরের পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকেন, নেই কোনো বাঁধা, নেই কোনো কলরব। শুধু রয়েছে এক বুক সুখ আর ভালোবাসা।
বৃষ্টিমুখর দিনে ইডেন ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে বৃষ্টির ফোঁটার মতোই স্নিগ্ধ। বৃষ্টিভেজা ক্যাম্পাস, সবুজ ঘাসবিছানো পথ আর লাল ইটের দেয়াল থেকে পড়া পানির ধারায় মুহূর্তের মধ্যেই হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে কল্পনার রাজ্যে, ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করে না সবুজ গালিচায় মোড়ানো এই ক্যাম্পাস।
প্রকৃতির নিয়মে হয়তো ছেড়েই যেতে হবে এ ক্যাম্পাস। কিন্তু এই অপরূপ ক্যাম্পাস, তার সঙ্গে কতশত স্মৃতি, আবেগ-ভালোবাসা জড়িয়ে রয়েছে। এসব কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।
লেখক: সানজিদা চৌধুরী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা।